এই একটা নামই বোধহয় যথেষ্ট আপামর সালকিয়া তথা হাওড়াবাসীর কাছে। ইনি সালকিয়া তো বটেই, এমনকি সমস্ত হাওড়া জেলার অভিভাবক। এনাকে সবাই সালকিয়ার অধিশ্বরী বলে থাকি। আজ বলবো এই মাকে নিয়ে। যত শীতলা মা রয়েছেন ইনি সবার থেকে বয়সে বড়, আর তাই ইনি বড়মা। সালকিয়ায় অরবিন্দ রোডের কাছে এনার বর্তমান বাড়ি।
আরও পড়ুন: Today’s Horoscope: শুক্লা চতুর্দশীতে সর্বার্থ সিদ্ধির সঙ্গে রবি যোগ, কী আছে কোন রাশির ভাগ্যে?
তবে ইনি আগে ছিলেন শ্রীরাম ঢ্যাং রোডের গলির ভিতরে এক বাড়িতে। তবে ইনি সেখানে থাকতে চাননি। তাই স্বপ্নাদেশ দিয়ে অরবিন্দ রোডে চলে আসেন। সারা বছর অগণিত ভক্তদের মন্দিরে বসে দেখেন, আর বছরে এই একটা দিন লক্ষ লক্ষ ভক্তদের কাঁধে চেপে নগর পরিক্রমা করেন। এই নগর পরিক্রমা করার সময় প্রথমে তাঁর ভাই পঞ্চাননদেবের মন্দিরে দেখা করেন, তারপর তাঁর ছোট বোনের সাথে দেখা করেন, এবং সর্বশেষ স্নান সেরে বাড়িতে ঢোকেন। এটাকেই মূলত আমরা স্নান যাত্রা উৎসব বলে থাকি। মাঘী পূর্ণিমা তিথি যেদিন রাত্রি পায়, ইনি সেই রাতে স্নান করেন। প্রথমে অগণিত ভক্তরা মাকে স্নান করায়, তারপর ওনার বাড়ির সদস্যরা স্নান করান, এবং তারপর মন্দিরের পুরোহিতদের হাতে স্নান করেন। তারপর গঙ্গা ঘাটেই মায়ের বরণ হয়।বরণের পর পুণরায় সেই ভক্তদের কাঁধে চেপেই বাড়ি আসেন। বাড়িতে এসে অভিষেক হয়। তারপর রাজবেশ পরিধান করে শুরু হয় মায়ের পুজো।
আরও পড়ুন: Amul: গুজরাতের ‘আমুল’ গড়ছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ দই উৎপাদন কেন্দ্র, মুকুটে নতুন পালক
যা চলে পরদিন রাত্রি পর্যন্ত। স্নান যাত্রার পরদিন হয় ষোলো আনা পুজো। ওইদিন উপোসী ভক্তরা মায়ের কাছে পুজো দিয়ে থাকেন। এই ষোলো আনা পুজোকে বলা হয় দেশ ষোলো আনা পুজো অর্থাৎ পৃথিবীতে যত শীতলা মা আছেন, সবার নাম করে বড় মায়ের চরণে পুজো দেওয়া। ষোলো আনা পুজো থেকে পরপর আটদিন মায়ের বিশেষ পুজো হয়। আটদিন পর থেকে যাত্রাপালা, গান, নাচ, নাটক ইত্যাদির মাধ্যমে মায়ের মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা করা হয় মন্দির প্রাঙ্গণে। প্রায় শত শত বছর ধরে এভাবেই মাঘী পূর্ণিমা তিথিতে সালকিয়াতে এই স্নান যাত্রা উৎসব পালিত হয়ে আসছে। লক্ষ লক্ষ ভক্ত দুরদুরান্ত থেকে আসেন মায়ের পুজোর টানে। যারা সালকিয়াতে বা আশেপাশে থাকেন, তারা প্রত্যেকেই এতটাই ভাগ্যবান যে, তারা জন্মসূত্রে বড়মাকে পেয়েছেন।আজ ১১ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ মায়ের স্নান যাত্রা,এবং ১২ই ফেব্রুয়ারি ষোলো আনা পুজো।