জামিন অযোগ্য একাধিক ধারায় তাঁর বিরুদ্ধে FIR দায়ের হয়েছে। সমন পাঠানো হয়েছে ২ বার। প্রত্যেকবার তিনি আইনজীবীদের পাঠিয়েছেন। নিজে আসেননি। এবার কি বীরভূমের ‘বাঘ’ অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করবে পুলিশ? চলছে জল্পনা। একইসঙ্গে প্রশ্ন উঠছে, জামিন অযোগ্য ধারা থাকলেও কড়া পদক্ষেপ না করে কি বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা কেষ্টকে সাহায্য করছে পুলিশই? অনুব্রতকে আগাম জামিনের আবেদন জানানোর সময় দিচ্ছেন? পুলিশের ভূমিকা নিয়ে কী বলছেন প্রাক্তন পুলিশকর্তারা?
বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদারকে ফোনে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজের অভিযোগ উঠছে অনুব্রতর বিরুদ্ধে। সেই অডিয়ো ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে। দুঃখপ্রকাশ করেছেন কেষ্ট। কিন্তু, পুলিশের তলবে নিজে আসেননি। চিকিৎসক তাঁকে বেড রেস্টে থাকতে বলেছেন বলে জানিয়েছেন আইনজীবী। কিন্তু, পুলিশ কেন এখনও কঠোর পদক্ষেপ করছে না? এই নিয়ে কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন ডেপুটি পুলিশ কমিশনার সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্পষ্ট বক্তব্য, রাজ্য সরকারের অনুমতি সাপেক্ষেই কাজ করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: ‘শিরায়-উপশিরায় চলা’ কেষ্ট-অনুরাগী ছাত্র নেতাকে সাসপেন্ড
প্রাক্তন এই পুলিশকর্তা বলেন, “প্রথমেই বলি, অনুব্রত অন্যায় করেছেন। উনি বছর দুয়েক সংশোধনাগারে ছিলেন। জেলে পাঠানো হয় সংশোধনের জন্য। কিন্তু, কী সংশোধন হল, আমরা সবাই দেখতে পাচ্ছি।” এরপরই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তিনি বলেন, “আমার ধারণা, তাঁকে আদালতে গিয়ে আগাম জামিন নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হল। তবে এটা পুলিশ ডিপার্টমেন্টের বিষয় নয়। সরকার যেটা চাইবে, সেটা পুলিশকে করতে হয়। অনেকে ভাবেন, পুলিশ এটা করছে। তা নয়। সরকার যা চাইবে সেটা পুলিশকে করতে হয়। যেকোনও রাজ্যে পুলিশ সেটাই করে, যেটা রাজ্য সরকার চায়। এক্ষেত্রে হয়তো রাজ্য সরকার চাইছে, উনি আদালতে যান।”
অনুব্রতকে গ্রেফতার করলে পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হত বলে প্রাক্তন এই পুলিশকর্তা মনে করেন। তিনি বলেন, “আমার ব্যক্তিগতভাবে মনে হয়, যে অন্যায়টা উনি করেছেন, তার জন্য আজকে গ্রেফতার করা হলে সবচেয়ে ভাল হত। পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হত। বিষয়টি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে যে আলোচনা চলছে, তা বন্ধ হত।” তবে তিনি মনে করেন, আগামিকালও পুলিশ কড়া পদক্ষেপ করতে পারে। সেক্ষেত্রে নিচুতলার পুলিশকর্মীদের কাছেও ইতিবাচক বার্তা যেত। পুলিশের মা-স্ত্রীকে গালিগালাজ করলে যে জেলে যেতে হয়, সেই বিশ্বাস তাঁদের জন্মাত।
আরও পড়ুন: ‘AI করেছে’! দাবি শুনে লজ্জায় মুখ ঢাকল ChatGPT-রা
অনুব্রতর বিরুদ্ধে কতদিন পর্যন্ত পদক্ষেপ না করে থাকতে পারে পুলিশ? প্রাক্তন পুলিশকর্তা সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্য না চাইলে দীর্ঘদিন পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ না করে থাকতে পারে পুলিশ। গ্রেফতার না করেই হয়তো চার্জশিট দিয়ে দিল।”
এর আগে আইনজীবী শীর্ষেন্দু সিনহা রায় জানিয়েছিলেন, এভাবে শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে একবার বা দু’বার হাজিরা এড়ানো যেতে পারে। বৈধ প্রেসক্রিপশন থাকলে, তা জমা দিয়ে অসুস্থতার কারণ দেখানো যায়। তবে ১ দিন বা ২ দিনের বেশি তা হবে না।