নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা:
সেনাপ্রধান ওয়াকার উজ জামান সম্প্রতি তিন বাহীনির প্রধানের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন। আর সেই বৈঠকের পরদিন আরও একটি বৈঠকে সব বিভাগের সেনাদের উদ্দেশ্যে একটি ভীষন গুরুত্বপূর্ণ এবং চিন্তাজনক খবর নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।সেখানে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান সম্প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা জারি করেছেন, যেখানে তিনি জানিয়েছেন যে আগামী এক মাসের মধ্যে দেশে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি বলেন এক মার্কিন সেনেটের সঙ্গে তার বৈঠক হয়েছে, সেখানে মার্কিন সেনেটরস গ্যারি পিটারস তাকে বাংলাদেশে জঙ্গী কার্যকলাপ দ্রুতহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে জানিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এই বিবৃতি দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। সেনাপ্রধানের এই আশঙ্কার মূল কারণ হল, জুলাই আগস্টে কমকরে ৭০ জন জঙ্গী জেল থেকে পালিয়েছিল, এবং তারা প্রত্যেকেই এখনও ধরা ছৌঁয়ার বাইরে রয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: ছাগলকে মুখ বেঁধে ‘যৌন নির্যাতন’, পলাতক অভিযুক্ত
দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তাদের ধরার জন্য তাগিদ দেখালেও, সরকারের পক্ষ্য থেকে কোন উদ্যোগ দেখা যায়নি। অন্যদিকে ৫ থেকে ৭ই আগস্ট দেশের ৪০০ থানা থেকে যে বিপুল পরিমানে অস্ত্র লুঠ হয়েছে সেগুলিও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। আর সেই অস্ত্র উদ্ধারের ব্যাপারে যা জানা গেছে তা হল ভংঙ্কর। সেই অস্ত্র বেশ কয়েক হাত ঘুরে জঙ্গীদের হাতে চলে গেছে। আর মাত্র কিছু দিন আগে ৭ই মার্চ দেশবাসীর চোখের সামনে মিছিল করেছে হিজবুত তাহেরী। এছাড়া ইউনূস সাহেব ক্ষমতা নেওয়ার পর বহু জঙ্গী জামিনে ছাড়া পেয়ে অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যদিও কিছুদিন আগে কিছু আরাকান জঙ্গীকে গ্রেফতার করেছে, বাংলাদেশ সসস্ত্র বাহিনী। এই পরিস্থিতিতে সেনাপ্রধান গোয়েন্দাদের সাবধান করেছেন অফিসার্স এড্রেস মিটিংএ। সেখানে তিনি বলেন এক মাসের মধ্যে জঙ্গীরা যে কোন হামলা চালাতে পারে। তিনি আরও বলেন বহু উস্কানির পরও সেনাবাহীনি ধৈর্যের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। যা সেনাবাহীনির পেশাদারিত্বের প্রমান।
তিনি হাদিস থেকে কোট করে বলেন, শক্তিমান সেই ব্যক্তি নয়,যে কুস্তিতে অন্যকে পরাজিত করে। বরং প্রকৃত শক্তিমান সেই যে রাগের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রন করতে পারে। তিনি যে কোন মূল্যে আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠ ভাবে করার ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন সেনাবাহীনির চুড়ান্ত বিজয় হবে সুষ্ঠভাবে নির্বাচন করা এবং ক্যান্টনমেন্টে ফিরে যাওয়া। তিনি বলেন সেনাবাহীনি এমন একটি যুদ্ধে নিয়োজিত যেখানে অস্ত্রের পরিবর্তে নৈতিকতা, বুদ্ধিমত্তা এবং সম্মানের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। তিনি যে কোন উস্কানি মূলক বক্তব্য থেকে নিজেদের দুরে থাকতে বলেন। সবাইকে ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি সামলাতে হবে।মতভেদ থাকতেই পারে তবে দেশের স্বার্থে সকলকে একজোট হয়ে কাজ করতে হবে।
বাংলাদেশে অফিসার্স এড্রেস একটি নিয়মিত কার্যক্রম। যেখানে সেনাপ্রধান অধনস্ত সেনাদের প্রতি উৎসাহ মূলক বার্তা দিয়ে থাকেন।সেনাপ্রধান বলেন, “আমাদের গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, কিছু জঙ্গি গোষ্ঠী দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার পরিকল্পনা করছে।
আরও পড়ুন: দার্জিলিং সদর হাসপাতালের সহকারি সুপারের ওপর প্রাণঘাতী হামলা , গ্রেপ্তার
আমরা এই হুমকির বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছি।”
তিনি আরও জানান যে, দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলোকে সর্বোচ্চ প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জনগণকেও সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে এবং সন্দেহজনক কার্যকলাপ সম্পর্কে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার অনুরোধ করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সতর্কবার্তা দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে। তবে, সাধারণ মানুষের মধ্যে এই খবর উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে এবং তারা দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপের প্রত্যাশা করছেন।
সেনাপ্রধানের এই সতর্কবার্তা দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রতি নতুন করে মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। বিভিন্ন মহল থেকে এই পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা চলছে এবং এর সমাধানের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হচ্ছে