বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগেই ক্রমশ তৃণমূলের অন্দরে মাথাচাড়া দিচ্ছে গোষ্ঠীকোন্দল। যা এতদিন দলের অন্দরে ছিল তা এবার তা ক্রমশ প্রকট হচ্ছে বাইরেও। ঘটনার সূত্রপাত হয় তৃণমূল সাংসদদের তর্কাতর্কির চ্যাট নিয়ে। সূত্রের খবর বিষয়টি জানা মাত্রই বেজায় চটেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সব মিলিয়ে গোটা বিষয়টিকে কেন্দ্র করে অস্বস্তি বেড়েছে তৃণমূল শিবিরে।
আরও পড়ুন: ‘সৌগত রায় নারদার চোর’, মন্তব্য কল্যাণের
নির্বাচনের আগে একটু বেশীই সাবধানী তৃণমূল সুপ্রিমো। তাই দলের সর্বস্তরের নেতা-মন্ত্রীদের বিবাদ ভুলে আসন্ন নির্বাচনে ঝাঁপিয়ে পড়ার বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। আর এবার বার্তা দিলেন শান্ত হওয়ার। সাংসদদের স্পষ্ট বার্তা দিয়ে বাদানুবাদ থামাতে বলেছেন মমতা। একইসাথে সাংসদদের উদ্দেশ্যে দলনেত্রীর অনুরোধ এখনই এই বিষয়ে কেউ যেন কোনওপ্রকার সাক্ষাৎকার না দেন। সেইসাথে মুখ্যমন্ত্রী এদিন খুব পরিষ্কার করে জানিয়ে দিয়েছেন এই ব্যাপারে যেন আর জলঘোলা না করা হয়।
প্রসঙ্গত তৃণমূল সাংসদদের তর্কাতর্কির চ্যাট সংক্রান্ত বিষয়টি প্রথম প্রকাশ্যে এনে শোরগোল ফেলে দিয়েছিলেন বিজেপি নেতা অমিত মালব্য। তারপর ওই তিন সাংসদদের কড়া ডোজ দিয়ে দলের ‘বিড়ম্বনা’ আরও বাড়িয়ে তুলেছেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, এই গোটা বিষয়টি মোটেই ভালো চোখে দেখেননি তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য একটি পোস্ট করেছিলেন। সেখানে তিনি বেশ কয়েকটি ভিডিও প্রকাশ করে অভিযোগ করেছিলেন, ৪ এপ্রিল নির্বাচন কমিশনে স্মারকলিপি দিতে গিয়ে তৃণমূল সাংসদের মধ্যে নাকি বচসা বেঁধেছিল। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও কীর্তি আজাদের কথা কাটাকাটিতেই উঠে আসে এক মহিলা সাংসদের প্রসঙ্গ। এরপর একপ্রকার ‘হাটে হাঁড়ি ভেঙে’ বিজেপি নেতা এক্স হ্যান্ডেলে জানতে চান বহুমুখী আন্তর্জাতিক মহিলা আসলে কে?
আরও পড়ুন: চাকরির পর সন্দেশে কেলেঙ্কারি! কীর্তির মাখা সন্দেশ ঘেঁটে দিলেন কল্যাণ
চুপ থাকেননি কল্যাণ বান্দ্যোপাধ্যায়ও। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে কল্যাণ জানান, ওই বিরোধের সূত্রপাত হয়েছিল সংসদ ভবনে একটি মিষ্টির দোকান খোলার প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে। তিনি জানান কীর্তির ওই প্রস্তাবের বিরোধিতা করাতেই নাকি কল্যাণের উপর ওই মহিলা সাংসদ রেগে যান। এমনকি কল্যাণকে কটূক্তি করে, সিআইএসএফকে দিয়ে তাঁকে গ্রেফতার করানোরও প্রচেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। তৃণমূলের প্রবীণ নেতার কথায়, ‘আমাকে বলে জেলে ঢোকাবে। আমি সাধারণ মানুষের কথা বলি। তুমি এক শিল্পপতি হয়ে অন্য় শিল্পপতিকে আক্রমণ করো।’ প্রসঙ্গত ওই মহিলা সাংসদ ছাড়াও এদিন কীর্তি আজাদ ও সৌগত রায়কেও বেলাগাম আক্রমণ করেছিলেন কল্যাণ বান্দ্যোপাধ্যায়।