“ধনতেরাস” মানে কেনাকাটার মিছিল নয়। সোনা রুপো ঘটি বাটি হাতা চামচ কেনবার মরসুম নয়। মরচে ধরা সমাজ সর্বত্র ভেঙচি কাটছে। দুর্গাপুজো এখন আর শাস্ত্রীয় নয়, ধর্মীয় নয়। কর্পোরেট।
ত্রাসের মতো চেপে ধরেছে যে “উৎসব ” তার নাম “ধনতেরাস”। ব্যবসায়ীরা ফাঁদ পেতেছে। সেই ফাঁদ ফাঁস হয়ে চেপে বসেছে আমাদের গলায়। সাড়ে পাঁচ হাজার বছরের বিজ্ঞানময় সত্য যিনি বলতে যাবেন তাঁকে বলা হবে ভণ্ড।
আরও পড়ুনঃ ছোট্ট মেয়ের স্বপ্নাদেশে শুরু, চাঁদুনি মায়ের ইতিহাস শুনলে গায়ে কাঁটা দেবে
ধন ত্রয়োদশী = ধনতেরস। এই ধন হল “জীবনধন”। সুস্হ থাকবার সাধনা। রোগ থেকে আরোগ্যে যাওয়ার উপাসনা। ঈশ্বর “ধন্বন্তরী” র আরাধনার দিনই ধন্বন্তরী ত্রয়োদশী। তাকে আমরা কেনাকাটার মিছিলে পরিণত করেছি। আজ প্রদীপ জ্বালান, প্রার্থনা করুন । শ্রীঅংশুমন্-ধন্বন্তরীকে…বলুন “মনের অন্ধকার দূর করো, রোগহীন আরোগ্যের অমৃতময় জীবনের অধিকারী করো, আলো দাও, দাও আয়ু।” এই ফলপ্রাপ্তি হলেই আপনাদের ঐশ্বর্য প্রাপ্তি ঘটবে। সবাই তো জানেন “রোগ” অর্থনাশ করে, জীবননাশ করে। গহনা রত্ন বাসনপত্র কখনো জীবনের সেরা প্রাপ্তি হতে পারে না।
কার্তিক মাস আসছে। একে বলা হয় যম-মাস। আকাশদীপ জ্বালান হয়। যম দুয়ারে কাঁটা দিয়ে আমরা ভাইবোনের আয়ু দাবি করি। বায়ুমণ্ডল থেকে ওস্ নামছে মাথার ওপর। ঋতুসন্ধিতে সাবধানে থাকাই বিধি। নাহলে জীবনহানি। রবিগ্রহকে বলা হয় আত্মকারক। সূর্য প্রাণের প্রতীক। এ মাসে সূর্য নীচস্হ হয়ে থাকে। তাই রোগের প্রকোপ বাড়ে। সেকারণেই “ধনতেরস” উদযাপনের মধ্যদিয়ে আয়ুআরোগ্যকে নিশ্চিত করে জীবনকে অমৃতময় করে তুলতে বলা হয়েছে ।
আমরা তা ভুলে গিয়ে ব্যবসায়ীদের হাতে আমাদের চেতনাকে বন্ধক দিয়ে প্রার্থনার দিনটিকে পণ্যের দিন বানিয়ে ফেলেছি। হে শ্রীঅংশুমন্ -ধন্বন্তরী তুমি আমাদের ক্ষমা করো। এত যে ব্যাধি আমাদের প্রতিনিয়ত গ্রাস করছে। ডেঙ্গি ক্যানসার আলসার এক ভয়াবহ জীবনহানি ডেকে আনছেl
আরও পড়ুনঃ স্বমহিমায় ‘কেষ্ট’, ফের জেগে উঠছে ৫৭০ ভরির! বোলপুরে কেষ্টর কালী আরাধনা
ধনতেরস কী ?
মনুষ্য জীবনে সব থেকে বড় সম্পদ সাস্থ্য।
ধনতেরস সোনার গয়না নয়, আয়ুর্বেদ ঔষধ কেনার দিন।
ধন্বন্তরী একজন হিন্দু আয়ুর্বেদ দেবতা। তাঁর প্রচারেই আয়ুর্বেদ আমাদের দেশে এত প্রসিদ্ধ। তাই আয়ুর্বেদ ও মহৌষধের কথা উঠলেই বলা হয় ধন্বন্তরীর নাম। তিনি ত্রয়োদশী তিথিতে জন্ম গ্রহণ করেন, তাই তখন থেকেই আয়ুর্বেদ প্রেমিকরা তাঁর জন্ম তিথি ধন্বন্তরী ত্রয়োদশী হিসাবে পালন করে। হিন্দিতে এটাকে ধন্বন্তরী তেরস বা সংক্ষেপে ধনতেরস বলে। এর সাথে ধন বা অর্থের কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা এতটাই মূর্খ। আর ব্যবসায়ীরা আমাদের এই মুর্খামিকেই মূলধন করে ব্যবসা করছে।
ধন্বন্তরী জন্মেছিলেন ত্রয়োদশী তিথির শেষ লগ্নে। চতুর্দশীর শুরুতে। তাই ধন্বন্তরীর মতো আয়ুর্বেদাচার্য কে মর্যাদা দিয়ে চতুর্দশী তিথিতে বিশেষ চোদ্দটি পুষ্টি গুণযুক্ত শাক খেয়ে আপনার শরীরে এই শীতের শুরুতে প্রাকৃতিক ভ্যাক্সিন প্রবেশ করান।





