প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে প্রচ্ছন্ন ভাষায় অবসরগ্রহণের ইঙ্গিত দিয়েছেন বিজেপির চালিকাশক্তি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের প্রধান মোহন ভাগবত। মহারাষ্ট্রের উদ্ধব-সেনা নেতা সঞ্জয় রাউত ফের একবার মোদীর অবসর নিয়ে বিতর্কের ধুনো জ্বেলে দিলেন এই দাবি করে। এর আগেও আরএসএস এবং বিজেপির গঠনকাঠামো ও সংবিধান অনুযায়ী ৭৫ বছর বয়সে অবসরের নিয়মের দৃষ্টান্ত টেনেছিলেন উদ্ধবপন্থী শিবসেনা এমপি রাউত।
আরও পড়ুন: অফিস টাইমে ৪.৪ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প, আতঙ্ক রাজধানীতে
‘স্পষ্টবক্তা’ বলে খ্যাত রাউত বলেছিলেন, নাগপুরে মোদী-ভাগবত একান্ত আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীকে অবসর নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সরসঙ্ঘচালক। মার্চ-এপ্রিল মাসে এনিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছিল। শুধু রাউতই নন, তাঁরও আগে আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালও মোদীর অবসর নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। প্রতিবারই এ জাতীয় ইঙ্গিতবাহী কথা উঠলেই রে রে করে মাঠে নেমে পড়ে বিজেপি নেতৃত্ব। সঞ্জয় রাউতের দাবির জবাবে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ বলেছিলেন, বিজেপি দলের যতদিন ইচ্ছে, ততদিন দলের নেতা থাকবেন মোদী। তিনিই দলের ক্যাপ্টেন।
বুধবার সঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত ৭৫ বছর বয়সে অবসর নিয়ে ফের একবার প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত দেওয়ায় নতুন করে জলঘোলা হতে শুরু করেছে। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও ভাগবত দুজনেরই এ বছর সেপ্টেম্বরে ৭৫ বছর পূর্ণ হতে চলেছে। রাউতের দাবি, সঙ্ঘ প্রধান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেই অবসরের বার্তা দিতে চেয়েছেন।
আরও পড়ুন: ‘সংযত থাকুন না হলে…’! মামদানিকে হুঁশিয়ারি ইজরায়েল-বান্ধব ট্রাম্পের
বুধবার নাগপুরে এক অনুষ্ঠানে ভাগবত বলেছেন, যখন ৭৫ বছর বয়সে আপনাকে কেউ অত্যন্ত উৎসাহের সঙ্গে অভিনন্দন জানাতে আসবে, তখনই বুঝে যাবেন এবার আপনাকে থামতে হবে। অন্যের জন্য কাজের জায়গা ছেড়ে দিতে হবে। কথাটি সত্যিই তাৎপর্যপূর্ণ বলে দাবি করে রাউত বলেন, এটা ভাগবত প্রধানমন্ত্রী মোদীকেই বার্তা দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, মোদী হলেন সেই ব্যক্তি, যিনি লালকৃষ্ণ আদবানি, মুরলিমনোহর জোশি, যশবন্ত সিংয়ের মতো নেতাকে ৭৫ বছর বয়সে অবসর নিতে বাধ্য করেছিলেন। এখন দেখা যাক নিজের ক্ষেত্রে মোদী তা প্রয়োগ করেন কিনা!
গতবছর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছিলেন, ৭৫ বছর বয়সে অবসর নিতে হবে, বিজেপির সংবিধানে এমন কোনও আইন নেই। সেই মতো মোদীও ৭৫ বছরে অবসর নেবেন, এমন কোনও সম্ভাবনাই নেই। ২০২৯ সাল পর্যন্ত তিনিই প্রধানমন্ত্রী ও সক্রিয় রাজনীতিতে থাকবেন। ফলে, ইন্ডিয়া জোটের সামনে খুশি হওয়ার মতো কারণ নেই। শাহের এই ঘোষণার পর থেকে বিজেপির তাবড় নেতৃত্ব মোদীকেই সমর্থনের জোরাল দাবি জানাতে শুরু করেন।