“বিসর্জন”
সৌমেন মুখোপাধ্যায়
কিছুক্ষণ হাঁটার পর তারা একটা গোলদারী দোকান দেখতে পায়। সেই দোকানে তারা একটা কাজের জন্য ঢুকে পড়ে, দোকানে ঢুকে দেখে শেঠ- সাদা রঙের ধুতি পাঞ্জাবী পরে কালো কোট গায়ে নিয়ে মাথায় সাদা রঙের টুপি পরে দামী চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে হিসাব নিকেস করছে।
দোকানের সমস্ত কর্মচারীরা যে যার কাজ করে যাচ্ছে। কেউ দাড়িপাল্লায় ওজন মাপছে আবার কেউ জিনিসপত্র স্থানান্তরিত করছে।
অনিল শেঠের সামনে এসে বলে, “শেঠজী এখানে আমার জন্য একটা কাজ পাওয়া যাবে।”
আরও পড়ুন: Forest Depertment: আপাতত কোন হোটেল এবং রেস্টুরেন্ট খুলে রাখা যাবে না
অনিলের কথা শেঠের কানে ঢুকেছে কিনা সন্দেহ। তাই দ্বিতীয়বার বলতে যাবে এমনসময় শেঠ হঠাৎ রেগে গিয়ে এক কর্মচারীকে কাছে ডাকে, তাকে হিন্দী ভাষায় নানারকম ধমক দেয়, কর্মচারীর অবস্থা কাঁদো কাঁদো । ভয়ে ভয়ে আবার নিজের জায়গাতে গিয়ে সে কাজ করতে থাকে। এইসব কান্ড দেখে শিউলী অনিলের একটা হাত ধরে বলে, “চলো, আর কাজ চেয়ে লাভ নেই। আমরা কলের জল খেয়ে পেট ভরাবো।”
“ঠিক বলেছো, চলো।” এই বলে দুজনে দোকান থেকে বেরিয়ে যাবে এমনসময় শেঠজী তার হিন্দী ভাষায় বলে উঠে, “কিয়া চায়তি হো।”
আরও পড়ুন: এন বি এস টি সি-র নয়া উদ্যোগ অতি সহজেই এনজিপি থেকে পাহাড়ে যেতে পারবেন পর্যটকেরা
অনিল একটু আধটু হিন্দী জানত, তাই সে হিন্দীতে উত্তর দেয়, “কুছ নেহি শেঠজী।” এই বলে তাড়াতাড়ি দোকান থেকে দুজনে বেরিয়ে রাস্তায় নামে।
রাস্তায় দুজনে অনেকক্ষণ হাঁটার পর শিউলী অনিলকে বলে, “এবার আমরা কোথায় যাবো, আমাদের যাবার আর কোন রাস্তা নেই। ”
“তুমি অত চিন্তা করছো কেন? কিছু না কিছু একটা ব্যবস্থা হয়ে যাবে।”
“তাহলে চলো না আবার আমরা বাড়ী ফিরে যায়।”
শিউলীর এই কথা শুনে অনিল বলে, “যে বাড়ী আমরা সারাজীবনের জন্য ছেড়ে এসেছি আবার সেইখানে ফিরে যেতে তুমিই বলছো। না না শিউলী তা হয় না।”
“তাহলে কি করবে?”
“দেখি কিছু তো একটা ব্যবস্থা করতে হবে।”
হাটতে হাটতে দুজনে একটা রেল স্টেশনে এসে হাজির হয়।