হাওড়া-পুরী বন্দে ভারত ট্রেনে ঘটে গেছে মারাত্মক ঘটনা। এক যাত্রী অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন। আর এই ঘটনায় রেলের বিরুদ্ধে বিরাট অভিযোগ করেছেন সহযাত্রীরা। তাঁদের দাবি, সাহায্য চেয়েও কারও দেখা মেলেনি। টিটিই থেকে শুরু করে রেলের বাকি কর্মীরাও এগিয়ে আসেননি। সকলের দায়সারা মনোভাবের কারণে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। অনেকেই বলছেন, রেলের সহযোগিতা পেলে হয়তো ওই যাত্রীকে বাঁচানো যেত।
আরও পড়ুন: ১১ জনের মৃত্যুর পরেও বন্ধ হল না উৎসব, লাখ লাখ RCB প্রেমীকে সামলাতে মাত্র ৫০০০ পুলিশ
মৃতের নাম হিমাদ্রি ভৌমিক এবং তিনি কলকাতার ঢাকুরিয়া অঞ্চলের বাসিন্দা বলে জানা গেছে। বুধবার দুপুরে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছিল। বন্দে ভারত ট্রেনের মধ্যে থেকে করা সেই ভিডিওতে এক যুবক দাবি করেন, ট্রেনে অসুস্থ হয়ে পড়া সত্ত্বেও কারও সাহায্য মেলেনি। কোনও রেল কর্মীরও দেখা মেলেনি। অগত্যা সহযাত্রীরাই ওই প্রৌঢ় যাত্রীকে সুস্থ করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু শেষমেশ তাঁরা ব্যর্থ হন। আর এই ঘটনায় রেলের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত গাফিলতি এবং অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা।
ঘটনা হল, ট্রেনের ট্রেনের সি-২ কামরার ওই যাত্রী কটক স্টেশন থেকেই অসুস্থ বোধ করতে শুরু করেছিলেন। কিছু সময় পরেই তিনি কার্যত জ্ঞান হারান। যাত্রীরা তা দেখে চিকিৎসকের জন্য টিকিট পরীক্ষকের কাছে জানান। টিটিই ভুবনেশ্বরে বিষয়টি জানানোর পর আশ্বাস দেন, সেখানে চিকিৎসা হবে। কিন্তু যাত্রীদের অভিযোগ, এমনটা কিছুই হয়নি। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে ওই যুবককেও বলতে শোনা যায়, ‘সবাই পালিয়ে যাচ্ছে। কারও দেখাই মিলছে না। বললে বলছে, আপনারা যা পারেন করুন!’ যদিও রেলের বক্তব্য, তাঁরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে।
ভুবনেশ্বর স্টেশনে এই ঘটনার জেরে প্রায় ৪৫ মিনিট ট্রেন আটকে ছিল। টিকিট পরীক্ষক ও আরপিএফ ট্রেন ছাড়ার জন্য যাত্রীদের ট্রেনে চড়তে বলেন। কিন্তু তারা নড়েননি। এরপর আরপিএফ এসে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ততক্ষণে যা হওয়ায় হয়ে গেছে। সকলেই বুঝে যান, ওই যাত্রী আর বেঁচে নেই। পরে অবশ্য তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: চেয়ারম্যানের খরচের অনুমোদন আটকে গেল, চিন্তায় রবি
যাত্রীদের বক্তব্য, বন্দে ভারতকে ‘প্রিমিয়াম ট্রেন’ বলা হয়। কেন্দ্রীয় সরকার বারবার এই ট্রেনের কথা বলে, এক কথায় ‘মার্কেটিং’ করে। কিন্তু এই ধরনের ট্রেনের কীভাবে এমন পরিষেবা হতে পারে তা কেউই বুঝতে পারছেন না। তাই স্বাভাবিকভাবেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা সকলে। এও অভিযোগ, ট্রেনে কিছু হলে আপৎকালীন যে ওষুধের বাক্স থাকে তাতেও বিশেষ কোনও ওষুধ থাকে না। ট্রেনে অক্সিজেন সিলিন্ডার পর্যন্ত নেই। তাই এই ঘটনার জন্য সম্পূর্ণ রেলকেই দায়ী করেছেন তাঁরা।