স্বাস্থ্যের কারণ দেখিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় উপরাষ্ট্রপতি পদে ইস্তফা দিয়েছেন জগদীপ ধনখড়। রাষ্ট্রপতিকে লেখা চিঠিতে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও অন্যান্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদও দিয়েছেন তিনি। সেই ইস্তফার পর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই বেড়েছে জল্পনা। প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন বিরোধীরা। বাদল অধিবেশন শুরু হওয়ার পর সোমবার সকালেও রাজ্যসভার ভাইস চেয়ারম্যানের চেয়ারে ছিলেন ধনখড়, কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কী এমন ঘটল? কংগ্রেস বলছে, ‘কারণটা গভীরতর’।
আরও পড়ুনঃ চোখ কপালে! তিনটি ১০০ টাকার নোটের দাম ১২ লক্ষ টাকা
জানা গিয়েছে, সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় ছিল সংসদের বিজনেস অ্যাডভাইজরি কমিটির বৈঠক। অধিবেশনে কখন, কী নিয়ে আলোচনা হবে, সেই বিষয়েই আলোচনা হয় এই বৈঠকে। সেখানে রাজ্যসভার দলনেতা হিসেবে জে পি নাড্ডা ও সংসদ বিষয়ক পরিষদীয় মন্ত্রী কিরণ রিজিজু উপস্থিত ছিলেন। কিছুক্ষণ আলোচনা হওয়ার পর ঠিক হয়, ওই কমিটি সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টেয় আবারও বৈঠকে বসবে।
সেই মতো সাড়ে ৪টেয় বৈঠক বসে। চেয়ারে বসেন জগদীপ ধনখড়ও। কিন্তু, জে পি নাড্ডা ও কিরণ রিজিজুর দেখা পাওয়া যায়নি। দীর্ঘক্ষণ বসে থাকলেও তাঁরা অনুপস্থিতির কোনও কারণও জানাননি। ফলে শেষ পর্যন্ত বৈঠক বাতিল করে দিতে হয়। মঙ্গলবার বেলা ১ টায় বৈঠক হবে বলে জানিয়ে দেন ধনখড়। এই পুরো ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মোড় ঘুরে যায় আচমকা।
রাত ৯টার পর প্রকাশ্যে আসে রাষ্ট্রপতিকে দেওয়া ধনখড়ের চিঠি। সেখানে পদত্যাগের কথা জানান তিনি। বিরোধী সাংসদদের মধ্যে অনেকেই এদিন সন্ধ্যায় নানা কারণে ধনখড়কে ফোন করেছিলেন, স্বাভাবিক কথোপকথনও হয় তাঁদের মধ্যে। তারপর কী এমন ঘটল? প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। কংগ্রেসের মহাসচিব জয়রাম রমেশ বলেন, ‘গভীরতর কারণ রয়েছে।’
কংগ্রেস নেতা এক্স মাধ্যমে যে পোস্ট করেছেন, তাতেও প্রশ্ন উঠেছে, দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টের মধ্যে কিছু একটা ঘটেছে!
আরও পড়ুনঃ স্বাধীন ভারতে প্রথমবার, দায়িত্ব সামলেছেন সকালেও; আচমকা ইস্তফা ধনখড়ের
প্রশ্ন উঠেছে আরও একটি। বিচারব্যবস্থার বিরুদ্ধে অতি সক্রিয়তাই কি ধনখড়ের হঠাৎ ইস্তফার নেপথ্য কারণ? না কি সরকারের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই বিচারপতি ভার্মার বিরুদ্ধে বিরোধীদের ইমপিচমেন্ট (অনাস্থা) নোটিস মেনে নেওয়ায় বাঁধল গন্ডগোল!
সূত্রের খবর, সরকার চেয়েছিল, বিচারপতি ভার্মার বিরুদ্ধে সরকারের উদ্যোগে সর্বসম্মতভাবে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হবে। সরকারের পরিকল্পনা ছিল, প্রথমে লোকসভায় প্রস্তাব আনা হবে, তারপর রাজ্যসভায়। কিন্তু সোমবার হঠাৎ করেই ধনখড় ঘোষণা করেন, বিরোধী বেঞ্চ থেকে ৫০ জন সাংসদের স্বাক্ষর করা অনাস্থা প্রস্তাব পেয়েছেন তিনি। ট্রেজারি বেঞ্চের সঙ্গে কোনও আলোচনা না ছাড়াই বিরোধী পক্ষের প্রস্তাব গৃহীত হওয়ায় চরম অস্বস্তিতে পড়ে যায় সরকার পক্ষ। এছাড়া পহেলগাম এবং অপারেশন সিঁদুর নিয়ে বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গেকে দীর্ঘক্ষণ বলার সুযোগও দেন ধনকর।