সিঁদুর নিয়ে খেলবেন না! এ ভাবেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে আক্রমণ করলেন তৃণমূলের তিন কন্যা। রবিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে শাহের সভার শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জবাব দিল বাংলার শাসকদল। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সাগরিকা ঘোষ, লোকসভার সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার এবং স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য একযোগে শাহের পাশাপাশি রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকেও আক্রমণ শানালেন। তাঁদের পদত্যাগপত্রও চাইলেন তৃণমূলের মহিলা নেত্রীরা।
আরও পড়ুন: ‘জঙ্গিরা মারা গেলে দিদির পেটে ব্যথা করে’; তোপ শাহের
চন্দ্রিমা বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন সন্ত্রাস রিগিং ছাড়া ভোট করে দেখান। আমরা প্রশ্ন করতে চাই, ইলেকশনটা কে করবে? করবে তো আপনার ইলেকশন কমিশন। আপনি বলছেন আমরা সন্ত্রাস করব, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সন্ত্রাস করাবেন। তাহলে ব্যর্থতা কার? যখন অপারেশন সিঁদুর হয়েছে। আমরা এই নিয়ে বিরুদ্ধে কিছু বলছি না। আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আজকে অবধি পাঁচটি রাষ্ট্রে ঘুরলেন, প্রতিনিধিদলে শামিল হলেন। দেশের কথা বললেন, এক কণ্ঠে এক সুরে কথা বললেন। তখন আপনি এখানে এসে অপারেশন সিঁদুর নিয়ে অপমানসূচক খেলা তৈরি করলেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী এসেছিলেন গত ২৯ তারিখে, সেখানেও উঠেছিল অপারেশন বেঙ্গল। আর আজ যিনি আপনার এ রাজ্যের সভাপতি তিনিও অপারেশন বেঙ্গলের কথা বললেন। কিসের অপরাশেন? বিজেপির কর্মীরা নাকি দেখবেন, অপরেশন বেঙ্গল হবে। এর মানেটা কি আমরা জানতে চাই। অর্থাৎ আপনারা জোর জবরদস্তি করতে চাইছেন, ইলেকশন কমিশনকে দিয়ে। বিবাহিত মেয়েদের কাছে অতি পবিত্র জিনিস এরা বাজারে বিক্রি করছে।’’
কাকলি বলেন, ‘‘দেশের স্বরাস্ট্রমন্ত্রী সরকারি অনুমতি পেয়ে একটি সভা করলেন। তার সদ্ব্যবহার তো করতে পারলেনই না, বরং তিনি কুৎসা করলেন। আর তাঁর মন্ত্রিসভার আরও এক জন ছোট শিক্ষামন্ত্রী রেখেছেন, যিনি নিজের কাজই ঠিক করে করতে পারেন না। কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে ছাত্রছাত্রীরা স্টাইপেন্ড না পেয়ে আত্মহত্যা করছেন। তাঁদের পাশে না দাঁড়িয়ে আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর নামে কুৎসা করছেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সধবা মহিলার মাথার সিঁদুর বেচতে এসেছেন। প্রধানমন্ত্রী এসেছিলেন দু’দিন আগে বলে গেলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আজ বলে গেলেন আর তাদের লেজুড় হয়ে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী যে ভাবে মুখ্যমন্ত্রী অপমান করলেন, তার জবাব বাংলার মহিলারা রাস্তায় নেমে দেবেন।’’
আরও পড়ুন: ‘AI করেছে’! দাবি শুনে লজ্জায় মুখ ঢাকল ChatGPT-রা
সাগরিকা বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলায় এসে একজন বিজেপি ক্যাডারের মতো কথা বলেছেন। তিনি তাঁর নিম্নমানের ভাষা দিয়ে আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেছেন। তৃণমূলের কোনও নেতা গুজরাতে গিয়ে এমন সভা করতে পারবেন?’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘স্বাধীন ভারতের সবচেয়ে বড় হিংসা হয়েছে গুজরাতে ২০০২ সালে। যখন তিনি গুজরাতের দায়িত্বে ছিলেন। এক সময় দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল। আর এখন সেই জায়গায় রয়েছেন বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ভাবতে কষ্ট হয় এমন একজন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদে রয়েছেন, যিনি সর্বদাই দেশে বিভাজনের রাজনীতি করেন। আর বাংলায় এসেও সেই বিভাজনের রাজনীতিই করে গেলেন। পহেলহগাঁওয়ে কী ভাবে জঙ্গিহানা সম্ভব হল, তার কোনও খবর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে ছিল না। অন্য কেউ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হলে সঙ্গে সঙ্গেই পদত্যাগ করতেন। পদ আঁকড়ে বসে থাকতেন না।’’