টিউশন পড়তে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরোলেও আর ফেরেনি খুদে ছাত্র। নিখোঁজ বালককে সারারাত ধরে হন্যে হয়ে খুঁজলেও তার হদিশ না পাওয়ায় কান্নায় ভেঙে পড়ে পরিবার। কয়েক ঘণ্টা পর বাড়ির পাশে নিজেদেরই এক গোডাউনের ভিতর বাঁশের মাচায় রাখা টিনের বাক্সের ভিতর থেকে অচৈতন্য অবস্থায় তাকে উদ্ধার করল কালনা থানার পুলিশ। তাকে বৃহস্পতিবার কালনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসায় ইতিবাচক সাড়া মিলেছে বলে জানা গিয়েছে। পুলিশি বালককে এদিন সময়ে উদ্ধার করতে না পারলে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত বলে মনে করছেন সকলেই। কিন্তু টিনের বাক্সে লুকোলো কেন? পড়ার চাপে? উত্তর খুঁজছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কালনা ২ ব্লকের অকালপৌষ পঞ্চায়েতের কুলেপাড়ার বাসিন্দা ৯ বছর বয়সি ওই ছাত্র স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। বুধবার সন্ধ্যায় পাশের পাড়ায় টিউশন পড়তে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় সে। বৃষ্টির কারণে সেদিন আর সে সাইকেল নিয়ে যায়নি। অনেক রাত হয়ে গেলেও সে আর বাড়ি পেরেনি। চিন্তিত হয়ে পড়েন তার মা-বাবা। গৃহশিক্ষকের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ওই বালক পড়তে যায়নি। এমনই এক অবস্থায় সারারাত ধরে স্থানীয় মানুষজন ও আত্মীয়স্বজন বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ চালায়। কোথাও খুঁজে না পেয়ে ওই রাতেই তার পরিবার কালনা থানা পুলিশের দ্বারস্থ হন। পুলিশ ঘটনার তদন্তে নামে। বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ির আশপাশ-সহ পাশে থাকা ফল রাখার গোডাউনেও খোঁজ চালানো হয়। সেখানে তার জুতো দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়। তন্নতন্ন করে সেখানে খুঁজতে গিয়ে আট-দশফুট উঁচুতে থাকা একটি মাচার উপর টিনের বাক্স দেখতে পায় পুলিশ। তা খুলতেই চক্ষুচড়কগাছ।
আরও পড়ুনঃ ‘বাঙালিদের উপর অত্যাচারে আপত্তি থাকবেই’, ‘প্রতীচী’তে সরব অমর্ত্য
বাক্সের ভিতর থেকে বালককে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এরপরই তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসার পর জ্ঞান ফিরতেই সে তার পরিবারকে ঘটনার কথা খুলে বলে। বালকের বাবা বলেন, “ছেলে জানায়, ও নিজেই বাক্সের মধ্যে ঢুকেছে। পড়তে যাওয়ার পথে একটি বাঁশবাগান রয়েছে। সেখানে কিছু একটা দেখে ছেলে ভয় পায়। তারপর বাঁশের উপর উঠে ওই বাক্সের ভিতর ঢুকে পড়ে। পুলিশের জন্যই ছেলেকে ফিরে পেলাম।” পুলিশকেও একই ঘটনার কথা জানায় ওই পড়ুয়া। পুলিশ জানতে পারে আগের দিনও ওই পড়ুয়া টিউশনিতে পড়তে যায়নি। তবে এই ঘটনার পিছনে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে কিনা পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে।