একেবারে যেন সিনেমার স্ক্রিপ্ট! রূপোলি পর্দায় নায়িকা বানানোর স্বপ্ন দেখিয়ে দিনের পর দিন এক নাবালিকাকে নগ্ন করে শ্লীলতাহানির অভিযোগ। এক, আধ মাস নয়, এভাবেই টানা তিন বছর ধরে যৌন নির্যাতনের গুরুতর অভিযোগ। তদন্তে নেমে কলকাতার নেতাজি নগরের দুই বাসিন্দাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। চক্রের সঙ্গে আর কে বা কারা জড়িত রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতদের নাম নেহা আনসারি ওরফে নেহা আনসারি খাতুন (২৮) ও সইদুল ইসলাম (৩১)। নেতাজি নগরের পল্লিশ্রী এলাকায় একটি অভিজাত অ্যাপার্টমেন্টে থাকত তারা। অভিযোগ, সিনেমায় চান্স পাইয়ে দেওয়ার নাম করে সেখানেই দিনের পর দিন নির্যাতন চালানো হয় ওই নাবালিকার ওপরে। ধৃতদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে পকসো ধারায় মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
ঠিক কী ঘটেছিল? পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সিনেমায় সুযোগ পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভনে পা দেয় ওই নাবালিকা। পুলিশকে লিখিত অভিযোগে নির্য়াতিতা জানিয়েছে, ২০২২ থেকে এই ঘটনার শুরু। ২০২৪ পর্যন্ত, টানা তিন বছর ধরে নেহা এবং সইদুলের যৌন নির্যাতনের শিকার সে। জোর করে তার জামা খুলিয়ে, নগ্ন অবস্থায় ছবি তোলা, ভিডিও করার অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, যৌন হেনস্থা করা হয় বলেও অভিযোগ।
আরও পড়ুন: বেগুন ১০০, লঙ্কা ২০০; বাজারে ছ্যাঁকা! দাম চড়ছে হু-হু করে
গত ৮ জুলাই এ ব্যাপারে নেতাজি নগর থানায় অভিযোগ দায়ের করে নাবালিকা। পুলিশকে সে জানিয়েছে, ঘটনার অভিঘাতে সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল। তাই অভিযোগ জানাতে দেরি হল। পুলিশ অবশ্য এক্ষেত্রে ওই নাবালিকার প্রশংসাই করছে।
এক পুলিশ কর্তার কথায়, “এসব ক্ষেত্রে সাধারণত লোকলজ্জার ভয়ে অনেকসময়ই নির্যাতিতারা থানায় আসে না। ফলে প্রতারকরাও আবার নতুন টার্গেট বেছে নেয়।”
অভিযুক্ত নেহা এবং সইদুলের বিরুদ্ধে অতীতে এই ধরনের আরও কোনও অভিযোগ রয়েছে কিনা, তদন্তে তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশের অনুমান, শুধু দু’জন নয়, এর পিছনে কোনও চক্র জড়িত থাকতে পারে।
আরও পড়ুন: বিজেপি নেত্রী ও তৃণমূল নেতা রাতবিরেতে একই গাড়িতে! দেখে চোখ কপালে স্থানীয়দের
বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে জনমানসেও। শহরবাসীর মতে, অনেকক্ষেত্রেই শর্টকাটে নিজেদের স্বপ্নপূরণের জন্য অনেকে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে পরে নিজেদের খেসারত দিতে হয়। এক্ষেত্রেও মেয়েটি সেই রকমই প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়েছিল। ঘটনায় দোষীদের কঠোরতম শাস্তির দাবি উঠছে। আমজনতার কথায়, দোষ প্রমাণিত হলে এমন কঠোরতর শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক, যাতে ভবিষ্যতে আরও কোনও প্রতারক এভাবে মেয়েদের নিয়ে নোংরামি করার সাহস না পায়।