কখনো ছাত্র রাজ্য সন্মেলন, কখনো শ্রমিকদের দাবিতে মিছিল মিটিং, আবার কেরল থেকে নেতা এসে মৌলালি যুব কেন্দ্রে আলোচনা, ভিষন ব্যাস্ত বামেদের গুরুত্বপূর্ণ শরিক আর এস পি। কিন্তু চরম বিপদের দিনে হুগলীর খানাকুলের মানুষ পাশে পেলোনা বাম শরিক আর এস পি কে। অথচ খানাকুলের মানুষ আর এস পির বিভিন্ন মিটিং মিছিলে অংশগ্রহণ করে থাকে। কিন্তু মানুষের বিপদে, পাশে দাঁড়াতেই পারলোনা আর এস পি।
ঘটনাটা এবার একটু খোলসা করে বলা যাক। গত চব্বিশ ঘন্টা ধরে খানাকুলের গ্রামীণ হাসপাতালের মানুষ অন্ধকারকে সঙ্গী করে টর্চ, মোমবাতি জ্বালিয়ে বসে রয়েছে। চব্বিশ ঘন্টা ধরে সেখানে বিদ্যুৎ নেই। পরিস্থতিকে সামাল দেওয়ার জন্য জেনারেটরের ব্যাবস্থা করা হয়নি। পাশের বেডে যে আরও একটি রোগী শুয়ে আছে টর্চ ছাড়া তাও টের পাওয়া অসম্ভব। এ নিয়ে খানাকুলের রাজনীতির জল বহুদূর গড়িয়েছে। খানাকুলের বিজেপি বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ দাবি করেছিলেন, এই গ্রামীণ হাসপাতালে তিনি একটি ৬৩ কেভির জেনারেটার দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তৃণমূলের লোকজন তা লাগাতে দেয়নি। তিনি আরো বলেন ‘আমার ফান্ডের টাকাতেই ওরা আমাকে কাজ করতে দিচ্ছে না। প্রতিদিন অন্ধকারে ডুবে থাকে হাসপাতালটা। রোগীর ইঞ্জেকশন দেবে কিন্তু হাতে না পায়ে তা ওরা ঠাওর করতে পারছে না’। বিজেপি বিধায়কের এই অভিযোগ অবশ্য নস্যাৎ করেছে স্থানীয় তৃণমূলের নেতারা।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে বিস্ফোরণ! দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে শান্তিবৈঠক চলাকালীন হামলায় কমপক্ষে সাত জন নিহত, আহত ১৭
আজ সকাল প্রায় সাড়ে এগারোটা নাগাদ ফোন করা হয় স্থানীয় এক আর এস পি নেতাকে। যদিও তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি। পরে আর এস পি-এর হুগলী জেলার শীর্ষ নেতৃত্বর সাথে বঙ্গবার্তার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়। শীর্ষ নেতৃত্ব বঙ্গবার্তাকে বলেন, তিনিও বিষয়টি জানেন। কিন্তু তাঁর কিছুই করার নেই। গত কয়েকদিন ধরেই দলের কর্মীরা দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে ব্যাস্ত ছিলো, কলকাতায় দলের কর্মীদের যাতায়াত করতে হয়েছে। বর্তমানে সবাই নিজের কাজে ব্যাস্ত।
বিভিন্ন সময়ে এলাকার মানুষকে সাথে নিয়ে খানাকুলের আন্দোলন করতে দেখা গেছে আর এস পি-কে। কিন্তু এই ব্যাপারে শীর্ষ নেতৃত্ব নিরব থেকে গেলেন হাসপাতালে চিকিৎসারত অন্ধকারে ডুবে থাকা গ্রামের দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়াতেই পারলেন না। অথচ দলীয় কর্মসূচীতে যোগ দিতে কলকাতায় আসতে পারলেন। অথচ, খানাকুলের বন্যার সময় সব রাজনৈতিক দলকে পিছনে ফেলে এই আর এস পি মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। দাঁড়িয়ে ছিলো বিভিন্ন সময়ে। কিন্তু আজ কি এমন হলো খানাকুলের মানুষের এই চরম বিপদের সময় আর এস পি মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারলো না।
আরও পড়ুন: মৃত্যুর পরেও আরজি করে নির্যাতিতার মোবাইল ফোন ব্যবহার করা হয়েছে! আদালতে লিখিত ভাবে দাবি পরিবারের
এইসব কারণেই কি বামেরা আজ দিনের পর দিন শূন্য! ত্রিদিব চৌধুরীর হাতে তৈরী হয়া দলটা আজ করুণ অবস্থায় রয়েছে। রয়েছে শুধুমাত্র স্যোসাল মাধ্যমের ফেসবুকে। মানুষের পাশে দৌড়ে যাচ্ছে গুটিকয়েক আর এস পি-এর যুব ছাত্র নেতারা। বাকিরা খাতাকলমে, দলীয় কর্মসূচী ও স্যোসাল মাধ্যমেই ব্যাস্ত।