বিশেষ নিবিড় পরিমার্জন নিয়ে দেশজোড়া বিতর্কের মধ্যেই সরাসরি সাংবাদিক বৈঠকে বসে পড় নির্বাচন কমিশন। একের পর এক অভিযোগের প্রেক্ষিতে একরাশ ক্ষোভও উগরে দিলেন। স্পষ্ট বললেন, কমিশনের কাঁধে বন্দুক রেখে রাজনীতি করার চেষ্টা হচ্ছে। এখানেই শেষ নয়, নির্বাচন কমিশন যে সব নিয়ম মেনে, নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার সঙ্গে গোটা কাজ চালাচ্ছে তাও বারবার জোর দিয়ে বললেন। মনে করালেন সংবিধান স্বীকৃত অধিকারের কথা। উচ্চস্বরে বললেন, “নির্বাচন কমিশন নিজের সংবিধানিক দায়িত্ব থেকে পিছু হটবে না।” সরব হলেন ভুয়ো অভিযোগ নিয়ে। SIR নিয়ে বিতর্কের আবহে খোদ মুখ্য নির্বাচন কমিশনের এভাবে সাংবাদিক বৈঠক যে রীতিমতো তাৎপর্যপূর্ণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ঠিক কী কী বললেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার…..
- সব রাজনৈতিক দলের জন্ম নির্বাচনী কমিশনে নাম লেখানোর, রেজিস্ট্রেশনের মধ্য দিয়েই হয়। তাহলে নির্বাচন কমিশন তাঁদের মধ্যে ভেদাভেদ কী করে করবে! নির্বাচন কমিশনের ক্ষেত্রে কোনও পক্ষ নেই। কোনও বিরোধী নেই, সে কারও পক্ষেও নয়। তার কাছে সবাই সমান।
- ভোটার তালিকা সংশোধনের জন্য সব রাজনৈতিক দলই দীর্ঘদিন থেকে দাবি জানিয়ে আসছিল। সেই দাবিকে মান্যতা দিয়েই নির্বাচন কমিশন বিশেষ নিবিড় পরিমার্জন শুরু করেছে। বিহার থেকে কাজ শুরু হয়। SIR এর প্রক্রিয়ায় সব মতদাতা, বুথ লেভেল অফিসার, আর রাজনৈতিক দলের দ্বারা পাঠানো ১ লক্ষ ৬ হাজার বিএলএ-রা একসঙ্গে মিলে একটি সূচি তৈরি করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে যখন যখন এই কাজ হয়েছে তখন সব রাজনৈতিক দলের বুথ স্তরের এজেন্টদের তাতে সই রয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে ২৮,৩৭০ ক্লেইমস অ্যান্ড অবজেকশন এসেছে।
- একটা গভীর উদ্বেগের বিষয় যে রাজনৈতিক দলের নিচু তলার কর্মীদের দেওয়া তথ্য হয়তো উপরের নেতৃত্বের কাছে পৌঁছচ্ছে না। বা হয়তো ইচ্ছাকৃতভাবে ভ্রম ছড়ানোর চেষ্টা চলছে।
- নির্বাচন কমিশন নিজের সংবিধানিক দায়িত্ব থেকে পিছু হটবে না। রাজনৈতিক দলের দাবি মেনে SIR হচ্ছে। কমিশন নিরপেক্ষ। কোনও দলের নয়। কোনও বিপক্ষ নেই।
- সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, ভোটারদের গোপনীয়তা লঙ্ঘিত হতে পারে। ভোটারদের ব্যক্তিগত তথ্য আমরা প্রকাশ করতে পারি না। কিন্তু আমরা দেখছি কিছু ভোটারের ফোটো তাঁদের অনুমতি ছাড়া মিডিয়ার সামনে রাখা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। তাঁদের ব্যবহার করা হল।
- লোকসভা নির্বাচনে ১ কোটির বেশি কর্মচারি, ১০ লাখের বেশি বুথ লেভেল এজেন্ট, ২০ লাখের বেশি পোলিং এজেন্ট নির্বাচনের জন্য কাজ করে। এত পারদর্শী, এত বড় প্রক্রিয়ায় কেউ কী ভোটের চুরি করতে পারে? তারপরেও ভোট চুরির অভিযোগ তোলা হয়েছে, প্রমাণ চাওয়া হলে জবাব আসেনি। এই ধরনের মিথ্যা অভিযোগ নির্বাচন কমিশন ভয় পায় না।
- কমিশন স্পষ্ট বলতে চায় ভয় না পেয়ে সব গরিব, বড়লোক, বৃদ্ধ, মহিলা, যুব সহ সমাজের সব স্তরের সব ধর্মের ভোটারদের সঙ্গে কোনও ভেদাভেদ না করে পাহাড়ের মতো দাঁড়িয়ে ছিল, দাঁড়িয়ে থাকবে।
- তবে বিহারে কত নেপালি, কতজন রোহিঙ্গা পাওয়া গিয়েছে তা এখনই জানাল না কমিশন।তবে তাদের ভোটাধিকার যে হবে না, তা স্পষ্ট করল কমিশন। একইসঙ্গে বাংলায় কবে SIR হবে তা যথাযথ সময়ে জানান হবে বলে কমিশনের তরফে জানান হল।