সেল, সেল, সেল– জামাই চাই, জামাই? রাস্তায় দাঁড়িয়ে হাঁক দিচ্ছেন তিন যুবক। পরনে নতুন পাঞ্জাবি-পাজামা। হাতে ছোট মাছ আর ছোট্ট দইয়ের ভাড়। মাথায় আবার শোলার মুকুট। সকাল সকাল তিন যুবকের এই বেশ দেখে হতবার বাজারে আগত লোকজন। মুহূর্তেই জমে গেল ভিড়। আর ভিড় দেখে আরও জোরে হাঁক-ডাক শুরু করে দিল তিন যুবক। সকলের কাছেই জামাই ভাড়া নেওয়ার আবেদন। তাঁদের সাফ কথা, জামাইষষ্ঠীর খরচ কমাতে তাঁদের জুড়ি মেলা ভাড়। ইচ্ছুক শ্বাশুড়িদের আশ্বস্ত করে তাঁরা জানাচ্ছেন, আটশো টাকা কেজি খাসির মাংস লাগবে না। পুঁটি মাছের ঝাল, নিরামিষ ভাতেও তাঁরা রাজি। শুধু জামাই হিসাবে নিয়ে যেতে হবে ভাড়ায়।
আরও পড়ুন: দাদার ‘অনুপ্রেরণায়’ এবার আসরে তৃণমূল ছাত্রনেতা; ফের বোলপুরের আইসিকে আক্রমণ
এদিন বর্ধমানের গুশকরা শহরের হাটতলা থেকে বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে জামাই চাই, জামাই চাই হাঁক দিতে থাকেন শুভজিৎ পাত্র, রোহন সাঁতরা, সোমনাথ পালিত নামে ওই তিন যুবককে। তিনজনেরই বাড়ি আশপাশেই। তাঁদের কাণ্ডকারখানা দেখে হাসিতে গড়াগড়ি বাজারভর্তি লোকজনের। খবর চাউর হতেই ভাড়ায় খাটা জামাই দেখতে এক্কেবারে মেলা বসে যায় বাজারে। যুবকদের কীর্তি দেখে টোটোয় বসে থাকা এক মহিলা তো হাসিমুখে বলে উঠলেন, বাবা জামাই তো লাগবে না। মাছটা দিতে পারো। মাছ লাগবে। তা শুনে অন্যরা ততক্ষণে হাসিতে এক্কেবারে লুটোপুটি খাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: উত্তাল চন্দননগর! ১৫ বছরের নাবালিকাকে যৌন হেনস্থা
ভাড়াটে জামাইদের সঙ্গে কথা বলতেই আবার তাঁদের এই কাণ্ডকারখানার পিছনে জানা গেল তাঁদের দুঃখের কথা। শুভজিৎ, রোহন, সোমনাথরা বলছেন, দশ বছর ধরে লাগাতার চেষ্টা করেও তাঁদের জীবনে বিয়ের ফুল ফোটেনি। কিন্তু তাতে আক্ষেপ নেই। জামাইষষ্ঠীতে নিছক মজা করে মানুষের মুখে হাসি ফোটাতেই তাঁদের এই বেশ। সে কারণেই পাঞ্জাবি পরে মাছ হাতে ঘুরছেন বাজারে।