কুশল দাশগুপ্ত, শিলিগুড়ি:
ব্যবসা-বাণিজ্যের নতুন ডেস্টিনেশন এখন ইস্টার্ন বাইপাস। কী পাওয়া যায় না এখানে? বাড়ি তৈরির যাবতীয় সামগ্রী থেকে ঘরসজ্জার নানা উপকরণ। টাকা ফেললে নাকি এখানে ‘বাঘের চোখ’ পাওয়া যায়, বলেন অনেকেই। আর এখানে সব পাওয়া যায় বলেই এখন অনেকেই আর সেবক রোড বা হিলকার্ট রোডের দিকে পা বাড়ান না, ভিড় জমান ইস্টার্ন বাইপাসে। তাই এখানেও অনেকে দোকান তৈরিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। যেমনটা দেখা যাচ্ছে বর্ধমান রোডকে কেন্দ্র করে।
শহরকে যানজটমুক্ত করতে বাম জমানায় তৈরি করা হয়েছিল ইস্টার্ন বাইপাস। সে সময় রাস্তাটি শুধুই ছিল পাহাড়গামী গাড়ির চলাচলের পথ। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যেমন শহরের পরিধি বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনি কদর বেড়েছে ইস্টার্ন বাইপাসের। এখন তো রাস্তার ধারে একচিলতে জমি পাওয়াও দুষ্কর। রাস্তার দু’ধারের সারি সারি দোকান মনে করিয়ে দেয় সেবক রোডকে। একটা সময় সেবক রোডে যেমন সমস্ত ধরনের নির্মাণসামগ্রী পাওয়া যেত, এখন তেমনি সব জিনিস মেলে ইস্টার্ন বাইপাসে। সেবক রোড বা হিলকার্ট রোডে যাওয়ার ক্ষেত্রে যানজটের ভোগান্তি অনিবার্য। তাই শহরের বড় একটা অংশের মানুষ বেছে নিচ্ছেন আশিঘর মোড় হয়ে চলে যাওয়া রাস্তাটির ধারে থাকা দোকানগুলিকে। যে কারণে বা সময়ের দাবিতে এখানে শপিং মল থেকে নার্সিংহোম গড়ে উঠেছে। রাত ১২টাতেও হোটেল এবং কিছু দোকানের ঝাঁপ বন্ধ হয় না। কে বলবে, একটা সময় এলাকাটি ছিল বনজঙ্গলে ঘেরা।
ক্রেতার ভিড় যত বাড়ছে, ততই লক্ষ্মীলাভ হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। যা অস্বীকার করছেন না ব্যবসায়ীরা। ছয় বছর আগে দোকান খোলার সময় এমন পরিস্থিতি ছিল না, তা জানিয়ে সুব্রত অধিকারী বলছেন, ‘এই রাস্তায় যানজট কম। পাশাপাশি, আশপাশে প্রচুর জনবহুল এলাকা গড়ে উঠেছে। ফলে এখন ব্যবসা যথেষ্ট ভালো হচ্ছে।’ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে শুধু হায়দরপাড়া, রবীন্দ্রনগর বা নেপালিবস্তির মতো জায়গাগুলি থেকে মানুষ কেনাকাটা করতে আসছেন না, ভিড় জমাচ্ছেন আমবাড়ি, ফুলবাড়ি এলাকার বাসিন্দারাও। নির্মাণসামগ্রীর ব্যবসায়ী বাসুদেব রায় বলছিলেন, ‘বাইপাস এলাকা এবং সংলগ্ন জায়গাগুলোতে নতুন নতুন কত ফ্যাক্টরি, দোকান, বাড়িঘর তৈরি হচ্ছে। ফলে প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিতে তাঁরা এখানেই আসছেন।’ তাঁদের ব্যবসার সূত্র ধরে এলাকার আর্থসামাজিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটছে বলে বক্তব্য আসবাবপত্রের ব্যবসায়ী মাধব দাসের। ফকদইবাড়ি থেকে বাড়ির দরজা কিনতে এসেছিলেন বল্লভ রায়। তাঁর বক্তব্য, ‘হাতের কাছেই যখন সব রয়েছে, তখন অন্যত্র কেন যাব?’ সাবিত্রী সরকার, মদন সরকার মনে করেন, এখানে কিছুটা কমে পাওয়া যায় জিনিস।