সোমবার দুপুর। বাংলাদেশের চট্টগ্রামের একটি ক্লাবের গেস্ট হাউজ ঘিরে লোকরণ্য। কিছু একটা হয়েছে, এই সবই আলোচনা করছেন স্থানীয়রা। কিন্তু কী হয়েছে? তা স্পষ্ট হতে খানিকটা সময় লাগল। আর যখন চোখের সামনে গোটা ছবিটা পরিষ্কার হল, তখন দেখা গেল একটি নিথর দেহ ধরে-বেঁধে ক্লাবের গেস্ট হাউজ থেকে বের করে আনছেন কয়েকজন।
আরও পড়ুনঃ ‘মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধও মানা হল না’! ক্ষোভ উগরে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু
এই দেহ কার? বাংলাদেশের প্রাক্তন সেনাপ্রধান এম হারুন-অর-রশীদের। তাঁর মৃত্যু ঘিরেই এখন যত শোরগোল পড়েছে পদ্মাপাড়ের রাজ্যে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ৭৭ বছর বয়সি এই প্রাক্তন সেনাপ্রধান একটি মামলায় হাজিরা দিতেই রবিবার চট্টগ্রামে পৌঁছন। সেখানে একটি ক্লাবের ৩০৮ নম্বর রুমে থাকছিলেন তিনি। কিন্তু সোমবার সকাল থেকেই তাঁর কোনও সাড়া শব্দ মেলে না। তখনই খোঝ নিতে যায় কর্তৃপক্ষ। দরজায় ধাক্কা দিলেও সাড়া মেলে না। তখন কর্তৃপক্ষ দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে পড়ে।
এরপরেই চক্ষু চড়কগাছ। বিছানাতেই অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় ওই প্রাক্তন সেনাপ্রধানকে। ডাকা হয় চিকিৎসকদের। তারাই এসে প্রাক্তন সেনাকর্তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। কিন্তু কীভাবেই বা মৃত্যু হল তাঁর? বন্ধ দরজার পিছনে রাতারাতি কী এমন ঘটল? প্রাক্তন সেনাপ্রধানের মৃত্যু ঘিরে ছড়িয়ে চাঞ্চল্য। তবে প্রাথমিকভাবে অনুমান, হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে মৃত্য়ু হয়েছে প্রাক্তন সেনাপ্রধানের। ইতিমধ্যে তাঁর দেহ পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তে।
এদিন বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোকে সেনাপ্রধানের এক পরিজন জানিয়েছেন, “তাঁর ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ ছিল। সেই কারণেই শরীর দুর্বলও থাকত।” এই সেনাকর্তার সময়কালটা ছিল বড়ই অল্প। ২০০০ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০০২ সালের জুন মাস পর্যন্ত বাংলাদেশের সেনাকর্তা ছিলেন তিনি। এরপর অবসর গ্রহণ করেন এম হারুন। পরবর্তীতে তাঁকে একাধিক দেশে রাষ্ট্রদূত করে পাঠায় বাংলাদেশ সরকার।
আরও পড়ুনঃ তুঙ্গে জল্পনা! পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা পাচ্ছে কাশ্মীর?
বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৬ সালে ডেসটিনি নামে একটি কোম্পানির প্রেসিডেন্ট পদে যোগ দেন তিনি। পরবর্তীতে এই কোম্পানির ছত্রছায়া আর্থিক নয়ছয় করার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। যার জেরে ২০১২ সালে তাঁকে গ্রেফতারও করে বাংলাদেশ পুলিশ। পরে অবশ্য জামিনও পেয়ে যান। কিন্তু ২০২২ সালে এক দুর্নীতি মামলায় চার বছরের কারাদণ্ড হয় তার। যদিও তিনি জেলের বাইরে ছিলেন। রবিবার তার চট্টগ্রামে যাওয়ার কারণও এই মামলা বলেই মনে করা হচ্ছে।