“শুশুনিয়া পাহাড়“
সৌমেন মুখোপাধ্যায়
ভারতবর্ষের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিণ দিকে বাঁকুড়া জেলার মধ্যে অবস্থিত প্রাচীন পাহাড় – শুশুনিয়া পাহাড়। বাঁকুড়া – পুরুলিয়া যাওয়ার পথে ছাতনা থেকে দশ কিলোমিটার উত্তর- পূর্বে যা বাঁকুড়া শহর থেকে 13 কিলোমিটার দূরে অবস্থিত প্রাচীন পাহাড়টি।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে শুশুনিয়া পাহাড় বর্ণনায় অতুলনীয়। 1200 ফুট উচ্চ এই পাহাড়টি সবুজ আর লাল মাটির জন্য দর্শনীয়দের জন্য বিখ্যাত। এই পাহাড়ের কোলে কোলে আজও বহে চলেছে প্রাচীন রহস্যময় জীবাশ্মের কাহিনী, বহে চলে “প্রাচীনতম” শিলালিপি, প্রকৃতির অবিশ্বাস্য সৌন্দর্য, পাহাড়ের বুক চিড়ে বহে চলা গন্ধেশ্বরী নদী যা বর্ষার জলে কলকল করে উপর থেকে নীচ পর্যন্ত বহে “পলাশ” আগুনের কমলা রঙের সাথে স্থানটিতে আধিপত্য বিস্তার করে চলছে। দর্শকদের দর্শনের জন্য এই স্থানটি খুবই উপযুক্ত এবং রাত্রীযাপনের জন্য বিভিন্ন নামী দামী হোটেল ও লজ পাহাড়ের পাদদেশে মাথা তুলে স্বাগত জানাচ্ছে। শুধু মানবজাতির আগমনকে নয় বিভিন্ন প্রজাতির পশু- পাখিদেরকেও এই পাহাড় আন্তরিক অভ্যর্থনা জানায়।
আরও পড়ুন: Today’s Horoscope: আজ মঙ্গলবার ৩১শে ডিসেম্বর, বছরের শেষ আর্থিক দিক থেকে মালামাল হবে এই চারটি রাশি
শুশুনিয়া পাহাড় নিয়ে অনেকে গবেষণা করেছেন, কেউ কেউ বলছেন যে এই পাহাড়টি প্রাচীন হিমালয় পাহাড় থেকেও প্রাচীন । এই পাহাড়ের কোলে আজও রাজা চন্দ্রবর্মণের শিলালিপি বিদ্যমান। অনেকের মতে, এই পাহাড়ে নাকি রাজা চন্দ্রবর্মণের দুর্গ ছিল।
কিন্তু এই দুর্গের চিহ্ন বর্তমানে খুঁজে পাওয়া যায় না। খ্রিস্টীয় চতুর্থ শতাব্দীর শিলালিপিগুলি অনুসারে এই স্থানের নাম পুষ্করণ বা পখন্না রাখা হয়েছিল যা চন্দ্রবর্মণের রাজ্যের রাজধানী ছিল। শিলালিপিটি একটি এ.এস.আই সুরক্ষিত স্থান। শিলালিপির দুটি অংশ, একটি – ‘চক্র’ (চাকা) যা রাজা চন্দ্রবর্মণের কাজ আর অন্য অংশ চোষগ্রাম গ্রামটি চক্রস্বমিনে স্থানান্তরিত হয়েছিল।
আরও পড়ুন: Gangasagar Mela: গঙ্গাসাগর মেলায় নিরাপত্তা ও পরিষেবায় নজর প্রশাসনের
এছাড়া এই পাহাড়ের পাদদেশে ‘নরসিংহ’ এর উন্মুক্ত মন্দির রয়েছে। যার বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল সিংহের মুখ থেকে জল ঝরে পড়ছে, কিন্তু এই জলধারার উৎস আজও সকলের অজানা।