কুশল দাসগুপ্ত, শিলিগুড়িঃ
ছাত্রীদের স্কুলে ঢুকতে হবে এগারোটার মধ্যে। সম্প্রতি এই নিয়ম জারি করেছে রাজগঞ্জ ব্লকের বেলাকোবা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়। ছাত্রীরা নির্দিষ্ট সময় ঢুকলেও শিক্ষিকাদের জন্য ঠিক উলটো নিয়ম! তাঁরা যখন তখন স্কুলে আসতে পারবেন! সোমবার এমন দৃশ্য চোখে পড়ল স্কুল গেটের বাইরে। ঘড়ির কাঁটা এগারোটা বেজে সামান্য কিছু। বাইরে দাঁড়িয়ে বেশ কয়েকজন ছাত্রী। অথচ ঠিক একই সময় স্কুলে ঢুকছেন শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মী। ঘটনার খবর করতে গিয়ে অপমানিত সাংবাদিক। ‘রাস্তায় লোক’ বলে মন্তব্য শিক্ষিকাদের। গোটা ঘটনায় শোরগোল বেলাকোবায়।
আরও পড়ুনঃ আটক প্রধান শিক্ষক! চন্দননগরের নামী স্কুলে ছাত্রকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ
কয়েকদিন আগেই জলপাইগুড়ির শহরের এক গার্লস হাইস্কুলে পড়ুয়াদের জন্য নির্দিষ্ট সময় স্কুলে আসার ফতোয়া জারি হয়। দিন দুয়েক আগে বেলাকোবা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়েও জারি করা হয় নোটিস। নোটিস অনুযায়ী, এগারোটার পর স্কুলের গেট বন্ধ হয়ে যাবে। তারপর কোনও ছাত্রী আর স্কুলে প্রবেশ করতে পারবে না।কিন্তু সমস্যা বাধল অন্য জায়গায়। সোমবার বেশ কয়েকজন ছাত্রী দেরিতে আসার কারণে বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল। ঠিক একই সময় স্কুলে প্রবেশ করেন দুই শিক্ষিকা এবং এক শিক্ষাকর্মী। ঘটনার খবর পেয়ে সংবাদ মাধ্যমের কর্মীরা ভিডিও করতে গেলে কার্যত ফুঁসে ওঠেন শিক্ষিকারা। শুরু হয় তর্কাতর্কি। শিক্ষিকা এবং ছাত্রীদের জন্য নিয়ম কি আলাদা? প্রশ্ন করা হলে তাঁরা দাবি করেন, ‘আমরা স্কুলে এসেছি অন্য কাজের জন্য।’ এরপর স্কুলের বাকি শিক্ষিকারা তেরে আসেন সংবাদ মাধ্যমের কর্মীর উপর। একের পর এক যুক্তির পাহাড় খাড়া করতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত চাপে পড়ে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা ছাত্রীদের স্কুলে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়।
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা ডোনা বোস বলেন, ‘দুই শিক্ষিকা অন্য কাজের জন্য স্কুলে এসেছেন এবং শিক্ষাকর্মীকে একটি কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সেই কাজ শেষ করে তিনি আসেন। শৃঙ্খলা রাখতে এই নিয়ম।’ স্কুলের পরিচালন সমিতি সভাপতি প্রসেনজিৎ দে সরকারেরও বক্তব্য একই।
আরও পড়ুনঃ সারা শরীরে লাল-লাল দাগ, স্কুলের মধ্যেই ক্লাস সিক্সের ছাত্রের সঙ্গে যা ঘটল!
অন্যদিকে, স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ‘বেলাকোবা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকারা হামেশাই দেরি করে আসেন। অনেক ছাত্রী শিকারপুর বাগান সহ মান্তাদারি জঙ্গল লাগোয়া এলাকা থেকে সাইকেলে চেপে আসে। আসা ও যাওয়ার সময় তাঁদের পার হতে হয় বেলাকোবা রেলগেট। রেলগেট বন্ধ থাকলে দেরি হয়। এই বিষয়গুলি স্কুল কর্তৃপক্ষ সহানুভূতির সঙ্গে দেখা উচিত। তাছাড়া শিক্ষিকা এবং ছাত্রী উভয়ের জন্য একই রকম নিয়ম হওয়া উচিত।’