কুশল দাশগুপ্ত, শিলিগুড়িঃ
কোনওটির লাইসেন্সের আবেদন হয়নি, কোনওটির আবার লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ হয়নি দীর্ঘদিন। শুধু শিলিগুড়ি শহর নয়, শহরতলির বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমনই বেশ কিছু দন্ত চিকিৎসাকেন্দ্র, প্যাথলজিকাল ল্যাবরেটরি সহ অন্য চিকিৎসাকেন্দ্রের হদিস পেল স্বাস্থ্য দপ্তর। বৃহস্পতিবার শহরজুড়ে অভিযান চালিয়ে একটি চিকিৎসাকেন্দ্র সিল করার পাশাপাশি পাঁচটিকে নোটিশ ধরানো হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নোটিশের উপযুক্ত জবাব না পেলে পরবর্তীতে এই কেন্দ্রগুলি সিল করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তর।
আরও পড়ুনঃ ফের অবরুদ্ধ ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক; পাহাড় ভেঙে নামল বড় বড় পাথর
দার্জিলিংয়ের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ তুলসী প্রামাণিক বলেছেন, ‘বেআইনিভাবে কোনও স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান চলতে দেওয়া হবে না। বেশ কিছু তথ্য এবং অভিযোগের ভিত্তিতেই এদিন অভিযান হয়েছে। আগামীতে ধারাবাহিকভাবে এই অভিযান চলবে।’
উত্তরবঙ্গের অঘোষিত রাজধানী শিলিগুড়িকে ঘিরে প্রচুর বেসরকারি হাসপাতাল, নার্সিংহোম যেমন তৈরি হয়েছে এবং হচ্ছে, একইভাবে প্রায় প্রতি মাসেই নতুন নতুন স্বাস্থ্য ক্লিনিক, ডেন্টাল ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার গজিয়ে উঠছে। হাতের নাগালে পেয়ে মানুষ সেগুলিতে গিয়ে চিকিৎসা করাচ্ছেন। কিন্তু কোথায় প্রকৃত চিকিৎসক হচ্ছে বা হয়, তা সাধারণ মানুষের পক্ষে বোঝা মুশকিল। আর এর ফলে মানুষ ভুয়ো ক্লিনিক, ভুয়ো চিকিৎসকের কাছে গিয়ে প্রতারিত হচ্ছেন।
দেরিতে হলেও স্বাস্থ্য দপ্তরের ঘুম ভেঙেছে। কয়েকদিন আগে স্বাস্থ্য দপ্তর উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল সংলগ্ন শুশ্রুতনগরে একাধিক প্যাথলজিকাল ল্যাবরেটরির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছিল। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি শহর, মাটিগাড়া, উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এলাকায় বিভিন্ন ডেন্টাল ক্লিনিক, প্যাথলজিকাল ল্যাবরেটরি এবং পলিক্লিনিকে হানা দেয় স্বাস্থ্য দপ্তর। দার্জিলিংয়ের উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (১) নন্দদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে শহরের পাকুড়তলা মোড় থেকে এদিনের অভিযান শুরু হয়। সেখানে লাইসেন্সহীন একটি ডেন্টাল ক্লিনিকে গিয়ে নথিপত্র দেখতে চান স্বাস্থ্য আধিকারিকরা।
আরও পড়ুনঃ শারীরিক সম্পর্কে আপত্তি! ‘ডিভোর্স হওয়াই ভাল’, মনে করল হাইকোর্ট
কিন্তু সেখানকার চিকিৎসক লাইসেন্স সহ অন্য নথিপত্র দেখাতে না পারায় ক্লিনিকে নোটিশ ধরানো হয়। এক মাসের মধ্যে সমস্ত নথিপত্র তৈরি করে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারপরও কাজ না হলে ক্লিনিক সিল করে দেওয়া হবে। এখান থেকে আশ্রমপাড়া হয়ে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ডেন্টাল ক্লিনিক ও ল্যাবরেটরিতে হানা দেওয়া হয়।
বিকেলে মাটিগাড়া এবং তারপর উত্তরবঙ্গ মেডিকেল সংলগ্ন শুশ্রুতনগরেও একাধিক প্যাথলজিকাল ল্যাব এবং পলিক্লিনিকে অভিযান হয়। শুশ্রুতনগরের একটি ডেন্টাল কাম নিউরো কেয়ার সেন্টার কোনও নথিপত্র দেখাতে না পারায় সেটি সিল করে দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর, এর আগের অভিযানে এই নিউরো কেয়ার সেন্টারকে সময়সীমা বেঁধে দিয়ে লাইসেন্স সহ সমস্ত নথিপত্র তৈরি করে নিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তারপরও কাজ না হওয়ায় এদিন সেটি সিল করে দেওয়া হয়েছে।