তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের দিন কোনও পরীক্ষা স্থগিত হবে না। পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শান্তা দত্ত। এবার তাই তৃণমূলের যুব নেতার বেলাগাম আক্রমণের মুখে পড়লেন শান্তা। ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যকে ‘ইঞ্চিতে-ইঞ্চিতে’ বুঝে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন TMCP-র সাধারণ সম্পাদক অভিরূপ চক্রবর্তী। আর যাঁরা উপাচার্যকে সহায়তা করছেন তাঁদেরও ‘বুঝে নেওয়ার’ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। এই যুবনেতার একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছে বিজেপি।
আরও পড়ুনঃ খরচের হিসেব না দিলে পুজোর অনুদান নয়! নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট
বিজেপি-র পোস্ট করা ভিডিয়ো থেকে দেখা যাচ্ছে, অভিরূপ বলেছেন, “এত বড় বেহায়া আমি জীবনে দেখিনি। ২৮ অগস্ট পরীক্ষা ফেলে দিয়েছে। আমি ওঁর শিক্ষাগত যোগ্য়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলাম। উনি আবার নিজে বলছেন, কেউ আমার শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে ঘেউ-ঘেউ করছে। আমি বলছি শান্তাদেবী বেশি কথা বলবেন না। আমাদেরকে যদি ঘেউঘেউ বলেন, আপনি রাজ্যপালের কাছে কতবার মিউ-মিউ করেছেন। ২৮ অগস্টের পর জবাব দেব। ইঞ্চিতে-ইঞ্চিতে বুঝে নেব। আর যাঁরা যাঁরা ভিসির দালালি করেছেন তাঁদের গণতান্ত্রিকভাবে এমন থাপ্পর মারব,আগামী দিন উঠে ধরানোর ক্ষমতা থাকবে না।”
অভিরূপের এই হুঁশিয়ারি প্রকাশ্যে আসতেই শুরু নিন্দার ঝড়। বয়সে-কাজের অভিজ্ঞতায় সব দিক থেকেই উপাচার্য শান্তা দত্ত তৃণমূলের এই ছাত্র পরিষদের নেতার থেকে অনেক অভিজ্ঞ। তাঁকেই এইভাবে কি কদর্যভাষায় আক্রমণ করা যায়? এই ভাবে অপমান করা যায়? যদিও, অভিরূপ নিজের অবস্থানেই অনড়। তিনি প্রতিক্রিয়া দিয়ে ফের বললেন, “উনি তো উপাচার্য নন। বেআইনিভাবে বসে রয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টি গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়েছেন। ওর বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”
আরও পড়ুনঃ ‘ভারতকে বিশ্বগুরু করার মধ্যেই সঙ্ঘের সার্থকতা’, বললেন মোহন ভাগবত
২৮শে অগস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস। সেই দিনই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকস্তরের পরীক্ষা কেন পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। এর পরপরই পরীক্ষার দিন বদল করতে বলে বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি দেয় শিক্ষা দফতর। সোমবার ছিল সিন্ডিকেট মিটিং। সেই বৈঠক শেষে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বলেন, “সিন্ডিকেটে স্পেশাল সেক্রেটারি এসেছিলেন। তিনি এটা উল্লেখও করেছেন যে মুখ্য়মন্ত্রী অনুরোধ করেছেন। আর তাঁর অনুরোধ মানা উচিতও বলেন তাঁরা। তবে হাউস সর্বসম্মতিক্রমে ২৮শে অগস্টের পরীক্ষার তারিখ ওই জায়গাতেই রেখেছে। তিরিশ হাজার ছাত্র ছাত্রী মানসিকভাবে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছেন। তাই কিছু ছাত্রের জন্য আমরা ব্যাপক ছাত্রদের এই জায়গায় নিয়ে যেতে পারি না। তাঁরা পরীক্ষা দেবে। আমরাও ঘোষিত তারিখ একই রেখেছি।” এরপরই ক্ষুব্ধ হন শিক্ষামন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও ব্যাপারেই হস্তক্ষেপ করেন না। উনি চাইলে ‘কেয়ারটেকার’ ভিসিকে সরাতে পারতেন। রাজ্যপাল উপাচার্যকে যেহেতু বিশেষ স্নেহ করেন, তাই মুখ্যমন্ত্রী এই স্নেহকে মান্যতা দিয়েছেন। সারাননি। সুপ্রিম কোর্টে হেরেও গিয়েছেন। তবে রাজ্যের পদাধিকারী যিনি কোনও ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করেন না সেটা রাখা যেত বলে আমার মনে হয়।”


                                    
