কুশল দাশগুপ্ত, শিলিগুড়ি:
কালীগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনে বড় ব্যবধানে জয়ী হলেন তৃণমূল প্রার্থী আলিফা আহমেদ। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বিজেপি প্রার্থী।
কমিশন সূত্রের খবর, প্রায় ৫০ হাজার ভোটে জয়ী হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী। কমিশন সূত্রের খবর, তৃণমূল প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট ১ লক্ষ ২ হাজার ১৭৯, বিজেপি প্রার্থী পেয়েছেন ৫২ হাজার ৪২৪টি ভোট। কংগ্রেসের প্রাপ্ত ভোট ২৮ হাজার ২৬২টি। নোটায় পড়েছে আড়াই হাজর ভোট। অর্থাৎ ৪৯,৭৫৫ ভোটে জয়ী তৃণমূল প্রার্থী আলিফা আহমেদ।গত বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্র থেকে আলিফার বাবা কালীগঞ্জের প্রয়াত তৃণমূল বিধায়ক নাসিরুদ্দিন আহমেদ ৪৬,৯৮৭ ভোটে জয়ী হয়েছিলেন। অর্থাৎ উপ নির্বাচনে বাবার চেয়েও বেশি ভোট পেলেন কন্যা।
আরও পড়ুন: ‘চুপ বিধানসভা চলছে’…! ‘ফ্লোরে ফেলে মার’, সাসপেন্ড চার
এই জয় মা-মাটি-মানুষকে উৎসর্গ করে সোশ্যাল মাধ্যমে জনতাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে কালীগঞ্জের দলের কর্মীদেরও প্রশংসা করেছেন তিনি।
অন্যদিকে উপ নির্বাচনের ফলাফল সামনে আসতেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “এই নির্বাচন আমাদের ধর্তব্যের মধ্যে ছিল না।” ফলাফলের নিরিখে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী।
প্রয়াত বিধায়ক নাসিরুদ্দিন আহমেদের মৃত্যুর ফলে এই কেন্দ্রে উপনির্বাচন হচ্ছে। তৃণমূলের টিকিটে এখানে জিতলেন তাঁরই মেয়ে আলিফা।
কালীগঞ্জ উপ নির্বাচনের ফলাফলকে বিরোধীরা প্রকাশ্যে বিশেষ পাত্তা দিতে না চাইলেও পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, এই উপনির্বাচন শুধুই একটি কেন্দ্রের ভোট নয়, অনেক বড় অর্থবহন করছে রাজনৈতিক মহলে। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই উপনির্বাচন শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস ও প্রধান বিরোধী বিজেপির কাছে কার্যত অ্যাসিড টেস্ট ছিল।
তাছাড়া কালীগঞ্জের উপ নির্বাচনকে ঘিরে এবারে একগুচ্ছ পদক্ষেপ নিয়েছিল কমিশন। বুথের ভিতরে তো বটেই, এবার বাইরেও ওয়েব কাস্টিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়। প্রত্যেকটি কুইক রেসপন্স টিমের গাড়ির মাথায় ও র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্সের গাড়িতেও লাগানো হয় ক্যামেরা, যাতে সারাদিন লাইভ স্ট্রিমিং চলে। কোনও হিংসা বা অনিয়ম হলে যাতে সঙ্গে সঙ্গে নজরে আসে, তার জন্যই এই উদ্যোগ নেয় কমিশন।
নির্বাচনের নিরাপত্তায় মোতায়েন করা হয় ১৪ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী ও প্রায় দু’হাজার রাজ্য পুলিশ। কাজ করেছে ২০টি কুইক রেসপন্স টিম ও ৮টি র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স ইউনিট। ভোটারদের সুবিধার্থে ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে বুথের বাইরে লাঠিধারী পুলিশ মোতায়েন ছিল। সাহায্য করছে NCC এবং NSS-এর ছাত্রছাত্রীরাও। সব মিলিয়ে উপ নির্বাচন ঘিরে নজিরবিহীন নিরাপত্তায় ব্যবস্থা করেছিল কমিশন। স্বভাবতই, ২৬ এর ভোটের আগে উপ নির্বাচনে এই বিপুল ব্য়বধানে জয় কর্মীদের বাড়তি উৎসাহ দেবে বলেই দাবি শাসক শিবিরের। প্রসঙ্গত, উপ নির্বাচনে ভোট পড়েছিল প্রায় ৬৯ শতাংশ।