চরম অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে নেপালে। পড়শি দেশের ছাত্র যুবদের রক্তক্ষয়ী বিক্ষোভে মৃত্যু আর আহতের সংখ্যা বাড়ছে ছাড়া কমছে না। আর সেই আবহেই মুখ খুলল ভারত। মঙ্গলবার সকালে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক একটি বিবৃতি জারি করে স্পষ্ট জানিয়েছে, নেপালের পরিস্থিতির উপর তারা বিশেষভাবে নজর রাখছে। একই সঙ্গে সে দেশে বসবাসকারী ভারতীয়দেরকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্র।
আরও পড়ুনঃ আক্রান্ত নেপালের বর্তমান ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, জাতীয় ব্যাঙ্কের গভর্নরের বাড়ি
বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে আমরা নেপালের পরিস্থিতি সম্পর্কে পর্যবেক্ষণ করছি। বহু তরতাজা প্রাণের মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। এমনকি কাঠমান্ডু সহ বেশ কয়েকটি শহরে কার্ফু জারি থাকাই ভারতীয় নাগরিকদের বলা হয়েছে যে নেপাল প্রশাসনের সমস্ত নিয়ম মেনে চলতে হবে এবং ঝুঁকি এড়িয়ে চলতে হবে।
কেন এরকম পরিস্থিতি নেপালে?
আসলে গত 5 আগস্ট নেপাল সরকার ফেসবুক, হোয়াটসআপ, এক্স সহ মোট 26 টি জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম নিষিদ্ধ করে দেয়। আর এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গতকাল ছাত্র-যুবরা রাস্তায় নামে। তবে বেলা গড়াতে সংঘর্ষ ভয়াবহ আকার ধারন করে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শূন্যে গুলি চালায়, তাও রবার বুলেট ব্যবহার করে। তবে বিক্ষোভকারীরা করছে, গুলি শূন্যে নয়, তাঁদের লক্ষ্য করেই চালানো হয়েছে। আর এর ফলে 19 জনের মৃত্যু হয়েছে, এমনকি আহতের সংখ্যা 250 জনের বেশি। বর্তমানে কাঠমান্ডুর হাসপাতালগুলিতে আহতদের ভিড় জমছে।
আরও পড়ুনঃ জেন জ়ি প্রজন্মের কাছে শেষপর্যন্ত নতিস্বীকার নেপাল সরকারের; নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার
কেবল সোশ্যাল মিডিয়ার নিষেধাজ্ঞা?
তবে ও দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণকারী মহল বলছে, সোমবারের এই বিক্ষোভ শুধুমাত্র সোশ্যাল মিডিয়া ব্যানের জন্য নয়, বরং দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা ক্ষোভের কারণেই এই বিস্ফোরণ। প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলের নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে বহুদিন ধরেই দুর্নীতির অভিযোগ তুলছে নেপালের সাধারণ মানুষ। পাশাপাশি অর্থনৈতিক বৈষম্য থেকে শুরু করে কর্মসংস্থানের সংকট তরুণ প্রজন্মের মধ্যে আরও ক্ষোভ বাড়িয়ে দিয়েছে। আর সেজন্যই দীর্ঘদিনের জমে থাকা এই আগুন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
এদিকে ভারত নেপালকে ঘনিষ্ঠ বন্ধু আর প্রতিবেশী দেশ হিসেবে উল্লেখ করে স্পষ্ট জানিয়েছে, আলোচনার মাধ্যমে এই সংকটের সমাধান করা সম্ভব। বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে নেপাল সরকার এবং জনগণ শান্তিপূর্ণভাবেই এই সমস্যা সমাধান করতে পারবে এবং খুব শীঘ্রই এই সংকট কেটে উঠবে।