লোকসভার পর রাজ্যসভাতেও পাশ হল ‘দ্য প্রোমোশন অ্যান্ড রেগুলেশন অফ অনলাইন গেমিং বিল, ২০২৫’। বুধবারই সংসদের নিম্ন কক্ষে পাশ হয়েছিল এই নতুন বিল। এরপর দিন পেরতেই বৃহস্পতিবার তা চলে যায় রাজ্যসভায়। সংসদের উচ্চ কক্ষে বিলটি পেশ করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। প্রাথমিক ভাবে বিল পেশ হতেই সুর চড়ায় বিরোধী শিবির। কেন লোকসভায় কোনও আলোচনা ছাড়া এই বিল পাশ করানো হয়েছে, সেই নিয়ে প্রশ্ন তোলে তারা। তবে দিনশেষে তা বিশেষ বাধা তৈরি করেনি এই নতুন বিলের পথে। ফলত, আবারও ধ্বনিভোটের ভিত্তিতেই পাশ হয়ে যায় অনলাইন গেমিং বিল।
এদিন বিল পাশের পর কেন্দ্রীয় তথ্য-প্রযুক্তিমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, ‘এই বিল সমাজে একটি ভারসাম্য তৈরি করবে। যা সমাজের জন্য ভাল, তাকে উৎসাহ দেবে। যা মন্দ ও ক্ষতিকর, যুব-সমাজকে তা থেকে দূরে রাখবে।’
আরও পড়ুনঃ কলকাতায় প্রধানমন্ত্রী; আজ দমদম থেকে ব্যারাকপুর একাধিক রাস্তায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ
দেশের এই নতুন বিল অনুযায়ী, কোনটা ভাল, কোনটা মন্দ, সেই কথাটা সংসদে বিস্তারিত ভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। লোকসভায় বিল পেশের সময়েই জানানো হয়েছিল, ‘অনলাইন গেমিং’-কেই বাড়তি উৎসাহ দেওয়া হবে। কিন্তু যে সব ক্ষেত্রে অর্থের বিনিময়ে গেম খেলা হয় বা সেই গেমের সঙ্গে ‘জুয়ার’ কোনও সম্পর্ক রয়েছে, সেগুলিকে নিষিদ্ধ করার কথা বলা হয়েছে এই নতুন বিলে।
বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় গেমিং শিল্প নিয়ে বক্তব্য় রাখতে গিয়ে, তিনটি পর্যায়ের কথা উল্লেখ করেন অশ্বিনী বৈষ্ণব। প্রথম ই-স্পোর্ট, দ্বিতীয়টি অনলাইন সোশ্যাল গেমস, তৃতীয়টি হল অনলাইন মানি গেমস। অশ্বিনী বৈষ্ণব জানান, এই বিলে ই-স্পোর্টকে দেশের অন্যান্য ক্রীড়ার মতোই বাড়তি উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, অনলাইন সোশ্যাল গেমসকে দেশের যুব প্রজন্মের সৃজনশীলতা ও প্রযুক্তি ভাবনার একটি অংশ হিসাবে গুরুত্ব দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ মা উড়ালপুলে যান চলাচল স্তব্ধ; দুর্ভোগ চরমে
মন্ত্রী জানিয়েছেন, অনলাইন মানি গেমস, যা মানুষকে এমন ঘোরে ফেলে দেয় যে সে তার নিজের জীবনের সমস্ত উপার্জন তাতে বিনিয়োগ করে ফেলে। আর এই গেমের অ্যালগোরিদম এমনই যে, কোনও মতেই গ্রাহক তার বিনিয়োগ করা টাকা উদ্ধার করতে পারেন না। আর সেই সব ‘চুরির’ টাকা দিয়েই প্রতারণা চক্র, আর্থিক তছরুপ, সন্ত্রাসে মদতের মতো নানা ঘটনা ঘটে চলেছে।
কেন্দ্র প্রদত্ত পরিসংখ্য়ান অনুযায়ী, এই সকল ফ্য়ান্টাসি গেমিংয়ের মাধ্যমেই প্রতি মাসে ভারতে গড়ে ১০ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়। সেই কারণেই গত কয়েক বছরে গেমিং শিল্পে ব্যাঙের ছাতার মতো এমন বহু অ্যাপ পরিচালনাকারী ছোট-বড় সংস্থা গজিয়ে উঠেছে। তবে আর নয়। এবার এই সকল অ্য়াপের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। পাশাপাশি, রাষ্ট্রপতির অনুমোদনে এই বিল আইনে বলবৎ হলেই যারা এই সকল অ্যাপ পরিচালনা করছে, তাদের উপর ১ কোটি টাকা জরিমানা বসানোর পাশাপাশি, তিন বছরের জেল হতে পারে। আর যারা সরাসরি জড়িত নয়, এই সকল গেমিং অ্য়াপের বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন তাদের উপর চাপানো হবে ৫০ লক্ষ টাকার জরিমানা।