কুশল দাশগুপ্ত, শিলিগুড়িঃ
কথায় বলে, ‘ভাই ভাই ঠাঁই নাই’। বাস্তবে যেন সেটাই হচ্ছে। দুই ভাইয়ের বিরোধের জেরে এবার শিলিগুড়ির অন্যতম বড় গণেশপুজোয় ফাটল ধরেছে। বিধান মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির ভোটই এর পিছনে বলে মনে করা হচ্ছে। মূলত এই ভোটের দুটি প্যানেলই এবার আলাদা দুটি গণেশপুজোয় বিভক্ত হয়ে গিয়েছে। যা নিয়ে শহরে বেশ চর্চাও রয়েছে। দুই ভাই সুব্রত সাহা এবং বাপি সাহা ভেদাভেদের বিষয়টি অকপটে স্বীকারও করে নিয়েছেন। আর দুই ভাইয়ের এই রেষারেষির ফলস্বরূপ শহর এবার আরও একটি বড় গণেশপুজো উপহার পেতে চলেছে।
আরও পড়ুনঃ ‘ফ্রিডম অফার’! JIO-ও পারেনি, করে দেখাল BSNL; আনলিমিটেড কলিং, ২ জিবি ডেটা-সব পাবেন মাত্র ১ টাকায়!
২০০৭ সাল থেকে শিলিগুড়ির বিধান রোডের পুরোনো বাসস্ট্যান্ডে বিগ বাজেটের গণেশপুজো হয়। শিলিগুড়ি গণেশপুজো কমিটি নামে এই পুজো মূলত সুব্রত সাহার (কালা) পুজো হিসেবেই পরিচিত। যদিও তাঁর ভাই বাপি সাহা বলেছেন, ‘আমি পুনেতে এভাবে গণেশপুজো দেখে এসে কয়েকজন বন্ধু, ব্যবসায়ীকে নিয়ে ২০০৭ সালে এই পুজো শুরু করি। পরবর্তীতে দাদাকে (সুব্রত) এই পুজোয় যুক্ত করা হয়েছিল।’ দাদা-ভাই এক পুজোয় যুক্ত হওয়ার পর থেকে এই পুজোর জৌলুস আরও বৃদ্ধি পায়। দীর্ঘ ১৮ বছর পরে সুব্রত এবার এই পুজো থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন। তিনি বিধান মার্কেটের কয়েকজন ব্যবসায়ীকে নিয়ে এবার কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের মেলা ময়দানে শিলিগুড়ি গ্রেটার শ্রীশ্রী গণেশপুজো নাম দিয়ে আলাদা পুজোর আয়োজন করছেন। সুব্রত নিজেই এই পুজো কমিটির সম্পাদক।
কিন্তু কেন এই বিরোধ? ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিধান মার্কেটের ব্যবসায়ী সমিতির ভোটকে ঘিরে বিরোধের সূত্রপাত। এবারের ভোটে সুব্রত কিছু ব্যবসায়ীকে নিয়ে একটি প্যানেল তৈরি করে লড়েছেন। অন্যদিকে, তাঁর ভাই বাপি আলাদা প্যানেলে ভোটের ময়দানে নেমেছিলেন। ভোটের ফলাফলে বাপির প্যানেলই ব্যবসায়ী সমিতির ক্ষমতা দখল করেছে। এর পর থেকেই দুই ভাইয়ের বিরোধ আরও তীব্র হয়েছে। ব্যবসায়ী সমিতির ভোটের পর থেকেই বাপি নিজের অনুগামী ব্যবসায়ীদের নিয়ে পুরোনো গণেশপুজোর আয়োজনে ব্যস্ত হয়েছেন। রাগে সুব্রত ওই পুজো থেকে বেরিয়ে এসে আলাদাভাবে পুজো সারার সিদ্ধান্ত নেন।
আরও পড়ুনঃ তালিকায় নেই তৃণমূল, সব দলকে আহ্বান; ৯ অগস্ট নবান্ন অভিযানের ডাক দিলেন তিলোত্তমার মা-বাবা
সুব্রতর কথায়, ‘আমি দীর্ঘদিন শিলিগুড়ি গণেশপুজো কমিটির সম্পাদক ছিলাম। কিন্তু আমাকে অন্ধকারে রেখে আমার ভাই আলাদাভাবে পুজো নিয়ে মিটিং করে সমস্ত সিদ্ধান্ত নিচ্ছিল। এটা আমার ভালো লাগছিল না। তাই এবার ওই পুজো থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিধান মার্কেটের বেশ কিছু ব্যবসায়ী এবং আমাদের প্যানেলে থাকা প্রার্থীরা বেরিয়ে এসে আমার পাশে দাঁড়িয়েছে। আমরা সবাই মিলেই আলাদাভাবে স্টেডিয়ামের মেলা ময়দানে পুজো করছি। শিলিগুড়ি গণেশপুজো কমিটির পুজোর তুলনায় আমরা আরও বিগ বাজেটের পুজো করব।’
পুরোনো বাসস্ট্যান্ডে বিগ বাজেটের গণেশপুজো শহরের অন্যতম বড় আকর্ষণ। নতুন পুজোর সুবাদে গর্ব করার মতো কিছু পেলে তা উপরি পাওনা হবে বলে কেউ কেউ মনে করছেন।