যুদ্ধের চারদিনের মধ্যেই ইরানের রাজধানী তেহরানের এয়ারস্পেস সম্পূর্ণভাবে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে বলে দাবি করল ইজরায়েল। ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স বা আইডিএফের প্রধান মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার এফি ডাফরিনের বক্তব্য, তেহরানের আকাশ সম্পূর্ণভাবে ইজরায়েলি বায়ুসেনার হামলার পাল্লার ভিতরে। তিনি আরও জানিয়েছেন, ইরানের ব্যালিস্টিক মিসাইল লঞ্চারের এক তৃতীয়াংশই ধ্বংস করে ফেলেছে ইজরায়েলি সেনা। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে অন্তত ১২০টি ব্যালিস্টিক মিসাইল লঞ্চার। যেগুলি সম্পূর্ণ নষ্ট হয়নি, সেই সব লঞ্চারের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ইজরায়েলি বায়ুসেনার হামলায় নষ্ট হয়ে গেছে বলে দাবি করেছেনা তিনি। জানিয়েছেন, ইজরায়েলি বায়ুসেনা নতুন করে মধ্য ইরানের ইসফাহানে ১০০টি টার্গেটে অভিযান চালিয়েছে।
আরও পড়ুন: ইউটিউব দেখে ট্রেনিং, NEET পরীক্ষায় বিরাট সাফল্য পেলেন সুন্দরবনের এই রিক্সাচালকের মেয়ে
তেল অভিভ লক্ষ্য করে রবিবার রাত ও সোমবার সকাল মিলিয়ে প্রায় ৬৫টি ব্যালিস্টিক মিসাইল হামলা চালায় ইরান। হামলা হয় ড্রোনের মাধ্যমেও। হামলায় আটজনের মৃত্যু হয়েছে, সাংবাদিক বৈঠকে দাবি আইডিএফের। যদিও ইরান নাকি দ্বিগুণ শক্তিতে হামলা করতে চেয়েছিল, কিন্তু ইজরায়েলি বায়ুসেনা হামলার আগেই অন্তত ২০টি ব্যালিস্টিক মিসাইলকে ইরানের আকাশেই ধ্বংস করে দিয়েছে। ইজরায়েলি বায়ুসেনার ৫০টি যুদ্ধবিমান ও ড্রোন, ইরানের মিসাইল স্টোরেজ, কমান্ড সেন্টার ও লঞ্চার ধ্বংস করে ফেলেছে বলে দাবি আইডিএফের। রাজধানী সহ গুরুত্বপূর্ণ ইজরায়েলি শহরগুলিকে লক্ষ্য করে ইরান যে ব্যালিস্টিক মিসাইলের বর্ষণ করতে চেয়েছিল, সেটা স্পষ্ট আইডিএফ মুখপাত্রের কথাতেই। তাঁর দাবি, ইজরায়েলি মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম দিনরাত এক করে ইরানি মিসাইলকে আটকাচ্ছে। পাল্টা ইরানের সেনার দাবি, ইজরায়েলি হামলার ২০ ঘণ্টার মধ্যেই তেহরান এমন জবাব দিয়েছে যা ইজরায়েল ও তার মিত্রদেশগুলির কাছে দুঃস্বপ্নের মতো।
আরও পড়ুন: মুখ থুবড়ে পড়ল Reliance Jio! উড়ে গেল Network
বস্তুত, অপারেশন ‘ট্রু প্রমিস ৩’-তে ইসলামিক রেভোলিউশন গার্ডস কর্পস বা আইআরজিসি লং রেঞ্জ ব্যালিস্টিক মিসাইল ছাড়াও ইজরায়েলি মাটিতে প্রত্যাঘাত করতে ‘আরাশ‘-এর মতো নয়া ড্রোন নামায়। ইরানের ডেপুটি কমান্ডার ফর পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ারস ব্রিগেডিয়ার ইয়াদোল্লাহ জাভানি সোমবার এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ইজরায়েল ভেবেছিল প্রথমে হামলা চালিয়ে ইরানের প্রতিরক্ষা ও হামলাকারী মিসাইলগুলিকে ওরা নষ্ট করে ফেলতে পেরেছে। ওরা জানত আমরা পাল্টা অভিযান চালাবোই। শত্রুর যাবতীয় এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম চালু ছিল। কিন্তু ট্রু প্রমিস ৩ ওদের কাঁপিয়ে দিয়েছে। শত্রুরা ভাবতেও পারেনি ইরান এত বড় ধ্বংসলীলা চালাবে।’ ইরানি সেনার দাবি, তেহরানের প্রত্যাঘাত শুধু ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রীকেই নাড়িয়ে দেয়নি, চিন্তায় ফেলে দিয়েছে খোদ ডোনাল্ড ট্রাম্পেকেও। ইরানের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘেই অভিযোগ করেছেন, মার্কিন অস্ত্রে বলীয়ান হয়ে তেহরানে আক্রমণ করেছে তেল অভিভ। যে হামলায় ইরানের সেনার শীর্ষকর্তা, পরমাণু বিজ্ঞানী সহ সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মৃত্যুর জন্য ওয়াশিংটনকে দায়ী করেছে ইরান। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের সঙ্গে কোনওরকম আলোচনা নয়, সাফ জানিয়ে দিয়েছে তেহরান।