নিজস্ব প্রতিনিধি, যশপাল সিং, ত্রিপুরা:
পরীক্ষা এবং পরীক্ষার্থী, রোগী বা অসুস্থ্য মানুষ অথবা বিশেষ প্রয়োজনে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পাড়ি দেওয়ার তাগিদ নিয়ে মানুষের রাস্তায় বের হলে কোনো বনধই বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। অন্তত ত্রিপুরার মানুষ বনধের মধ্যে এমন পরিষেবা পেয়েই অভ্যস্ত। কিন্তু টিএসএফ’র আন্দোলনের ফলে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে শুক্রবার গোটা রাজ্য জুড়ে, মানুষ অনেকাংশেই এই আন্দোলনের ফলে ক্ষুব্ধ। বিশ্রামগঞ্জে একদিকে অ্যাম্বুলেন্স এমনকি হাসপাতালে আসা রোগীকেও আটকানো হয়, অন্যদিকে বিশ্রামগঞ্জ দেওয়ান বাজার এলাকায় বনধ ও রাস্তা অবরোধে নাকাল হতে হয় পরীক্ষার্থীদের। দীর্ঘ পথ হেঁটে যেতে হয় তাদের। এরপর মায়ের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে যাওয়ার পথে আটকে পড়েন এক মহিলা। বিশ্রামগঞ্জ থানার নাকা পয়েন্টের সামনে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন মেয়ে শর্বাণী গুপ্ত। তিনি খোয়াই থেকে বিলোনিয়া যাচ্ছিলেন। এমন আরও বহু ঘটনা প্রত্যক্ষ করলেন জনসাধারণ। টিএসএফ-এর আন্দোলন এখনও অব্যহত।
আরও পড়ুন: টিএসএফ আন্দোলনে প্রভাবিত জনজীবন, স্তব্ধ জনজীবন
যাইহোক, টিএসএফ’র আন্দোলন চলাকালীন দিনের শেষে সামাজিক মাধ্যমে নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে তিপ্রা মোথা পার্টির প্রতিষ্ঠাতা মহারাজা প্রদ্যুৎ কিশোর দেববমর্ণ বললেন, মনে হচ্ছে মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড মডেল দেখতে হবে যেখানে স্থানীয় ভাষা অষ্টম অনুসূচিতে অন্তর্ভুক্ত না হওয়া সত্ত্বেও ছেলে মেয়েরা রোমান লিপিতে নিজের ভাষা লিখতে, পড়তে এবং পরীক্ষা দিতে পারবে। কেন? কারণ এটি একটি ‘রাজ্য’ বিষয় এবং ঐ রাজ্যগুলি একটি স্পষ্ট সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ত্রিপুরা ভিত্তিক জাতীয় দলগুলো তাদের অবস্থান পরিষ্কার করে দেওয়া উচিত তিপ্রসার ছাত্রীরা কোন বিষয়ে পড়তে এবং লিখুক? ক) বাংলা. খ) দেবনগ্রি. গ) রোমান। জন জাতি মোর্চা/এসটি সেল/জিএমপি তাদের দলের উপর চাপ সৃষ্টি করুক কারণ এটা তাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে। অবশেষে আসুন ঐক্যবদ্ধ থাকি এবং যদি আমরা এক কণ্ঠে কথা বলি তবে আমরা একটি ফ্যাক্টর হয়ে যাব। ২০২৬/২০২৮ সালে তিপ্রাসা বাসির কাছে ভোট চাইলে মানতেই হবে তিপ্রা মোথা পার্টির প্রতিষ্ঠাতা নয়, তিপ্রাসা বলে বলি- জাতির স্বার্থকে রাজনীতির উপরে না দিলে কিছুই হবেনা।
আরও পড়ুন: সুদানের বাতাসে শুধুই বারুদের গন্ধ! রাষ্ট্রপতির প্রাসাদ দখল
এদিকে আবার টিএসএফ’র আন্দোলনে শামিল হয়ে নিজের নৈতিক সমর্থন জানাতে গিয়ে এবং প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি বর্তমান সরকারের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারির সুরে বলেছেন, “আপনারা ৩২% কে অবহেলা করে ত্রিপুরা কে চালাতে চাইছেন তো এমনই হবে, যদি ছাত্ররা আজকে ফেইল হলে আর কাল খারাপ রাস্তায় চলে যায়, বন্দুক নিয়ে নেয়, তখন আপনিই বলবেন উগ্রপন্থী হল তিপ্রাসারা”। আজ তিনি অবরোধকারীদের সাথে কথা বলেন। পরবর্তী সময়ে প্রদ্যোত কিশোর দেবর্বমণ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তিপ্রারা মথার ছাত্র সংগঠন নায্য দাবি জানিয়েছে আসছে। কিন্তু পূর্বতন সরকার থেকে শুরু করে বর্তমান সরকারের আমলেও এই দাবি পূরণ হয়নি।