ফেসবুকে হঠাতই এক ট্রেন্ড দেখা গিয়েছে। যে ট্রেন্ডে গা ভাসিয়েছে ‘হুজুকে’ বাঙালি। কী সেই ট্রেন্ড? মানুষজন একটা পোস্ট করছে। সেই পোস্ট অনুযায়ী ওই একই লেখা কপি করে নিজের প্রোফাইল থেকে পোস্ট না করলে নাকি ফেসবুক ব্যবহারকারীদের সব তথ্য ও ছবি ব্যবহার করবে মেটা। কিন্তু এই তথ্য কি আদৌ সঠিক?
আরও পড়ুনঃ রাজ্যে চালু হয়ে গেল নিবিড় সমীক্ষা? ২০০২ সালের ভোটার তালিকা প্রকাশ শুরু করল কমিশন
কী লেখা থাকছে ওই পোস্টে?
“আমি এই মর্মে ঘোষণা করছি যে আমি ফেসবুক বা মেটাকে আমার কোন ব্যক্তিগত তথ্য বা ছবি ব্যবহার করার অনুমতি দিচ্ছি না। আগামীকাল একটি বড় দিন। এটা অফিসিয়াল। সকাল ৮:১০ মিনিটে স্বাক্ষর করা হয়েছে। এটা টিভিতেও দেখানো হয়েছে। ভুলে যাবেন না, আগামীকাল থেকে নতুন ফেসবুক নিয়ম (অর্থাৎ নতুন নাম, মেটা) চালু হচ্ছে, যার অধীনে কোম্পানি আপনার ছবিগুলো ব্যবহার করতে পারবে। মনে রাখবেন, এর সময়সীমা আজই শেষ।
এই বার্তার যেকোনো স্থানে আঙুল দিন, “কপি” দেখা যাবে। “কপি” তে ক্লিক করুন। এরপর নিজের পেজে যান, একটি নতুন পোস্ট তৈরি করুন এবং খালি স্থানে আঙুল দিন, “পেস্ট” দেখাবে – “পেস্ট” এ ক্লিক করুন। এটি সিস্টেমকে বাইপাস করতে সাহায্য করবে। যারা কিছু করেন না, তারা সম্মতি দিচ্ছেন বলে ধরে নেওয়া হবে।
৬০ মিনিটস শো অনুযায়ী: যদি আপনি এটি মিস করে থাকেন, তাহলে জানিয়ে রাখি যে একজন আইনজীবী আমাদের এই পোস্টটি করার পরামর্শ দিয়েছেন। গোপনীয়তা লঙ্ঘনের জন্য আইন অনুযায়ী শাস্তি হতে পারে।
নোট: ফেসবুক (মেটা) এখন একটি পাবলিক প্রতিষ্ঠান। প্রতিটি সদস্যকে এরকম একটি ঘোষণা পোস্ট করতে হবে। যদি আপনি অন্তত একবারও এরকম কোনো বিবৃতি প্রকাশ না করেন, তাহলে প্রযুক্তিগতভাবে এটি ধরে নেওয়া হবে যে আপনি আপনার ছবি এবং প্রোফাইল তথ্য ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন।
আমি এই মর্মে ঘোষণা করছি যে আমি ফেসবুক বা মেটাকে আমার কোনো ব্যক্তিগত তথ্য বা ছবি ব্যবহারের অনুমতি দিচ্ছি না।”
এই জায়গায় মেটার টার্মস অফ সার্ভিস বলছে, তারা বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছে ব্যবহারকারীদের তথ্য বিক্রি করে না। এ ছাড়াও নাম, ইমেল আইডি বা অন্য তথ্য কোনও ব্যক্তির অনুমতি ছাড়া বিজ্ঞাপনদাতাদের বিক্রি করে না তারা। কোনও ব্যক্তি যখন ফেসবুকে তার অ্যাকাউন্ট খোলে তখনই সে একটি টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশনের পেজ অ্যাক্সেপ্ট করে। ফলে, পরবর্তীতে কোনও পোস্ট কপি পেস্ট করে খুব বেশি লাভ হবে না।
তাহলে এই যে ট্রেন্ডে মানুষ গা ভাসাচ্ছেন, তার ভিত্তি কী? সোজা কথায় বাঙালি ‘হুজুকে’, ফলে এই ধরনের ব্যাপার ঘটছে। এর আগে ২০২১ সালেও এমন ঘটনা ঘটেছিল। তবে, কোনও ফেসবুক ব্যবহারকারী তার অ্যাকাউন্টের প্রাইভেসি অপশনে গিয়ে প্রোফাইলকে তিনি আরও বেশি সুরক্ষিত করতে পারবেন।
আরও পড়ুনঃ পিলারে ফাটল! অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশন
ফেসবুকের এই প্রাইভেসি লিক হওয়া সম্পর্কে বলতে গেলে ২০১৮ সালের একটা বিষয় বলতেই হয়। সংবাদপত্র ‘দ্য হিন্দু’র তথ্য অনুযায়ী ২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল মার্কিন কংগ্রেসের সামনে মার্ক জুকেরবার্গ কয়েক লক্ষ ফেসবুক ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হওয়া নিয়ে ক্ষমা চান। ফলে, এই কথা বলাই যায়, ফেসবুকে যা ছড়াচ্ছে এই মুহূর্তে তা একেবারেই সঠিক নয়। আর এই ধরনের বিভ্রান্তিকর ও ভিত্তিহীন খবরের থেকে দূরে থাকাই সঠিক।