Friday, 12 September, 2025
12 September
বাংলা কাউন্টডাউন টাইমার
বঙ্গবার্তা
HomeকলকাতাLunar Eclipse 2025: কৌতূহল আদি-অনন্তকালের! কিছুক্ষণ পরেই পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ

Lunar Eclipse 2025: কৌতূহল আদি-অনন্তকালের! কিছুক্ষণ পরেই পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ

চাঁদ পুরোপুরি কালো কিন্তু হয় না। বদলে লাল হয়ে ওঠে। কেন?

অনেক কম খরচে ভিডিও এডিটিং, ফটো এডিটিং, ব্যানার ডিজাইনিং, ওয়েবসাইট ডিজাইনিং এবং মার্কেটিং এর সমস্ত রকম সার্ভিস পান আমাদের থেকে। আমাদের (বঙ্গবার্তার) উদ্যোগ - BB Tech Support. যোগাযোগ - +91 9836137343.

গ্রহণ নিয়ে মানুষের মনে কৌতূহল আদি-অনন্তকালের। কিন্তু তার পাশাপাশি রয়েছে ভুল ধারণাও। সেই ভুল ধারণা থেকে জন্ম নিয়েছে কুসংস্কার। অনেকেই সেই কুসংস্কারকে মনে থেকে সরাতে পেরেছেন। কেউ কেউ পারেননি। চন্দ্র বা সূর্যগ্রহণ আদতে প্রাকৃতিক ঘটনা ছাড়া কিছু নয়। তার মধ্যে চন্দ্রগ্রহণ সুদৃশ্য একটি বিষয়। তাই কুসংস্কারমুক্ত মনে এই প্রাকৃতিক ঘটনাকে উপলব্ধি করা উচিত। কখন, কোথায়, কী ভাবে দেখতে হবে সেই গ্রহণ, রইল তার হদিস।

চাঁদের নিজস্ব আলো নেই। তার উপর সূর্যের আলো পড়ে। তার পরেই তাকে দেখা যায়। পৃথিবী চাঁদ এবং সূর্যের মধ্যে চলে এলে সূর্যের আলো আর চাঁদে পড়ে না। বদলে পৃথিবীর ছায়া পড়ে চাঁদের উপরে। তখনই হয় চন্দ্রগ্রহণ।

গ্রিনিচ সময় বা ইউনিভার্সাল টাইম কোঅর্ডিনেট (ইউটিসি) অনুসারে ৭ সেপ্টেম্বর, রবিবার বিকেল ৩টে ২৫ মিনিটে শুরু হবে চন্দ্রগ্রহণ। ভারতে তখন রবিবার রাত ৮টা ৫৮ মিনিট। ইউটিসি অনুসারে ৭ সেপ্টেম্বর রাত ৮টা ৫৫ মিনিটে শেষ হবে সেই গ্রহণ। ভারতে তখন ৮ সেপ্টেম্বর, সোমবার রাত ২টো ২৫ মিনিট। পূর্ণগ্রাস গ্রহণের সময়ে চাঁদের রং হয়ে উঠবে লাল। ভারতে সেই দৃশ্য দেখা যাবে ৭ সেপ্টেম্বর রাত ১১টা থেকে ৮ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা ২২ মিনিট পর্যন্ত প্রায় ৮২ মিনিট সময় ধরে। এত দীর্ঘ সময় ধরে গ্রহণ বহু দিন পর হচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ আজ আকাশপ্রেমীদের জন্য বিশেষ মুহূর্ত; সাক্ষী থাকতে পারেন আপনিও!

এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, আফ্রিকা থেকে দেখা যাবে এই চন্দ্রগ্রহণ। ভারতের প্রায় সব শহর থেকেই দেখা যাবে। কলকাতা, দিল্লি, মুম্বই, পুণে, লখনউ, হায়দরাবাদ, চণ্ডীগড় থেকে এই গ্রহণ স্পষ্ট দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আবহাওয়া অনুকূল থাকতে হবে। আকাশে মেঘ থাকলে গ্রহণ দেখায় সমস্যা হতে পারে।

চন্দ্রগ্রহণের ক্ষেত্রে কোনও বিশেষ চশমার প্রয়োজন হয় না। খালি চোখেই দেখা যায় গ্রহণ। গ্রহণের সময়ে চাঁদ থাকে ফ্যাকাশে। সরাসরি সূর্যের দিকে তাকালে চোখের সমস্যা হয়। কিন্তু চাঁদের ক্ষেত্রে বিষয়টি ভিন্ন। সূর্যের আলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের মধ্যে দিয়ে চাঁদে পড়ে। সেখান থেকে সেই আলো প্রতিফলিত হয়ে আমাদের চোখে পড়ে বলেই আমরা চাঁদকে দেখতে পাই। তাই চন্দ্রগ্রহণ দেখার ক্ষেত্রে চোখের কোনও সুরক্ষার প্রয়োজন নেই। রবিবার রাতে কোনও অন্ধকার জায়গায় দাঁড়িয়ে খালি চোখে আকাশে তাকালেই দেখা যাবে চন্দ্রগ্রহণ।

রবিবার রাত ৯টা পর্যন্ত যে কোনও পূর্ণিমার মতো ঝলমল করবে চাঁদ। রাত ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত ফ্যাকাশে হতে থাকবে চাঁদ। ক্রমে পাণ্ডুর বর্ণ ধারণ করবে। রাত ১০টার পর থেকে চাঁদের এক দিক হবে কালচে, এক দিক হবে ফ্যাকাশে। রাত ১১টা থেকে লালচে হতে থাকবে চাঁদ।

রবিবার রাত ১১টা ৪২ মিনিটে (ভারতীয় সময়) সবচেয়ে অন্ধকারাচ্ছন্ন দেখা যাবে চাঁদকে। ওই সময়ে চাঁদের রং থাকবে গাঢ় লালচে।

চাঁদ এবং সূর্যের ঠিক মাঝখানে পৃথিবী চলে এলে তখন তার ছায়া পড়ে চাঁদে। সে সময়ে হয় পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ। চাঁদ পুরোপুরি কালো কিন্তু হয় না। বদলে লাল হয়ে ওঠে। কেন হয় না, রয়েছে তার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল যখন সূর্যের আলো গ্রহণ করে (বায়ুমণ্ডলের মধ্যে দিয়ে যখন সেই রশ্মি প্রতিসরিত হয়), তখন সূর্যরশ্মির লাল অংশ কম পরিমাণে প্রতিসরিত হয়ে চাঁদের উপরে গিয়ে পড়ে। অন্য দিকে, সূর্যরশ্মির নীল অংশটি চার দিকে ছড়িয়েছিটিয়ে পড়ে। তাই চাঁদকে গ্রহণের সময়ে গাঢ় কালচে লাল দেখা যায়। কিন্তু কখনও পুরো কালো দেখায় না।

আরও পড়ুনঃ সূর্যের নবম গ্রহ কি ছিটকে বেরিয়ে গিয়েছিল! উদ্ভট ও রহস্যময় কক্ষপথের হদিস

চাঁদ উদয় বা অস্ত হচ্ছে (দিগন্তের কাছাকাছি থাকলে), এমন সময়ে গ্রহণ হলে তাকে সবচেয়ে বেশি লাল দেখায়। কারণ, সে সময় আবহাওয়া মণ্ডলের মধ্যে দিয়ে সূর্যের আলোকে অনেকটা ভ্রমণ করে চাঁদে পৌঁছোতে হয়। চাঁদ মাথার উপরে থাকার সময়ে গ্রহণ হলে তাকে ‘প্রকট’ লালচে কালো না-ও দেখা যেতে পারে। রবিবার যখন পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ চলবে, তখন ভারতে মধ্যরাত। ৭ সেপ্টেম্বর ভারতীয় সময় রাত ১১টা থেকে ৮ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা ২২ মিনিট পর্যন্ত প্রায় ৮২ মিনিট সময় ধরে চলবে পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ। সে সময় চাঁদ যেহেতু মধ্যগগনে থাকবে, তাই ভারত থেকে গ্রহণের চাঁদকে ততটা লাল না-ও দেখাতে পারে।

অতীতে অনেকে মনে করতেন, ‘রাহু’ নামে এক রাক্ষস চাঁদ বা সূর্যকে গিলে খায়। তাই মাঝেমধ্যে অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে ওঠে সূর্য এবং চাঁদ। কিন্তু সেই রাক্ষসের গলা কাটা বলে তারা আবার গ্রাস থেকে বেরিয়ে আসে। এ নিয়ে বিজ্ঞানীরা বার বার বুঝিয়েছেন। তবু বহু মানুষের মনে সংশয় রয়ে গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এক প্রবন্ধে আক্ষেপ করেছিলেন আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়। তিনি লিখেছিলেন, গ্রহণ কেন হয়, তা ক্লাসে ছাত্রদের পড়িয়েছেন। ছাত্রেরা পড়ে পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেছে। তার পরেও চন্দ্রগ্রহণ হলে সেই তারাই ঢাকঢোল বাজিয়েছে!

চন্দ্রগ্রহণ দেখা সুন্দর এক অভিজ্ঞতা। আবালবৃদ্ধবনিতার গ্রহণ দেখে ক্ষতি হয়েছে বলে কোনও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। এ সব মনগড়া বিশ্বাস, যা মানুষকে ভুল পথে চালিত করে। এর কোনও ভাল দিক নেই। বরং মনে কোনও চিন্তা, দ্বিধা না রেখে সকলেরই রবিবারের পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ দেখা উচিত।

সন্তানসম্ভবারা গ্রহণ দেখলে খারাপ কিছু হয় বলে কোনও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।

সূর্য এবং চন্দ্রগ্রহণ প্রাকৃতিক ঘটনা। তাকে কেন্দ্র করে কিছু চিন্তাভাবনা রয়েছে। কিন্তু সেই চিন্তাভাবনার সত্যতার প্রমাণ কেউ দিতে পারেননি। গ্রহণের সময়ে খাওয়াদাওয়া না করার যে যুক্তি দেওয়া হয়, তা বিজ্ঞানসম্মত নয়। সূর্যগ্রহণের ক্ষেত্রে বলা হয়, সূর্য ঢাকা পড়ে গেলে কিছু খেতে নেই। সন্ধ্যায় বা রাতে সকলেই খান। তখন সূর্য আকাশে থাকে না। একই ভাবে আকাশে চাঁদের অনুপস্থিতিতেও খাওয়া-দাওয়া করা হয়। গ্রহণের সঙ্গে খাওয়াদাওয়া করার কোনও সম্পর্ক নেই। এটা শুধুই কুসংস্কার।

এর পরে ভারত থেকে পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ দেখা যাবে ২০২৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর।

এই মুহূর্তে

আরও পড়ুন