সূর্যকান্ত চৌধুরী, বাঁকুড়া:
একের পর এক নারী নির্যাতনের ঘটনায় তোলপাড় গোটা রাজ্য। তীব্র চাপানউতোর রাজনৈতিক মহলে। এরইমধ্যে এবার এক্কেবারে বাড়িতে ঢুকে গৃহববধূকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ। কাঠগড়ায় তৃণমূল কর্মী। চাঞ্চল্যকর ঘটনা বাঁকুড়ার ইন্দাস থানা এলাকায়। ঘটনার পর নির্যাতিতা বিষয়টি স্থানীয় তৃনমূল ব্লক নেতৃত্বকে জানালে সেখানে কোনও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ। উল্টে তাঁকে পুলিশে অভিযোগ জানাতে বাধা দেওয়া হয় বলে দাবি। শেষ পর্যন্ত স্থানীয় ও জেলাস্তরের বিজেপি নেতৃত্বের সহযোগিতায় তিনি বাঁকুড়া পুলিশ সুপারের অফিসে গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। যদিও বাধা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছে ঘাসফুল শিবির। একইসঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, অভিযুক্তের সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্কই নেই।
অন্যদিকে গৃহবধূর দাবি, সোমবার সন্ধ্যায় নিজেদের বাড়িতেই তিনি ছেলেকে পড়াচ্ছিলেন। কিছু সময়ের পরে ছেলে পাশেই এক আত্মীয়ের বাড়িতে যায়। সেই সময় তিনি বাড়িতে একাই ছিলেন। অভিযোগ, আচমকাই বাড়িতে ঢুকে পড়ে এক প্রতিবেশী এক যুবক।
পিছন থেকে জাপটে ধরে শ্লীলতাহানি করা হয়। ঘটনার আকস্মিকতায় কিছু সময়ের জন্য হতচকিত হয়ে যান ওই মহিলা। তারপরই চিৎকার শুরু করে দেন। তাঁর চিৎকার শুনে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। আর তখনই পালিয়ে যায় ওই যুবক।
আরও পড়ুনঃ ‘বঙ্গ জীবনের অঙ্গ’; বাঙালির ভরসা, ৯৫ বছরে একটুও বদলায়নি ফর্মুলায়
গৃহবধূর আরও অভিযোগ, ঘটনার পর থেকে তাঁকে লাগাতার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ঘটনার কথা কাউকে জানালে তাঁর স্বামীকে মেরে ফেলা হবে বলেও হুমকি আসছে। মহিলার দাবি, অভিযুক্ত যুবক তৃণমূল কর্মী হওয়ায় তিনি প্রথমে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বকে জানান। কিন্তু তৃণমূলের নেতারা নির্যাতিতাকে থানায় যেতে বাধা দেয় বলে অভিযোগ। সেখানে কাজ না হওয়ায় এদিন স্থানীয় ও জেলার বিজেপি নেতৃত্বকে সঙ্গে নিয়ে বাঁকুড়ার পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হন ওই নির্যাতিতা। তাঁর অফিসেই লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁদের দাবি, অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মী হওয়ার কারণেই পুলিশ বিষয়টিকে ধামাচাপা দিতে চাইছে। সুর চড়িয়েছেন বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজিত অগস্তি। তবে তৃণমূল নেতৃত্বের তরফে সব অভিযোগ উড়িয়ে ওই যুবকের সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই বলে দাবি করা হয়েছে। তৃনমূলের ইন্দাস ব্লক সভাপতি শেখ হামিদের সাফ কথা, বিজেপি নোংরা রাজনীতি করছে। এদিকে বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তেওয়ারি বলেন, “থানায় এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। আমার দফতরে একটি অভিযোগ জমা পড়েছে বলে শুনেছি। অভিযোগ খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”