কুশল দাশগুপ্ত, শিলিগুড়িঃ
তৃণমূল কংগ্রেসের যুব সংগঠনের প্রাক্তন ও বর্তমানের মুখ দেখাদেখি বন্ধ। যুব নেতা-কর্মীরা রীতিমতো দুটি গোষ্ঠীতে বিভক্ত। অথচ বছর ঘুরলেই নির্বাচন। যা ভাবাচ্ছে দলীয় নেতৃত্বকে। ভোটের আগে বিরোধ মেটাতে শিলিগুড়ির নেতারা বিবদমান দুই গোষ্ঠীকে একত্রিত করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু তা কতটা কাজে দেবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সংগঠনের বর্তমান জেলা সভাপতি জয়ব্রত মুখুটি গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ খারিজ করে দাবি করছেন, ‘সবকিছু ঠিকভাবেই চলছে। সবাই মিলেই বিধানসভা ভোটের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।’ কিন্তু এই বক্তব্য খণ্ডন করে প্রাক্তন জেলা সভাপতি নির্ণয় রায় বলছেন, ‘সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার পরে জয়ব্রত আমার সঙ্গে একবারের জন্যও যোগাযোগ করেননি। আমিও উপযাজক হয়ে কোনও কর্মসূচিতে যাইনি।’
একদা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দার্জিলিং জেলা সভাপতি নির্ণয় দু’বছর আগে যুব সংগঠনের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর আমলেও সংগঠন সেভাবে ডানা মেলতে পারেনি। বিভিন্ন মিটিং, মিছিলে ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীদের ভিড়ই থাকত বেশি। তাঁর আমলেও যুব সংগঠনের শহর, ব্লক কমিটি তৈরি হয়নি। কিন্তু দলের শাসক গোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠ হওয়ায় পদ খোয়াতে হয়নি তাঁকে। কিছুদিন আগে রাজ্যজুড়ে তৃণমূল যুব কংগ্রেসে রদবদল হয়েছে। সংগঠনের দার্জিলিং জেলা (সমতল) কমিটিতে জয়ব্রতকে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, নির্ণয়কে রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ আওয়াজ উঠেছে বয়কটের! দেশে মার্কিন বর্জনের ডাক
জয়ব্রত দায়িত্ব পাওয়ার পর কার্যত তাঁকে ঘিরে থাকতেন একসময়ের যুব সভাপতি কুন্তল রায় ও তাঁর অনুগামীরা। মূলত কুন্তল গোষ্ঠীই জয়ব্রতকে নিয়ে শহর থেকে গ্রামে ঘুরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছিল। জেলা কমিটি তৈরি না হলেও অনেকে নিজেকে ব্লক সভাপতি বলে জাহির করে সমাজমাধ্যমে প্রচারও শুরু করেছিলেন। ইদানীং কুন্তল গোষ্ঠীর একাংশকে জয়ব্রতর সঙ্গে দেখা যাচ্ছে না। এমনকি বুধবার ভিনরাজ্যে বাংলা ভাষাভাষী মানুষের ওপরে অচ্যাচারের প্রতিবাদে শিবমন্দিরে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতেও কুন্তলদের পাশাপাশি নির্ণয় গোষ্ঠীর কাউকে দেখা যায়নি। কুন্তল বলছেন, ‘ওয়ার্ডে কিছু কাজ থাকায় যেতে পারিনি। আমি সবার সঙ্গেই আছি। নতুন জেলা সভাপতি যাতে আমার লোক-তোমার লোক না দেখে উপযুক্ত নেতানেত্রীকে নিয়ে কমিটি করেন, সেটা বলা হয়েছে।’
এদিকে, শুক্রবার রাতে দেবাশিস রায় নামে এক যুব নেতাকে ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি করা হয়েছে বলে সমাজমাধ্যমে প্রচার চলছে। জেলা সভাপতি অবশ্য বলেছেন, ‘এমন কাউকে কোনও দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। যে বা যাঁরা এসব প্রচার করছেন, তাঁদের সতর্ক করা হয়েছে।’
আরও পড়ুনঃ টাকা উধাও! রাতারাতি অ্যাকাউন্ট ফাঁকা! মাথায় হাত বাসিন্দাদের
তৃণমূলের একাংশের বক্তব্য, যুবদের এমন বিরোধ বিধানসভা ভোটের আগে দলকে বিপাকে ফেলবে। দ্রুত এই কোন্দল মেটানো উচিত।