গ্রামে গিয়ে গ্রামবাসীদের ওপর চড়াও হচ্ছেন তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী। বাদ যাননি তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যও। পালটা এলাকাবাসীর প্রতিরোধে পিছু হটলেন তৃণমূলের বাহুবলী নেতা। ভিডিয়ো সামনে আসতেই চাঞ্চল্য খানাকুলের পোল ১ পঞ্চায়েত এলাকায়। জানা গিয়েছে, খানাকুলের পোল ১ পঞ্চায়েতের সুলুট এলাকায় নিন্মমানের সামগ্রী দিয়ে পানীয়জলের পরিষেবা পৌঁছে দিতে জলপ্রকল্প( সাবমার্সেবল) তৈরি করা হচ্ছে, এই অভিযোগে কাজ বন্ধ করার দাবিতে সরব হন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনার খবর পেয়ে পঞ্চায়েত প্রধান সাবিনা খাতুনের স্বামী তথা এলাকার বাহুবলী তৃণমূল নেতা হাফিজুর রহমান ওরফে খোকন ঘটনাস্থলে গিয়ে গ্রামবাসীদের উপর চড়াও হন বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুনঃ হাই ভোল্টেজ ক্যামাক স্ট্রিট; জেলাওয়াড়ি বৈঠকে অভিষেক
শুধু গ্রামবাসীরাই নয়, ঠিকাদারের থেকে কাটমানি নিয়ে নিম্নমানের কাজ করাচ্ছেন পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী বলে অভিযোগে সরব ওই এলাকার তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য রাখিবুল ইসলামও। আর এরজন্য তার উপরেও চড়াও হয়ে তাঁকেও গালিগালাজ ও হুমকি দেয় পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
এদিকে গ্রামবাসীদের অভিযোগ, জলপ্রকল্পটি ১ লক্ষ ৭২হাজার টাকা ব্যয়ে তৈরি করা হচ্ছে কিন্তু এলাকার মানুষের প্রয়োজনের কথা না শুনে অত্যন্ত নিন্মমানের সামগ্রী দিয়ে তা তৈরি করছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। আর এনিয়ে গ্রামবাসীরা প্রতিবাদ করায় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার পঞ্চায়েত প্রধানের সাবিনা খাতুনের স্বামী হাফিজুল রহমান খাঁ ওরফের খোকনের নির্দেশমতো কাজ হবে বলে গ্রামবাসীদের জানিয়ে দেন।
আর এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে কাজ বন্ধ করতে বলেন গ্রামের মানুষ। তখনই এলাকায় পৌঁছন এলাকার বাহুবলী তৃণমূল নেতা খোকন। প্রকাশ্যেই এলাকাবাসীদের উপর চড়াও হন বলে অভিযোগ। এদিকে সেই ভিডিয়ো সামনে আসতেই রীতিমতো শোরগোল পড়েছে এলাকায়। ঘটনার তীব্র নিন্দা করে সরব হয়েছে বিজেপি।
আরও পড়ুনঃ “এর থেকে তো জেনারেল ট্রেনই ভাল ছিল…”, ‘দমবন্ধ’ পরিস্থিতিতে বনগাঁ AC লোকালের যাত্রীরা
যদিও ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত ওই তৃণমূল নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে ঘটনা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন আরামবাগ জেলা তৃণমুল সভাপতি রামেন্দু সিংহ রায়। অভিযোগকারী তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য রাখিবুল ইসলাম বলেন, “কাদার মধ্যে দুই ইঞ্চি বালি দিয়েছে। সোজাসাপটা ঢালাই করে দিচ্ছে। পাড়ার লোকরাই আটকান। কারণ একটু জল হলেই এই এলাকা ডুবে যায়।”
যদিও বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা। বিজেপি নেতা ধর্মদার বৌরী বলেন, “পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামীর বিরুদ্ধে গ্রামের একটা অংশের ক্ষোভ ছিল। নিম্নমানের কাজের জন্য দেখা গেল ওদেরই দলের মেম্বার চড়াও হন। তৃণমূল তৃণমূলকে মারছে কাটমানির জন্য।”
যদিও আরামবাগ জেলা তৃণমূল সভাপতি রামেন্দু সিংহ রায়ের সাফাই, “প্রধান হোক, কিংবা প্রধানের স্বামী হোক, কিংবা সদস্যই হোক, সকলের উচিত মানুষের সঙ্গে ভদ্রব্যবহার করা। এরকম কোনও ব্যবহার করলে, নিশ্চই দল থেকে পদক্ষেপ করা হবে।”