সাহেব দাস, হুগলী:
ইতিউতি ঘুরে বেড়াচ্ছে সারমেয়। একের পর এক ঘর ফাঁকা। আলো জ্বলছে, পাখা ঘুরছে। কিন্তু পুর আধিকারিকদের দেখা মেলা ভার। সপ্তাহের শুরুর দিনে চুঁচুড়া পুরসভার ভেতরে ঢুকে অনেকেই ভাবছেন, ‘আজ কি সরকারি ছুটি রয়েছে?’ নানা কাজে এসেও ফিরে যেতে হচ্ছে গ্রাহকদের। নেপথ্যে অস্থায়ী শ্রমিকদের লাগাতার ধর্মঘট। শ্রমিক, কর্মচারীরা কাজ বন্ধ করে গেটে বিক্ষোভে সামিল। দিনের শেষে পুর প্রধানের আশ্বাসে সাময়িকভাবে কাজ শুরু করেন অস্থায়ী কর্মীরা।
আরও পড়ুন: মিনি ভারতবর্ষ! ভগবতী অ্যাপার্টমেন্ট শিলিগুড়ি
গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে বকেয়া মজুরির দাবিতে লাগাতার ধর্মঘট করে অস্থায়ী শ্রমিক কর্মচারীরা। যার ফলে শহরের আবর্জনা পরিষ্কার বন্ধ হয়ে যায়। আস্তাকুড়ে পরিণত হয় শহরের রাস্তাঘাট। অবশেষে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে পুর ও নগর উন্নয়ন দপ্তর তিন কোটি টাকা দিলে তখনকার মতো শ্রমিকদের বেতন মেটানো হয়। পুনরায় কর্মীরা কাজ শুরু করে। বর্তমানে তাঁদের আন্দোলন মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে।
পুরপ্রধান অমিত রায় বলেন, ‘২২ সালে পুরবোর্ড গঠন হওয়ার পর রোজ কুড়ি টাকা করে মজুরি বাড়ানো হয়েছিল। একটা পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষ না হলে আবার মজুরি বাড়ানো রাজ্যের কোনও পুরসভায় হয়নি। অস্থায়ী শ্রমিকদের জন্য পুরসভার কোনও দায় নেই। তবু চুঁচুড়া পুরসভা অবসরকালীন ভাতা থেকে মজুরি সব বিষয়ে অনেক সহানুভূতিশীল। এর পরেও যাঁরা কাজ করবে না তাঁদের বদলে অন্য লোক নেওয়া হবে।’
আরও পড়ুন: সকাল থেকেই বেআইনি পার্কিং উধাও; রাস্তাতেই বচসায় জড়ালেন তৃণমূল ও বিজেপি কাউন্সিলররা
অভিযোগ, পুরসভার কর্মীদেরও এ দিন কাজ করতে বাধাপ্রদান করা হয়। ফলে সমস্যায় ভুগতে হয় নাগরিকদের। সেখ দারাব আলি বার্ধক্য ভাতার কাজের জন্য এসেছিলেন। পুরসভায় কাজ না হওয়ায় ফিরে যেতে বাধ্য হন। আরেক স্থানীয় বাসিন্দা সুদীপা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমার ছেলের কলেজে ভর্তির জন্য একটা শংসাপত্র প্রয়োজন ছিল। কিন্তু পুরসভায় সব কাজ বন্ধ হয়ে থাকায় তা হলো না।’
যদিও, সোমবার বিকেলের দিকে অস্থায়ী কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করেন পুরপ্রধান। তাঁদের সমস্যা মেটানোর জন্য ১৫ দিন সময় চাওয়া হয়েছে। যদিও, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে দাবিপূরণ না হলে ফের আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে অস্থায়ী কর্মীদের সংগঠন।
শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আলোচনার অধিকার চেয়ারম্যান কেড়ে নিয়েছেন। তাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রেখেছে। যতদিন না সমস্যার সমাধান হয়, দাবি নিয়ে আলোচনায় হয়, ততোদিন এই আন্দোলন চলবে।’