Sunday, 3 August, 2025
3 August, 25
Homeউত্তরবঙ্গSiliguri: বর্ষায় জল জমে, রাতে চোর! তবু আত্মীয়তায় বেঁধে সকলে

Siliguri: বর্ষায় জল জমে, রাতে চোর! তবু আত্মীয়তায় বেঁধে সকলে

বর্ষায় গোটা চত্বর জলে ভেসে যায়। রাতে নামলেই চোর-ছিনতাইবাজদের উৎপাত। আবাসনের রাস্তা যেন অবারিত দ্বার।

অনেক কম খরচে ভিডিও এডিটিং, ফটো এডিটিং, ব্যানার ডিজাইনিং, ওয়েবসাইট ডিজাইনিং এবং মার্কেটিং এর সমস্ত রকম সার্ভিস পান আমাদের থেকে। আমাদের (বঙ্গবার্তার) উদ্যোগ - BB Tech Support. যোগাযোগ - +91 9836137343.

কুশল দাশগুপ্ত, শিলিগুড়ি:

বর্ষায় গোটা চত্বর জলে ভেসে যায়। রাতে নামলেই চোর-ছিনতাইবাজদের উৎপাত। আবাসনের রাস্তা যেন অবারিত দ্বার। সামনের স্টেশন ফিডার রোডে সন্ধ্যা হলেই বহিরাগতদের ভিড় জমে যায়। তার পরেও ‘বেঁধে বেঁধে’ থাকেন শিলিগুড়ির মিলনপল্লি সরকারি আবাসনের বাসিন্দারা। আসলে চাকরি করতে শিলিগুড়িতে এসে সকলেই নিজেদের বাড়িঘর ভুলে গিয়েছেন।

এই আবাসনেই তাঁদের সমস্ত অস্তিত্ব জড়িয়ে গিয়েছে। তাই ডি ব্লকের কোনও সদস্যের ডেঙ্গি ধরা পড়লে দল বেঁধে এ, বি, সি, ই ব্লকের আবাসিকরা ঝাঁপিয়ে পড়েন তাঁর শুশ্রূষায়। নিজেরাই অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে নার্সিংহোমে নিয়ে যান। ধরা যাক, কোনও কর্মী সরকারি কাজে বাইরে রয়েছেন। তাঁর মায়ের হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। গোটা আবাসন ব্যস্ত হয়ে পড়ে বৃদ্ধার সুচিকিৎসার জন্য। ছুটি পেয়ে মেয়েকে নিয়ে হয়তো বেড়াতে গিয়েছেন ই ব্লকের কর্মী। ঘরের চাবি রেখে যান প্রতিবেশীর ঘরে। বলা তো যায় না, বন্ধ ফ্ল্যাটে কোনও সমস্যা হলে প্রতিবেশীদেরই দরজা খুলতে হবে।

আরও পড়ুন:  ‘এই জন্য NIA চাই, সব প্রমাণ হয়ে যাবে কে করেছে’, চটি পরা BSF এর প্রসঙ্গ উঠতেই রেগে লাল শুভেন্দু

মিলনপল্লি আবাসন ওয়েলফেয়ার কমিটির সভাপতি সুবোধ হালদার বলেন, ‘একসঙ্গে দীর্ঘদিন থাকতে থাকতে আবাসনের সকলেই পরস্পরের আত্মীয় হয়ে গিয়েছেন। ফলে একে অন্যের সুখে দুঃখে সঙ্গী হয়ে যাই।’ সুখ-দুঃখের সঙ্গী হওয়াটা আরও ভালো ভাবে টের পাওয়া যায় পুজোর ছুটিতে। আবাসনের ঠিক মাঝখানে বিশাল মাঠ। চারপাশে গাছগাছালি। মাঠের একপাশে স্থায়ী মঞ্চ তৈরি রয়েছে। দুর্গাপুজো থেকে কালীপুজো, সারাদিন ওই মাঠেই কেটে যায় সকলের। রবীন্দ্র জয়ন্তীতে হারমোনিয়াম নিয়ে বসে যান গান গাইতে। আবাসনের মহিলাদেরও নিজস্ব ক্লাব রয়েছে। সেই ক্লাবের দায়িত্ব বসন্ত উৎসবের। তখনও গানবাজনা হয়। কে কেমন গাইছেন, সেটা বড় কথা নয়।

আসল কথা হচ্ছে, সকলের সঙ্গে বেঁধে বেঁধে থাকা। আবাসনের সকলেই সরকারি কর্মী। সারা দিন অফিসে কাটে। এমনকী, এমনও কিছু কর্মী রয়েছেন, যাঁদের ছুটির দিনেও ডিউটি করতে হয়। প্রায়ই ডিউটির তাগিদে বাড়িঘর থেকে ছুটতে হয় উত্তরবঙ্গের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত। নিশ্চিন্তে সকলে রওনা হয়ে যান। জানেন, আবাসনের বাকিরা সবটা সামলে নেবেন। দু’বছর আগে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হন আবাসন কমিটির সম্পাদক পাপন সরকার ও তাঁর ছেলে।

আরও পড়ুন: ‘দিনহাটার মানুষদের বিশ্বাস করি না’, ‘ভয়’ কুরে কুরে খাচ্ছে মন্ত্রী উদয়নকে

প্রবল জ্বরে কোনও হুঁশ নেই। কী করে হাসপাতালে পৌঁছলেন আর কী ভাবেই বা চিকিৎসা হলো, কিছুই মনে করতে পারেন না। প্রয়োজনও পড়েনি। আবাসনে পড়শিরা থাকতে সম্পাদককে কেন ভাবতে হবে? পুরোনো স্মৃতি ঘাঁটতে গিয়ে যেন চোখ ছলছল করে ওঠে সম্পাদকের। তিনি বলেন, ‘ডেঙ্গির সময়ে কী ভাবে যে সময় কেটেছে আমার! কী ভাবে চিকিৎসা হলো, কিছুই মনে নেই। সবই আবাসনের পড়শিরা করেছেন।’ ছুটিতে নিজের বাড়িতে গেলেও আজকাল মন টেকে না তাঁর। সুবোদের কথায়, ‘কী করে টিকবে বলুন? বাড়িতে গেলে খালি মনে পড়ে এখানকার কথা।’

এই মুহূর্তে

আরও পড়ুন