সৌমেন দত্ত, কোচবিহার:
কোচবিহার পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে গরহাজির অধিকাংশ কাউন্সিলার। অনুপস্থিতদের তালিকায় তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলারের সংখ্যাটাই বেশি। পুর প্রতিনিধিদের গরহাজিরার আশঙ্কা ছিল আগেই। বেশ কিছু কাউন্সিলারকে বাড়িতে গাড়ি পাঠিয়ে বোর্ড মিটিংয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। শেষমেশ ৯ জন কাউন্সিলারের (৭ জন তৃণমূল কাউন্সিলার, ২ জন বাম কাউন্সিলার) উপস্থিতিটির বোর্ড মিটিং হয়। বাজেট পাশ হয়। পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, কে কেন আসছে না, তার কারণ সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলাররাই বলতে পারবেন।
বাজেট ও বোর্ড মিটিং করতে বুধবার কার্যত নজিরবিহীন দৃশ্য দেখা যায় কোচবিহার পুরসভায়। বোর্ডে ‘কোরাম’ করতে ৫ জন তৃণমূল কাউন্সিলার বাড়ি থেকে পুরসভা থেকে পাঠানো গাড়িতে করে আসেন। তারপর শুরু হয় ২০২৫-২৬ আর্থিক বর্ষের বাজেট অধিবেশন।
আরও পড়ুন: মমতার পছন্দের রং, সিপিএমের ‘ডিপি’ থেকে উধাও লাল; ‘মহাশূন্যে কাস্তে-হাতুড়ি’
বোর্ড মিটিং শেষে কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘মিটিং শেষে বাজেট পাশ হয়েছে ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের। তবে কে কেন আসেনি, সেটা আমার জানা নেই।’ উল্লেখ্য, কোচবিহার পুরসভায় সব মিলিয়ে ২০ জন কাউন্সিলর রয়েছেন। তার মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলর রয়েছেন ১৮ জন। বামেদের কাউন্সিলর রয়েছেন ২ জন। তৃণমূল কংগ্রেসের কোচবিহার জেলা সভাপতি তথা কাউন্সিলার অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, ‘ভোটার তালিকা সংশোধনী কাজে ব্যস্ত ছিলাম, তাই যেতে পারিনি। অন্যান্য কাউন্সিলররা কেন যাননি সে বিষয়ে খোঁজ নেব।’
পুরসভা সূত্রে খবর, পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষের সঙ্গে কাউন্সিলরদের একাংশের দীর্ঘদিন ধরেই সমস্যা চলছে। কোচবিহার পুরসভায় পর পর তিন মাস বোর্ড মিটিং না হওয়ায় একাধিক উন্নয়নমূলক কাজ এবং বেশ কিছু সিদ্ধান্ত আটকে রয়েছে। কাউন্সিলরদের অনেকেই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বেঁকে বসে রয়েছেন বলে একাংশের দাবি। তাই কোরাম যদি না হয়, সেই আশঙ্কাতেই গোটা জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে বোর্ড মিটিং ডাকেন নি চেয়ারম্যান।
আরও পড়ুন: রাজবাড়ির পিছনে আবর্জনার পাহাড়! বেআইনি ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরির অভিযোগ
গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর কোচবিহার পুরসভায় শেষবার বোর্ড মিটিং হয়েছিল। পরবর্তীকালে বেশ কিছু কাউন্সিলর তলে তলে একজোট হয়েছিলেন। এই খবর চেয়ারম্যানের কানে পৌঁছতেই ‘কোরাম’ হবে না ধরে নিয়ে ৩১ জানুয়ারি তিনি বোর্ড মিটিং বাতিল করে দেন। এরপর গোটা ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাস শেষ হতে চললেও বোর্ড মিটিং না হওয়ায় নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। অবশেষে বুধবার তিন মাস পর বোর্ড মিটিং ডাকা হয়।