Tuesday, 17 June, 2025
17 June, 2025
Homeদক্ষিণবঙ্গPurulia: হাতি, বাঘের পর এবার অশরীরীর হানা পুরুলিয়ায়

Purulia: হাতি, বাঘের পর এবার অশরীরীর হানা পুরুলিয়ায়

বাঘের পায়ের ছাপ দেখেছে, হাতির তাণ্ডবও গা সওয়া। কিন্তু তাই বলে অশরীরীর হামলা! নতুন আপদে তটস্থ পুরুলিয়া।

অনেক কম খরচে ভিডিও এডিটিং, ফটো এডিটিং, ব্যানার ডিজাইনিং, ওয়েবসাইট ডিজাইনিং এবং মার্কেটিং এর সমস্ত রকম সার্ভিস পান আমাদের থেকে। আমাদের (বঙ্গবার্তার) উদ্যোগ - BB Tech Support. যোগাযোগ - +91 9836137343.

বাঘের পায়ের ছাপ দেখেছে, হাতির তাণ্ডবও গা সওয়া। কিন্তু তাই বলে অশরীরীর হামলা! নতুন আপদে তটস্থ পুরুলিয়া।

হাউন্ড অফ দ্য বাস্কারভিলের মানুষমারা শিকারি কুকুর কিংবা তার বঙ্গীয় সংস্করণ হানাবাড়ির লোমশ ব‍নমানুষের মতোই কিম্ভুত দর্শন এক প্রাণীকে দেখেছেন বলে দাবি করছেন পুরুলিয়ার হুড়া থানার রাকাব জঙ্গল লাগোয়া গ্রামগুলোর বাসিন্দারা। সেই প্রাণীটির নাকি লম্বা চুলে পা পর্যন্ত ঢাকা। প্রাণহানির দাবি ওঠেনি তবে সেই প্রাণীটি নাকি মোটর বাইক থামিয়ে আঁচড়ে দিচ্ছে। এমন সব দাবিতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়।

আরও পড়ুন: মাঝ আকাশে পৌঁছতেই পকেট থেকে বেরল ছুরি, যাত্রী বলল, ‘হাইজ্যাক’!

বাঘের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা যায়, হাতিকেও ঠেকিয়ে রাখা যায়, কিন্তু অশরীরীর উৎপাত ঠেকানোর উপায় খুঁজতে এখন নাজেহাল অবস্থা। যদিও পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞানমঞ্চের সদস্যরা এলাকায় গিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন। এমন ঘটনার সঙ্গে যে বাস্তবের কোনও যোগ নেই তা গ্রামবাসীকে বোঝাচ্ছেন তাঁরা। এলাকায় দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ারও মোতায়েন করা হয়েছে।

গ্রামবাসীর দাবি, দিন কয়েক আগে এলাকার ১৭ বছরের এক যুবকের দেহ রাকাবের জঙ্গল থেকে উদ্ধার হয়। তার পর থেকে এই সব ঘটতে শুরু করে। অর্জুনজোড়া এলাকার বাসিন্দা জলধর গড়াই জানান, দিন সাতেক আগে পুরুলিয়া থেকে কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। রাকাবের জঙ্গল লাগোয়া রাস্তা পেরোতে গেলে হঠাৎ মনে হয়, দমকা হাওয়ায় তাঁর বাইকটি থেমে গেল। কাউকে তিনি চোখে দেখতে না পেলেও কেউ তাঁর হাত ধরে টান মারে। আঁচড়েও দেয় পেটে। পেশায় টিভি মেকানিক উত্তম দুয়ারি শুনিয়েছেন অন্য কাহিনি।

আরও পড়ুন: মদন বললেন, ‘ওহ লাভলি’, আমন্ত্রণ না পেয়ে আক্ষেপ কল্যাণের

তিনি বলেন, ‘কেশরগড় থেকে কাজ সেরে ফিরছিলাম। তখনই ওই রাস্তায় একটি মানুষের মতো প্রাণী দেখি। উচ্চতা কম, হাত–পা সরু আর মাথার লম্বা চুলে পা পর্যন্ত ঢাকা।’ প্রাণীটিকে দেখেই তিনি কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে পড়েন। তাঁর কথায়, ‘ভাগ্য ভালো সেই সময়েই একটি বাস ওই পথে এসে পড়ায় প্রাণীটি জঙ্গলের ভিতরে ঢুকে পড়ে। সেই সুযোগে আমি পালিয়ে আসি।’

এই সব শোনার পর থেকে যত দূর সম্ভব ওই পথ এড়িয়ে চলছেন লাগোয়া গ্রামগুলোর বাসিন্দারা। একান্ত যাঁদের যেতে হচ্ছে তাঁরাও লাঠি নিয়ে দল বেঁধে তবে যাচ্ছেন। অর্জুনজোড়ার বাসিন্দা ভাদু গড়াই বলছেন, ‘জ্বালানি সংগ্রহের জন্য আমরা বরাবরই জঙ্গলে যাই। অস্বাভাবিক তেমন কিছু কখনও চোখে পড়েনি। তবে এখন যা সব শুনছি তাতে আপাতত জঙ্গলে যাওয়া বন্ধ রেখেছি।’ অশরীরীর আতঙ্কে এলাকার পড়ুয়াদের পড়াশোনাও লাটে উঠেছে। জঙ্গল লাগোয়া চারটি গ্রামের কোনও শিশু এখন ওই পথ দিয়ে স্কুল যাচ্ছে না। ভয়ে রয়েছেন অভিভাবকরাও।

এমন ঘটনার খবর পেয়ে ওই এলাকায় পৌঁছে যান পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞানমঞ্চের পুরুলিয়া শাখার সদস্যরা। বেশ কিছু সময় ধরে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে জঙ্গল ও লাগোয়া পথে খোঁজাখুঁজি করলেও কিছুই পাননি তাঁরা। বিজ্ঞানমঞ্চের সদস্যরা এলাকার মানুষদের বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, ভূত বলে কিছু হয় না। যদি এমন কিছু হয়েই থাকে তা হলে তা নিশ্চিত ভাবে কোনও মানুষের কারসাজি ছাড়া অন্য কিছু নয়।

বিজ্ঞান মঞ্চের পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক নয়ন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘ভূত বলে কিছু হয় না। এর পিছনে কোনও অসাধুচক্রের হাত থাকতে পারে। কেউ আতঙ্কিত হবেন না। যদি কোনও ব্যক্তি ভূতের অস্তিত্ব দেখিয়ে দিতে পারেন তা হলে তাঁকে বিজ্ঞানমঞ্চের তরফ থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। আর রটনা তৈরি করা হলে প্রশাসন আইনগত পদক্ষেপ করবে।’ এ প্রসঙ্গে হুড়া থানার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ওই এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করা হয়েছে। দেখা হচ্ছে, কেউ কোন উদ্দেশ্য নিয়ে এমন কাজ করছে কি না।

এই মুহূর্তে

আরও পড়ুন