কুশল দাশগুপ্ত, শিলিগুড়ি:
ভিন্ন ধর্মের ছেলেকে বিয়ে করায় মেয়ের কুশপুতুল তৈরি করে তা দাহ করলেন বাবা! ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ ব্লকের ভুটকি হাট এলাকায়। প্রতিবেশীদের একাংশ এই ঘটনায় বিস্মিত, কেউ কেউ আবার সমর্থন করেছেন বাবা নারায়ণ দে-র সিদ্ধান্তকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর ২৬-এর নেহা দে প্রেম করছিলেন অন্য ধর্মের এক যুবকের সঙ্গে। জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ ব্লকের মাঝিয়ালী গ্রাম পঞ্চায়েতের গন্ডারমোড় সংলগ্ন ডাঙ্গাপাড়া এলাকার বাসিন্দা নেহার পরিবার প্রথম থেকেই এই সম্পর্কের বিরোধিতা করে। নেহা বাড়িতে বিয়ের কথা জানালে শুরু হয় অশান্তি। পরিবারের আপত্তির পরও সম্পর্ক ছাড়তে রাজি হননি তিনি। কয়েক দিন আগেই নেহা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান।
আরও পড়ুন: চলছিল বন্ধুর বার্থডে পার্টি, ঘরে ঢুকিয়ে তৃণমূল নেতাকে কুপিয়ে খুন, অভিযুক্ত তৃণমূলের নেতাই
ঘটনার পর রাজগঞ্জ থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে নেহার পরিবার। পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে বাড়িতে ফেরত পাঠায়। তবে ফেরানোর পরেও পরিবারের অনুরোধ-উপরোধেও মন গলেনি নেহার।
তারপরই শুক্রবার বিকেলে মেয়ের একটি কুশপুতুল তৈরি করে তা দাহ করে প্রতিবাদ জানান বাবা নারায়ণ দে। গ্রামের একাংশ বাসিন্দাকেও এই কাজে পাশে পান তিনি। পুতুল দাহের সময় গ্রামে তৈরি হয় উৎসবের মতো আবহ। কেউ কেউ তা মোবাইলে ভিডিও করে ছড়িয়ে দেয় সামাজিক মাধ্যমে।
বাবা নারায়ণ দে বলেন, “আমরা মেয়েকে অনেক ভালবাসতাম, চোখের মণির মতো করে বড় করেছি। কিন্তু সে সমাজের রীতি ভেঙে এমন একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা মেনে নেওয়া যায় না। আমি চাই এই ঘটনা থেকে অন্য মেয়েরা শিক্ষা নিক। তাই এই প্রতীকী প্রতিবাদ করেছি। এবার মেয়েকে আইনি পথে ত্যাজ্য করব।”
আরও পড়ুন: বাঙালিদের কাশ্মীর যেতে নিষেধ করলেন শুভেন্দু! ‘ফরমান জারি করতে পারেন না’, পাল্টা শশী
এলাকার বাসিন্দা গণেশ দাসের বক্তব্য, “ভিন্ন ধর্মে বিয়ে নিয়ে ওঁর পরিবার ভেঙে পড়েছে। বাবা হিসেবে তিনি মানতে পারেননি। তাই কুশপুতুল দাহ করেছেন।”
ঘটনা নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের তরফে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলি ইতিমধ্যেই এই ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। রাজগঞ্জ থানার পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, কেউ যদি এ নিয়ে অভিযোগ করেন, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।