Saturday, 18 October, 2025
18 October
HomeকলকাতাTMC: ২৬-এর ভোটে কি প্রার্থী তৃণমূলের ‘সেনাপতি’! নভেম্বরের গোড়াতেই রাস্তায় নামছে শাসকদল

TMC: ২৬-এর ভোটে কি প্রার্থী তৃণমূলের ‘সেনাপতি’! নভেম্বরের গোড়াতেই রাস্তায় নামছে শাসকদল

২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটে কি অভিষেক প্রার্থী হবেন? এই প্রশ্নে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি জানিয়েছেন, দল ঠিক করবে।

অনেক কম খরচে ভিডিও এডিটিং, ফটো এডিটিং, ব্যানার ডিজাইনিং, ওয়েবসাইট ডিজাইনিং এবং মার্কেটিং এর সমস্ত রকম সার্ভিস পান আমাদের থেকে। আমাদের (বঙ্গবার্তার) উদ্যোগ - BB Tech Support. যোগাযোগ - +91 9836137343.

দেবজিৎ মুখার্জি, কলকাতা:

ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা (এসআইআর) নিয়ে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সারছে নির্বাচন কমিশন। সেই পর্বেই একান্ত আলোচনায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন, এসআইআর করে যতই নাম বাদ দিক কমিশন, তা-ও তৃণমূলের আসন একটা হলেও বাড়বে।

বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিজয়া সম্মিলনীতে মিলিত হয়েছিলেন অভিষেক। সেখানেই এসআইআর প্রসঙ্গে আত্মবিশ্বাসের কথা জানিয়েছেন তৃণমূলের ‘সেনাপতি’। এক জনও বৈধ ভোটারের নাম যাতে ভোটার তালিকা থেকে বাদ না যায়, সেই দাবিতে কমিশনের উপর ‘চাপ’ রাখতে পথেও নামছে তৃণমূল। প্রাথমিক পরিকল্পনা ছিল ২ নভেম্বর শহিদ মিনারে সভা হবে। কিন্তু ওই দিন শহিদ মিনার ময়দানে অন্য কর্মসূচি রয়েছে। চেষ্টা চলছে ওই দিন কলকাতার অন্যত্র জমায়েত করার। একান্ত তা না-হলে, ১ নভেম্বর বা ১১ নভেম্বর হবে সেই সভা। দু’চার দিনের মধ্যেই তা চূড়ান্ত করে ফেলবে তৃণমূল। অভিষেক সেই সভায় থাকবেন। তবে দলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকবেন কি না, তা বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি।

আরও পড়ুনঃ ববির কপালে কি? ছাব্বিশের ভোটের আগেই তৃণমূলে ঝাঁকুনি দিতে বড় রদবদল পুরসভায়!

অভিষেক প্রায় মাস তিনেক আগে থেকে দাবি করছেন, বিজেপি এ বার ৫০টির কম আসন পাবে। সেই অবস্থানে তিনি এখনও অনড়। তাঁর বক্তব্য, যতই ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা হোক, বাদ দিক, বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে ভোটের যে পার্থক্য রয়েছে, প্রায় সেই ব্যবধানই থাকবে ২০২৬ সালের ভোটে। অর্থাৎ ৭-৭.৫ শতাংশ। বিজেপি এক-আধ শতাংশ বাড়লেও সেই ভোট তারা কাটবে বামেদের থেকে। অর্থাৎ তৃণমূলের কোনও ক্ষতি হবে না।

যদিও অনেকের বক্তব্য, ভোটার তালিকায় বিপুল সংখ্যক মৃত ভোটার রয়েছেন। বিরোধীদের অভিযোগ, বিধানসভাপিছু অন্তত ১২-১৫ হাজার মৃত ভোটার রয়েছেন। আবার বহু জায়গায় তৃণমূলের জয়ের ব্যবধান ১২-১৫ হাজার বা তার কম। বিরোধীদের এ-ও অভিযোগ, এই মৃত ভোটারদের ভোট দিয়েই বহু জায়গায় টিকে রয়েছে তৃণমূল। তবে শাসকদলের বড় অংশ এই নির্দিষ্ট প্রশ্নের জবাব না-দিলেও তাদের বক্তব্য, বুথের সাংগঠনিক শক্তিতে তৃণমূলকে কেউই হারাতে পারবে না। সেটাই মূল ব্যাপার। এসআইআর কার্যকর করার ব্যাপারেও সেই সাংগঠনিক শক্তিকে মাঠে নামানোর পথে হাঁটছে তৃণমূল। সেই সূত্রেই শাসকদল মনে করছে, ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ নিয়ে যতটা গর্জন হচ্ছে, ততটা বর্ষণ হবে না।

২০১৪ সালের ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে অভিষেক ঘোষণা করেছিলেন সংগঠনের জেলা ও ব্লক স্তরে রদবদল হবে। মাঝে এ নিয়ে তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের মধ্যে ‘দূরত্ব’ নিয়েও বিস্তর আলোচনা চলেছে। সেই রদবদল গত এক-দেড় মাসে অনেকটাই সেরে ফেলেছেন অভিষেক। বৃহস্পতিবার তিনি জানিয়ে দিলেন, তাতে পারফরম্যান্সকেই সূচক হিসাবে ধরা হয়েছে। অর্থাৎ, যিনি দলকে নিজের এলাকায় লোকসভায় জিতিয়েছেন, তিনি কোনও বড় নেতার অপছন্দের হলেও পদে বহাল রয়েছেন। আবার যাঁর এলাকায় লোকসভায় দল জিততে পারেনি, তিনি কোনও বড় নেতার ঘনিষ্ট হলেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বহু জায়গায় এক ব্যক্তি-এক পদ নীতিও কার্যকর করা হয়েছে বলে দাবি অভিষেকের।

আরও পড়ুনঃ মমতার মাস্টারস্ট্রোক! শিলিগুড়িতে ‘সবচেয়ে বড় শিবমূর্তি’

২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটে কি অভিষেক প্রার্থী হবেন? এই প্রশ্নে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি জানিয়েছেন, দল ঠিক করবে। পরক্ষণেই অবশ্য বলেন, দল লোকসভার নেতা করেছে তাঁকে। মনে হয় না এখনই তাঁকে বিধানসভায় দাঁড়াতে বলা হবে। তা ছাড়া আগামী তিন-চার বছর সংসদ খুব গুরুত্বপূর্ণ বলেও মনে করছেন তিনি। সেখানেই তিনি সক্রিয় থাকতে চান।

লোকসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের জোট সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু অধীর চৌধুরী-সহ তৎকালীন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের সৌজন্যে তা ভেস্তে যায়। কিন্তু এখন কংগ্রেসের নেতৃত্ব বদল হয়েছে। তৃণমূল বিরোধিতায় অপেক্ষাকৃত ‘নরম’ বলে পরিচিত শুভঙ্কর সরকার প্রদেশ সভাপতি। এ বার কি কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের পথে হাঁটবে তৃণমূল? অভিষেক জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের কোনও প্রয়োজন নেই। লোকসভা হলে তবু ভাবা যেত। বিধানসভায় নয়। তৃণমূল তো প্রস্তাব দেবেই না। কংগ্রেসের প্রস্তাব এলও তা মানার কোনও সঙ্গত কারণ দেখছেন না অভিষেক।

২০২১ সালের বিধানসভা ভোট থেকেই বঙ্গ রাজনীতি প্রবেশ করেছিল মেরুকরণের অক্ষে। যা অব্যাহত ছিল ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনেও। ২০২৬ সালের ভোটে তা শিখরে পৌঁছোতে পারে বলে অনুমান করছেন অভিষেক। বিজেপি নেতাদের বক্তব্যেই স্পষ্ট, এসআইআর-কেও তাঁরা মেরুকরণের দৃষ্টিভঙ্গিতেই দেখতে চাইছেন। সেই মতো বাতাবরণও তৈরির চেষ্টা করছেন। অভিষেক আত্মবিশাসী— ভোট শতাংশের ব্যবধান এক থাকবে। আসন বাড়বে তৃণমূলের। তবে এ সবই ধারণা, অনুমান। বাস্তবে কী হবে তা দেখা যাবে ভোটের গণনার দিন।

এই মুহূর্তে

আরও পড়ুন