যাদবপুর ও সোনারপুর দক্ষিণের ভোটার তালিকায় একের পর এক গরমিলের অভিযোগ তুলল সিপিএম। মৃত, স্থানান্তরিত ও ‘ভূতুড়ে’ ভোটারের নাম রেখে দিয়ে ভোট কারচুপির মাটি তৈরি করা হচ্ছে, এমনই বিস্ফোরক দাবি করলেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী।
দলীয় সমীক্ষা তুলে ধরে সুজন বলেন, যাদবপুরে মোট ৩৪৭টি বুথে প্রতিটিতে গড়ে ৫০ জন মৃত মানুষের নাম রয়েছে ভোটার তালিকায়। তাঁর দাবি, “এই হিসাবে মৃত ভোটারের সংখ্যা অন্তত ১৭ হাজার ৩৫০। তার সঙ্গে স্থানান্তরিত ও ভূতুড়ে নাম মিলিয়ে সংখ্যাটা ছুঁয়েছে প্রায় ২০ হাজারে।”
আরও পড়ুনঃ সৌভাগ্য যোগের সঙ্গে শোভন যোগ, চোখে পড়ার মতো ব্যবসায় বাজিমাত এই চার রাশির
তাঁর বক্তব্য, “তৃণমূল নানা কৌশলে ও ভয় দেখিয়ে এই ভূতুড়ে ভোটগুলিই অবৈধভাবে বাক্সে ঢুকিয়ে দেয়। আর নির্বাচন কমিশন নির্বিকার দর্শকের মতো বসে থাকে।”
সিপিএম সূত্রে জানানো হয়েছে, যাদবপুরের ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের ১৪৫ নম্বর পার্টে মোট ভোটার ৯০৭ জন। তাঁদের মধ্যে মৃত ৪২, স্থানান্তরিত ১৯৫ জন— অথচ সেই নামগুলি এখনও বাদ যায়নি।
সুজনের অভিযোগ, “১০৮ নম্বর বুথে ৪৩ জন মৃত ভোটারের নাম সব প্রমাণ-সহ কমিশনে জমা দেওয়া হলেও, এক জনের নামও বাদ দেওয়া হয়নি। মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত নাম বাদ দেওয়ার কাজ কিছুটা চললেও জুলাই থেকে সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়।”
তিনি আরও জানান, ৭ অগস্ট থেকে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের সাইটে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন (৭ নম্বর ফর্ম) গ্রহণ বন্ধ ছিল। বার বার চিঠি পাঠানোর পরে সম্প্রতি আবার চালু হয়েছে সেই প্রক্রিয়া।
আরও পড়ুনঃ অজয় নদ থেকে উদ্ধার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিরাট বোমা; এক মাসে দু’বার
সিপিএমের অভিযোগ, সোনারপুর দক্ষিণের ২৫৭, ২১১ ও ২৫৮ নম্বর বুথেও একই চিত্র। ভূতুড়ে নাম, মৃত ভোটার এবং স্থানান্তরিত ভোটারদের নাম না কাটায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সুজন।
তাঁর তোপ, “তৃণমূল চায় ভুয়ো নাম তালিকায় থাকুক, যাতে ভোট লুটে সুবিধা হয়। আর বিজেপি চাইছে বৈধ ভোটারকেই ‘ডি-ভোটার’ বানিয়ে দেওয়া হোক।”
ভোটার তালিকার বিশেষ আমূল সংশোধন (এসআইআর) নিয়ে সরাসরি কমিশনের বিরুদ্ধেও প্রশ্ন তুলেছেন সিপিএম নেতা। তাঁর বক্তব্য, “এসআইআর নিয়ে আপত্তি নেই, কিন্তু সর্বদলীয় বৈঠক হয়নি। ভোটের আগে এটা করে গরিব ও পরিযায়ী শ্রমিকদের নাস্তানাবুদ করা হচ্ছে। তার পর বিজেপি এসে বলবে, ওদের রক্ষা করবে।”
সুজনের কটাক্ষ, “স্বচ্ছ, ত্রুটিমুক্ত ভোটার তালিকার দাবিতে বার বার আবেদন জানিয়েও কমিশনের সাড়া নেই। বরং ভয় দেখাতে এসআইআর-এর জুজু দেখানো হচ্ছে।”





