Tuesday, 14 October, 2025
14 October
Homeউত্তরবঙ্গSiliguri: উৎসবের আবহ যাঁরা তৈরি করেন, তাঁরাই ব্রাত্য

Siliguri: উৎসবের আবহ যাঁরা তৈরি করেন, তাঁরাই ব্রাত্য

পুজোমণ্ডপ তৈরি না হওয়া পর্যন্ত যে ছুটি নেই তাঁদের, উত্তরেই পরিষ্কার।

অনেক কম খরচে ভিডিও এডিটিং, ফটো এডিটিং, ব্যানার ডিজাইনিং, ওয়েবসাইট ডিজাইনিং এবং মার্কেটিং এর সমস্ত রকম সার্ভিস পান আমাদের থেকে। আমাদের (বঙ্গবার্তার) উদ্যোগ - BB Tech Support. যোগাযোগ - +91 9836137343.

কুশল দাশগুপ্ত, শিলিগুড়িঃ

কলেজপাড়ায় একটি পুজোমণ্ডপের সামনে বাঁশ বাঁধছিলেন কমল সরকার। সূর্যেরতেজ সহ্য করতে না পেরে মাঝে মাঝেই বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। পুজোর জামা কিনেছেন, প্রশ্ন করতেই হতচকিত হয়ে হাতিয়াডাঙ্গার কমল বললেন, ‘আমাদের আবার পুজো।’ স্বল্প কথায় উত্তর। কিন্তু তার মধ্যে যেন লুকিয়ে রয়েছে যন্ত্রণা। পরিবারের কথা জিজ্ঞেস করতেই বললেন, ‘বাড়িতে স্ত্রী, মেয়ে ও নাতি রয়েছে। নাতির জন্য তো কিনতে হবে। তবে এখনও কেনা হয়নি। কাজ শেষ হোক। সব টাকা হাতে পাই, তারপর কিনে দেব।’ পুজোমণ্ডপ তৈরি না হওয়া পর্যন্ত যে ছুটি নেই তাঁদের, উত্তরেই পরিষ্কার।

পালপাড়ায় মূর্তি তৈরিতে ব্যস্ত ছিলেন মৃৎশিল্পী বিষ্ণু পাল। তিনি বলছিলেন, ‘তিল তিল করে মা’কে গড়ে তুলছি। দেবী দর্শন তো হয়েই যায়। যখন পুজোয় বের হই না, তখন নতুন জামা কিনে কী করব। প্রয়োজনের সময় কিনে নেব।’ মণ্ডপে মৃন্ময়ীকে পাঠিয়ে স্ত্রী, ছেলে ও মেয়ের জন্য নতুন পোশাক কিনবেন বলে জানান তিনি। ঘোগোমালি স্কুলের মাঠে কয়েকজনের সঙ্গে একমনে প্যান্ডেল বাঁধছিলেন রতন দাস। পুজোর ক’টা দিনের প্ল্যানিং জানতে প্রশ্ন করতেই বললেন, ‘আমার জন্য মেয়ে একটা টি-শার্ট কিনেছে। যদিও আমি দেখিনি। এমনিতে তো খুব একটা বের হই না। কিন্তু মেয়ে কিনেছে যখন, তখন ছেলেমেয়েদের নিয়ে একদিন তো বের হতে তো হবেই।’

আরও পড়ুনঃ ফ্রিতে ২৫ লক্ষ LPG সংযোগ; উৎসবের মরশুমে মোদীর উপহার

ওঁদের হাত দিয়েই সেজে ওঠে পুজোমণ্ডপ। জ্বলে ওঠে আলো। তৈরি হয় মায়ের মূর্তি। কিন্তু ওঁরাই থেকে যায় উৎসব-আলোর থেকে শত যোজন দূরে। একদিকে যখন শেষবেলায় বাজারে কিছুই পাওয়া যাবে না ভেবে দু’মাস আগে থেকে কেনাকাটা শুরু করে দেন এক শ্রেণির মানুষ, তখন কমলদের মতো মানুষেরা অপেক্ষা করে থাকেন কাজ শেষে হাতে টাকা পাওয়ার আশায়। শেষ বাজার থেকে যা পাওয়া যায়, তা নিয়েই ওঁরা বাড়ি ফেরেন। নতুন জামায় আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠে ছেলে, মেয়ে, নাতি, নাতনিরা। অভিমান-অভিযোগ দূর হয়ে যায় মুহূর্তে। হাড়ভাঙা খাটুনির পর এতটুকুতেই ওঁদের আনন্দ।

আরও পড়ুনঃ তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে এক নয়া অধ্যায়ের সূচনা; Google, Microsoft-কে টেক্কা ভারতীয় অ্যাপ Zoho-র

আর দশজনের আনন্দে যে তাঁর আনন্দ বলছিলেন সমীর দাস। মণ্ডপে লাইট লাগানোর ফাঁকে সমীর বললেন, ‘সবাই যাতে মণ্ডপটি ভালো করে দেখতে পান, মায়ের মুখ দর্শন করতে পারেন, তার জন্য লাইট লাগাতে হবে। এখন ফুরসত কোথায় বাজার যাওয়ার। তাই পুজোর উদ্বোধনের পর একদিন সময় বের করে পরিবারের জন্য কেনাকাটা করতে হবে। একদিন কয়েকটা মণ্ডপে যাওয়ার ইচ্ছেও আছে। তবে রাতে যেতে পারি না। যদি কোনও গোলযোগ ঘটে, তার জন্য রাতে মণ্ডপে থাকতে হয়।’

রোদ-ঝড়-জল উপেক্ষা করে যাঁরা উৎসবের আবহ তৈরি করেন, তাঁরাই ব্রাত্য থেকে যান উৎসব আলো থেকে। আলো ঝলমলে শারদোৎসবে ওঁরা থেকে যান অন্ধকারেই।

এই মুহূর্তে

আরও পড়ুন