প্রিয়া বর্মণ; বর্ধমান
কথায় আছে ‘ বিন্দু বিন্দু নিয়েই সিন্ধু তৈরি হয় ‘। অর্থাৎ বিন্দু বিন্দু জলরাশি একত্রিত হয়ে এক বিরাট সমুদ্রের সৃষ্টি করে। সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ের জলরাশি আমাদের জানান দেয় তার অস্তিত্ব; সমুদ্রের বিপুল জলরাশি আমাদের বুঝতে শেখায় যে কোন কিছুই তুচ্ছ নয়। বর্তমানে কাউকে ক্ষুদ্র ভাবলে কোনো না কোনো এক সময় সে বিশাল সমুদ্রের মতোই নিজের ক্ষমতা প্রদর্শন করতে চাইবে। এরকমই এক বিশাল সমুদ্র হলো পুরীর সমুদ্র; যার কথা আমরা প্রায় প্রত্যেকেই জানি। বছরের বিভিন্ন সময় যারা ঘুরতে ভালবাসি তারা প্রায়শই সমুদ্রের টানে গিয়ে উপস্থিত হই পুরীতে।
আরও পড়ুন: Darjeeling Mail: আবার পরিবর্তন, যত কান্ড দার্জিলিং মেল
ভ্রমণপিপাসু মানুষদের কাছে একটি অন্যতম ভালোবাসার জায়গা হলো পুরী। দু – চার দিনের ছুটি জোগাড় করতে পারলেই মানুষ ব্যস্ত জীবন থেকে কয়েকটা দিন ধার করে নিয়ে চলে আসে সমুদ্রের এই বিশালতাকে উপভোগ করার জন্য। পুরীতে বেড়ানোর জন্য অনেক জায়গা আছে। যেমন জগন্নাথ দেবের মন্দির, কোনারক সূর্য মন্দির, নন্দনকানন, চিল্কা হ্রদ, ধবলগিরি, উদয়গিরি, খণ্ডগিরি ইত্যাদি। তবুও কোথাও যেন মন আটকে যায় ওই সমুদ্রের কাছেই। সমুদ্রকে পুরীর মানুষ এক প্রাকৃতিক শক্তি হিসাবে পুজো করে থাকে।প্রতি সন্ধ্যাবেলা যথাযথ নিয়ম মেনে করা হয় সমুদ্র আরতি। জগন্নাথ দেবের মন্দিরের পুজোর দায়িত্বে থাকা পূজারীরাই মন্ত্রপাঠ করে, ধূপ, দ্বীপ, কাঁসর, ঘন্টা সহযোগে সন্ধ্যা বেলা এই আরতি করে থাকেন।
আরতি দেখতে প্রচুর মানুষ সমুদ্রতীরে ভিড় জমায়। সমুদ্র তখন যেন এক অন্যরকম সৌন্দর্য্য ধারণ করে। মানুষের মনের সব দুঃখ, কষ্ট, হতাশা, রাগ, অভিমান যেন সমুদ্রের জলেই ভাসিয়ে দেওয়া হয়। আরতি শেষে সমুদ্রতীরে উপস্থিত সকল মানুষ আরতির তাপ নেয় এবং শেষে সকলের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করা হয়। সকলে নিজের সাধ্যমতো প্রনামী দেয়।
আরও পড়ুন: Bengali Short Story: “নীরব পৃথিবী চায়”
সমুদ্রে তো অনেকে যায়, কিন্তু সমুদ্র আরতি সম্পর্কে অনেকেই জানে না। যারা পুরীতে যান সমুদ্রের টানে, তারা পরেরবার পুরীর সমুদ্র আরতি দর্শন করতে পারেন। দেখবেন সমুদ্র নতুন রূপে ধরা দিয়েছে আপনার কাছে। সন্ধ্যাকালীন ওই সৌন্দর্য্য আপনাকে মুগ্ধ করবেই। আর এই সৌন্দর্য্যই হয়তো আপনাকে সমুদ্রের কাছে ফিরিয়ে আনবে বারবার।