শুক্রবার সর্বদল বৈঠক ডেকেছিল নির্বাচন কমিশন। মুখ্যনির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে হওয়া সেই বৈঠক নিয়ে একেবারেই সন্তুষ্ট নয় তৃণমূল। বৈঠক শেষে অরূপ বিশ্বাসে স্পষ্ট কথা, “আমরা আমাদের কথা বলেছি। তবে বৈঠকে সন্তুষ্ট নই। ১২০০-র বেশি একটা বুথে ভোটার থাকবে না, ইলেকশন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে তৃণমূল জানিয়ে দিয়েছে ১২০০ বেশি হবে না মানে তাই বলে ভোটারদের দূরেও পাঠানো যাবে না।
নির্বাচনে হাইরাইজ বুথগুলি কীভাবে চলবে না চলবে সে ব্যাপারে আজকের বৈঠকে যে আলোচনা হতে পারে তার ইঙ্গিত আগেই পাওয়া গিয়েছিল। এবার বুথের সংখ্যা যেহেতু আরও বাড়ছে, তাই কোথায় কত বুথ হতে পারে, তার রূপরেখা তৈরি করতেই মূলত সর্বদল বৈঠক ডাকা হয়।
আরও পড়ুনঃ ‘বরণডালা’ সাজাচ্ছে নির্বাচন কমিশন! ডেডলাইন বিকাল ৫টা! রাজ্যকে দিতে হবে রিপোর্ট, তারপরই শুরু হবে SIR?
বুথ বিন্যাস ও বিভিন্ন ইস্যুতে এদিন সর্বদলীয় বৈঠকে মাঝে মধ্যেই বাদানুবাদ হচ্ছিল বিজেপি-তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে। বুথ বিন্যাস নিয়ে সিইও অফিসে পাঠানো ডিইও অর্থাৎ ডিএম-দের রিপোর্টকে জালি বলে ব্যাখ্যা দেয় বিজেপি। তাদের কথা, ২৪ জন ডিইও রিপোর্ট পাঠিয়ে বলেছে যে কোনও দলের নাকি কোনও বিরোধিতা নেই। এটা একেবারে জালিয়াতি। বিজেপির শিশির বাজোরিয়া বলেন, “আমাদের অবজেকশন রয়েছে। ডিইওরা কীভাবে এমন রিপোর্ট দিল! ২৪ জন ডিইওকেই শোকজ করা হোক। তারা ৪২০ মতো কাজ করেছেন।” বামেরাও বুথ বিন্যাস নিয়ে ডিইও-দের পাঠানো রিপোর্ট নিয়ে সরব হন।
অন্যদিকে, বৈঠকে কংগ্রেস নেতারা বিধান ভবনে বিজেপির তাণ্ডব ও ভাঙচুরের ঘটনার প্রসঙ্গ তোলে। দাবি করা হয়, দোষীদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে। প্রসঙ্গত, এদিন বৈঠকে যোগ দেওয়ার আগে নো এসআইআর প্ল্যাকার্ড নিয়ে আসেন কংগ্রেস নেতারা। যা নিয়ে বিজেপি আপত্তি জানায় বিজেপি।
এবার ভোটে হাইরাইজ বুথ অর্থাৎ বহুতলে বুথ তৈরির কথা ভেবেছে কমিশন। মূলত শহর কলকাতার কথা মাথায় রেখেই এই ভাবনা শুরু হয়েছে। তবে বাস্তবায়িত হলে তা হবে গোটা রাজ্যেই। যে সমস্ত বহুতলে ৪০০ বা তার অধিক বাসিন্দা থাকেন সেখানেই বুথ করতে পারে কমিশন।
বিগত কয়েক বছরে কলকাতার প্রায় সর্বত্রই গজিয়ে উঠেছে অসংখ্য বহুতল। হু হু করে বেড়েছে শহরের বাসিন্দাদের সংখ্যাও। এদিকে রাজ্যের অন্যান্য জায়গার তুলনায় শহর কলকাতার ভোটাদানের হার বরাবরই কম। তাই সেই ক্ষেত্রে এবার বদল আনতে চাইছে কমিশন।
মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক জানিয়েছেন, আগে বুথ ছিল ৮০ হাজার ৬৮১ টি। বুথ বিন্যাসের পর ১৩ হাজার ৮১৬টি বুথ বেড়েছে। ফলে রাজ্যে বুথের সংখ্যা হবে ৯৪ হাজার ৪৯৭ টি। এই ১৩ হাজার ৮১৬টি বুথ নিয়ে কোনও দলের আপত্তি থাকলে সিইও দফতরকে ৮ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫ টার মধ্যে জানাতে হবে। পাশাপাশি, যা আপত্তি আসবে সেটা যাতে মেটানো হয় তার জন্য ডিইও-দের জেলা ভিত্তিক বৈঠক করতে বলবে সিইও।



