কসবাকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদে উত্তাল রাজ্যের রাজপথ। রবিবার গড়িয়াহাট থেকে হাজরা পর্যন্ত নাগরিক মঞ্চের ডাকে আয়োজিত মিছিল রাসবিহারির কাছে লেক মলের সামনে তা আটকে দিল পুলিশ। এর পরেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন আন্দোলনকারীরা। আন্দোলনে বাধা পেয়ে রাস্তাতেই বসে পড়েন তাঁরা।
আরও পড়ুন: জাতীয় স্তরে উত্তরণ! বাড়ল দায়িত্ব; এসএফআই-এর সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হলেন সৃজন
কসবাকাণ্ডের প্রতিবাদে অভয়া মঞ্চেরও মিছিল বেরিয়েছে। একাধিক গণ-সংগঠনও তাতে পা মিলিয়েছে। এদিনের মিছিলে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্টজন থেকে সাধারণ মানুষ— সবাই কসবাকাণ্ডের নির্যাতিতার জন্য ন্যায়বিচারের দাবিতে একত্রিত হন।
নাগরিক মঞ্চের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা আইনের পথে থেকে এই লড়াই চালিয়ে যাবেন। তবে পুলিশের এই ভূমিকার বিরুদ্ধে শহরজুড়ে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। পুলিশ জানায়, তাঁদের কাছে এই পর্যন্ত আসতে দেওয়ার ইনস্ট্রাকশন ছিল। এরপর আন্দোলনকারীদের আর এগোতে দেওয়া যাবে না।
মিছিলের অন্যতম মুখ হিসেবে ছিলেন অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র, যিনি পুলিশের বাধার সামনে দাঁড়িয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানান।শ্রীলেখার কড়া প্রশ্ন, “ধর্ষক আর খুনিদের পাশে দাঁড়ানোর বদলে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের প্রতিবাদ আটকানোর সাহস কোথা থেকে পায় সরকার? আমরা বিচার চাই, কেন মিছিল আটকানো হল?”
শ্রীলেখার সঙ্গে সুর মেলান আরও অনেকেই। আন্দোলনকারীরা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তারা ব্যারিকেড ভেঙে নয়, বরং শান্তিপূর্ণভাবে তাঁদের দাবি জানাতে চান। তবু, পুলিশ তাঁদের বাধা দেওয়ায় ক্ষোভ ছড়ায় উপস্থিত জনতার মধ্যে।
আন্দোলনে আরও অংশ নেন অভিনেতা দেবদূত ঘোষ, বাদশা মৈত্র-সহ অন্যান্য বিশিষ্টজনেরা। মিছিল থেকে উঠে আসে আরও একাধিক অভিযোগ। সম্প্রতি বোমা বিস্ফোরণে নিহত ক্লাস ফোরের ছাত্রী তমান্নার প্রসঙ্গ তুলে পুলিশ-প্রশাসনের ব্যর্থতার কথা বলেন অনেকে।
আরও পড়ুন: জাতীয় স্তরে উত্তরণ! বাড়ল দায়িত্ব; এসএফআই-এর সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হলেন সৃজন
এদিকে, কসবা ধর্ষণকাণ্ডে এখন পর্যন্ত চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নির্যাতিতার অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে তিন মূল অভিযুক্তকে প্রথমে ধরা হয়— যাঁদের মধ্যে একজন কলেজের প্রাক্তনী ও কর্মী, বাকি দু’জন বর্তমান ছাত্র। ঘটনাস্থলে থেকে সহায়তা করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে কলেজের নিরাপত্তারক্ষীকেও। যদিও প্রথমে তাঁকে আটক করা হয়েছিল, পরে শনিবার তাঁকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
নির্যাতিতার বয়ানে উঠে এসেছে, তাঁকে ধর্ষণ করা হয় কলেজ চত্বরের মধ্যেই। বাকি অভিযুক্তরা তাঁকে বাধা না দিয়ে বরং এই ঘৃণ্য অপরাধে সহায়তা করে। নির্যাতিতা জানিয়েছেন, নিরাপত্তারক্ষীর কাছে সাহায্যের আবেদন করলেও কোনও সহায়তা পাননি তিনি।