বিলাসবহুল গাড়ির শখ। তেমনই এক গাড়িতে করে সব সময় ঘুরে বেড়াতেন। সেই গাড়ি ঘিরে থাকত তাঁর সশস্ত্র বাহিনী! পাকিস্তান সেনার অনেক আধিকারিকের সঙ্গেও তাঁর নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। নাম সইফুল্লা খালিদ ওরফে সইফুল্লা কাসুরি। মুখভর্তি দাঁড়ি। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, মঙ্গলবার পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলার মূল চক্রী সইফুল্লাই। তাঁর নির্দেশেই, পাঁচ-ছয় জন জঙ্গি মঙ্গলবার দুপুরে পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় নির্বিচারে গুলি চালায়। সেই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত আরও অনেকে।
মঙ্গলবারের হামলার ঘটনার দায় নিয়েছে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ)। ২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীরের রাজনৈতিক অস্থির পরিস্থিতির আবহেই জন্ম হয় এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর। পাক জঙ্গিগোষ্ঠী লশকর-ই-ত্যায়বার ‘ছায়া সংগঠন’ হিসাবে উঠে আসে টিআরএফ। সেই গোষ্ঠীর সদস্যেরা হামলা চালালেও পুরো পরিকল্পনাই করেছিলেন সইফুল্লা, এমনই খবর গোয়েন্দা সূত্রে। সইফুল্লা লশকরের অন্যতম প্রধান। এ ছাড়াও, এই জঙ্গিগোষ্ঠীর অন্যতম মাথা তথা ভরতের ‘ওয়ান্টেড’ তালিকায় থাকা হাফিজ় সইদের ঘনিষ্ঠ বলেও পরিচিত সইফুল্লা।
আরও পড়ুন: হঠাৎ মহানন্দায় ভেসে উঠল অজস্র মরা মাছ, কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা
সূত্রের খবর, পাক সেনায় যথেষ্ট ‘প্রভাব’ ছিল সইফুল্লার। পহেলগাঁও হামলার মাস দুই আগে পাকিস্তানের পঞ্জাবের কাঙ্গলপুরে তাঁকে দেখা গিয়েছিল। সেখানেই পাক সেনার একটি বড় ব্যাটেলিয়ন ছিল। জানা গিয়েছে, ওই ব্যাটেলিয়ানে একটি জ্বালাময়ী বক্তৃতা করার জন্য সইফুল্লাকে আহ্বান করেছিলেন পাক সেনার কর্নেল জ়াহিদ জ়ারিন। সেনাকর্মীদের মনোবল বৃদ্ধি করতে সইফুল্লাকে ডাকা হয়। তাঁর গাড়ি যখন সেনাছাউনিতে প্রবেশ করে তখন জ়াহিদ নিজেই ফুলবর্ষণ করেন!
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, সইফুল্লার বক্তৃতার বেশির ভাগ অংশ জুড়েই ছিল ভারতবিরোধী বার্তা। ভারতীয় সেনাবাহিনীর উপর হামলা চালানোর ‘পরামর্শ’ও দেওয়া হয়। শুধু তা-ই নয়, পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়াতেও এমন সভার আয়োজন করেছিল পাক সেনা। সেই সভাতেও সইফুল্লা ভারতবিদ্বেষী বক্তৃতা করেন। এ ছাড়াও, কাশ্মীর দখলের হুঙ্কারও দিতে শোনা যায় তাঁকে। গোয়েন্দা সূত্রে আরও খবর, গত বছর শতাধিক পাকিস্তানি কিশোর-যুবক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীতে যোগ দিয়েছিল। সেই যোগদান অনুষ্ঠানেও ছিলেন সইফুল্লা।
আরও পড়ুন: ১০ হাজার নিষিদ্ধ ইয়াবা ট্যাবলেট-সহ STF-র জালে কোচবিহার তৃণমূলের ২ নেতা
মনে করা হচ্ছে, সেই সন্ত্রাসীগোষ্ঠীই কয়েক জনকে বেছে নিয়েছিল পহেলগাঁও হামলার জন্য। সেখানেই তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। পরে পাক সেনার সহায়তাতেই সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিল তারা।