আইপ্যাকের নাম ভাঁড়িয়ে শুধু তৃণমূল কংগ্রেসের পদ পাইয়ে দেওয়া নয়, সরকারি পদে বসানোর টোপও দেওয়া হচ্ছে। শিলিগুড়ি, দার্জিলিং পার্বত্য এলাকা এবং জলপাইগুড়িতেও এমন ফাঁদ পাতা হয়েছে। অভিযোগ, শিলিগুড়ির শাসকদলের এক যুব নেতার ভাড়া করে দেওয়া গাড়ি নিয়ে পাহাড় ও সমতলে ঘুরে, গাড়িতে আইপ্যাকের বোর্ড লাগিয়ে তোলাবাজি চলছে। প্রধাননগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হতেই যা নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে শাসকদল। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে বিস্তারিত জানানো হয়েছে। দলের তরফে প্রতিটি জেলায় নেতা-নেত্রীদেরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ বলছেন, ‘পুরো বিষয়টি শীর্ষ নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। তাঁরাই পরবর্তী পদক্ষেপ করবেন।’
আরও পড়ুন: “আমাদের তো বাংকার নেই…”! খেলনা বন্দুক-জিপের বিক্রি বাড়ছে
লোকসভা ভোটে যে সমস্ত জেলায় তৃণমূলের ভোটের ফল খারাপ হয়েছে, সেখানে দলের জেলা কমিটিতে রদবদলের জল্পনা চলছে। পাশাপাশি, বিভিন্ন প্রশাসনিক পদেও রদবদলের পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু এখনও দলে কোনও রদবদল হয়নি। ভোট পরবর্তীতে কখনও বলা হয়েছে, বিধানসভা ভোটের আগে আর রদবদল হবে না, আবার কখনও বলা হচ্ছে শীঘ্রই দলে বদল আনা হবে। ১২ মে’র পর দলের বিভিন্ন জেলা কমিটিতে রদবদল হবে বলে ফের তৃণমূলের অন্দরে হইহই পড়েছে। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দলেরই একাংশ ভুয়ো প্রতিশ্রুতি দিয়ে তোলাবাজিতে নেমেছে বলে চর্চা রয়েছে।
আরও পড়ুন: বিশ্বের প্রথম ‘ড্রোন যুদ্ধ’! ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে নতুন অধ্যায়ের উন্মোচন ঘটাল
তবে, শুধু দলের পদ দেওয়াই নয়, সরকারি পদ পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও পাহাড় এবং সমতলে দলের নেতা-নেত্রীদের কাছে ২০-২৫ লক্ষ টাকা করে চাওয়া হয়েছে। অভিযোগ, শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এসজেডিএ) চেয়ারম্যান, উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের (এনবিএসটিসি) চেয়ারম্যান, শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ এবং একাধিক জেলা পরিষদের মেন্টর, সহ মেন্টর সহ অন্যান্য পদ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, দলেরই এক যুব নেতা এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। সেই নেতার ভাড়া করে দেওয়া চার চাকার একটি গাড়ি নিয়েই দার্জিলিং, কার্সিয়াং, কালিম্পং, মিরিক, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার এবং শিলিগুড়ি মহকুমার বিভিন্ন জায়গায় ঘুরছে তোলাবাজ চক্রটি। ইতিমধ্যেই কয়েকজনের কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা চক্রটি তুলেছে বলেও খবর। চক্রে শিলিগুড়ির এক যুব নেতার পাশাপাশি দলের এখানকার এক নেত্রী যেমন রয়েছেন, তেমনই কলকাতা ও দক্ষিণবঙ্গের একাধিক ব্যক্তিও রয়েছেন বলেও জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, এই তোলাবাজি কারবারে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপের জন্য দলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে ইতিমধ্যেই রাজ্য পুলিশকে বলা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্তও শুরু করেছে।
