বামপন্থী কর্মীরা প্রতিটা বুথে থাকবে। একজনও বৈধ ভোটারের নাম বাদ দিতে দেবো না। সিইও দপ্তরের সামনে বিক্ষোভে বললেন সুজন চক্রবর্তী।
সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘প্রতিটা বুথে গড়ে ৩০-৫০ জন মৃত মানুষের নাম রয়েছে। কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাজার হাজার নাম বাদ দেওয়ার জন্য বার বার নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া হয়েছে। কমিশন তা বাদ দেয়নি তৃণমূলের স্বার্থে নাম গুলো রেখে দিয়েছে কমিশন।’’
তিনি আরও বলেন, ‘গতকাল সিইও’র বৈঠকে এমন কিছু কথা বলা হয়েছে আমাদের পক্ষ থেকে তাতে কেউ আপত্তি করেনি। বিধানসভার যে কোন বুথ থেকে বিএলএ হতে পারে। বিএলও এবং বিএলএদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে। আমাদের বিএলএদের বলবো তাদের গায়ে কোন হাত লাগাতে দেবো না। ২০০২ ছাড়াও ২০২৪ সহ আরও কয়েকটি ভোটার তালিকাকে এসআইআরের সাথে যুক্ত করতে হবে। মৃতদের নাম বাদ দেওয়ার জন্য প্রয়োজনে ডেথ রেজিস্টার ব্যবহার করতে হবে। মৃতদের এবং যারা অন্যত্র চলে গিয়েছে তাদের নাম বাদ দিতে হবে।’
আরও পড়ুনঃ এসআইআর আতঙ্কে দিনহাটায় আত্মহত্যার চেষ্টা! সুস্থতা কামনা তৃণমূল কংগ্রেসের সেকেন্ড ইন কমান্ডের
বিজেপি তৃণমূলকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর জাল সার্টিফিকেট রয়েছে। আর দেশের মানুষকে বলছে কাগজ দেখাতে। যারা গরীব মানুষ, প্রান্তিক মানুষ তাদের অনেকের কাছে সেই সব কাগজ নেই। কমিশন বলছে আধার কার্ড নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়। কমিশনকে কে অধিকার দিয়েছে নাগরিকত্ব ঠিক করার?’

সুজন চক্রবর্তী বলেন, মুসলিমদের বাদ দেওয়ার নাম করে বিজেপি যেই রাজনীতি করছে তাতে মতুয়া, গরীব মানুষ, আদিবাসী মানুষরা সঙ্কটের মুখে পড়বে। আসামে এনআরসিতে অধিকাংশ হিন্দুর নাম বাদ গিয়েছে। কেন এসআইআরের সময় সিএএ ক্যাম্প করছে? ওরা বলছে এসআইআরে নাম বাদ গেলে আমরা সিএএ দেবো। গরীব মানুষকে সঙ্কটের মুখে ফেলছে বিজেপি। আমাদের কথা এসআইআর এবং সিএএ একসাথে চলতে পারে না।
বামপন্থী দলগুলোর পক্ষ থেকে কমিশনের কাছে স্মারকলিপি দিতে গিয়েছেন বিমান বসু, ত্রিদিব ভট্টাচার্য, অভিজিৎ মজুমদার, স্বপন ব্যানার্জি, তপন হোর ও চন্ডীদাস ভট্টাচার্য।

সিপিআই(এম) সহ দশটি বামপন্থী দলের ডাকে নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তরের বাইরে বিক্ষোভ সভা হয়। বিমান বসুর নেতৃত্বে বামপন্থী দলসমূহের এক প্রতিনিধি দল রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে ডেপুটেশনের জন্য যায়। দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন তারা। এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো সদস্য শ্রীদীপ ভট্টাচার্য, আরএসপি রাজ্য সম্পাদক তপন হোড়, সিপিআই রাজ্য সম্পাদক স্বপন ব্যানার্জি, সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের রাজ্য সম্পাদক অভিজিৎ মজুমদার, এসইউসিআই(কমিউনিস্ট) দলের রাজ্য সম্পাদক চন্ডীদাস ভট্টাচার্য সহ নেতৃবৃন্দ।
আরও পড়ুনঃ নির্বাচনে নেই আওয়ামী লীগ সমর্থকেরা; হাসিনার ভোট বয়কটের ডাক
প্রায় এক ঘণ্টার বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, “ব্যাপারটা এমন দাঁড়াচ্ছে যেন বিজেপির কাজ নির্বাচন কমিশনের পক্ষে কথা বলা। আর তৃণমূলের কাজ নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে কথা বলা। নির্বাচন কমিশন নিজে বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য স্পষ্ট করছেনা বলে এই সংশয়ে ছড়াচ্ছে। কমিশনের পক্ষ থেকে লিখিত ভাবে কোনও বক্তব্ব্ব পেশ করা হলে আর কেউ বিভ্রন্তি ছড়াতে পারবে না।”
তিনি দৃঢ় ভাবে জানান যে কোনও বৈধ ভোটারের নাম না বাদ পড়ে তা নিশ্চিত করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। কমিশনে দেখা উচিত কোনও ভোটারের একাধিক জায়গায় যেন নাম না থাকে। মৃত ভোটার থেকে যায় বহু দিন। তাঁদের নাম বাদ দেওয়ার দায়িত্ব কমিশনের। এছাড়াও ১৮ বছর বয়সী ভোটারদের তালিকায় অন্তর ভুক্তি করতে হবে।বিমান বসু বলেন, “এসআইআর বর্তমানে মানুষের কাছে ত্রাসে পরিনত হয়েছে। মানুষকে সচেতন করে পরিছন্ন ভাবে কাজ করতে হবে। কোনও দলীয় স্বার্থের পক্ষে কাজ করা যাবে না। বিএলওদের দায়িত্ব অনুযায়ী কাজ করতে হবে।”





