সোমেন দত্ত, কোচবিহারঃ
এবার উত্তরবঙ্গকে পাখির চোখ করে এগোনোর উদ্যোগ নিচ্ছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বা আরএসএস। সম্প্রতি উত্তরের জেলাগুলিকে টার্গেট করে সংগঠন বিস্তারের কাজে এগোনোই লক্ষ্য। কয়েকমাস পরেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে প্রতিটি জেলায় অন্তত ১০০০টি করে শাখা তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে আরএসএস। মহালয়ার দিন পথ সঞ্চালন কর্মসূচির মাধ্যমে সেই কাজ শুরু করা হবে। তাই ভোটের আগে সংগঠনের এমন তৎপরতায় রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। উত্তরবঙ্গে সংগঠন বৃদ্ধির বিষয়ে এই নির্দেশ নাকি একেবারে আরএসএসের শীর্ষ স্তর থেকে এসেছে। এনিয়ে আরএসএসের জেলা কার্যবাহক সুমন দে-র বক্তব্য, ‘বেশি সংখ্যক শাখা বিস্তারের লক্ষ্য নিয়েই আমরা এগোচ্ছি। আগামীদিনে আরও একাধিক কর্মসূচি রয়েছে।’
আরও পড়ুনঃ টোটোই নন্দ ঘোষ! ক্ষোভে বন্ধ ম্যাক্সিক্যাব, সিটি অটো
আরএসএস সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে কোচবিহার জেলায় তাদের ১০০টি শাখা রয়েছে। ২১ সেপ্টেম্বর মহালয়ার দিন প্রতিটি শাখার উদ্যোগেই পথ সঞ্চালন কর্মসূচি পালিত হবে। এরপর ১ থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় নাগরিক সম্মেলন চলবে। ২৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত নানা বৈঠক রয়েছে। এরপর ১৫ ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত গৃহ সম্পর্ক অভিযান করবে আরএসএস। সেখানে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সংঘের প্রচারের কথা জানানো হয়েছে। পাশাপাশি জানুয়ারির ১২-৩১ তারিখ পর্যন্ত হিন্দু সম্মেলনের ডাক দেওয়া হয়েছে। আগে কোচবিহারে আরএসএসের নানারকম কর্মসূচি হলেও এবারের পরিকল্পনা তার মধ্যে অন্যতম বৃহৎ বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। এদিকে, ২১ সেপ্টেম্বরের কর্মসূচি নিয়ে ইতিমধ্যেই সংগঠনের অন্দরে জোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। জেলাজুড়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান হলেও কোচবিহার সদরে মূল শোভাযাত্রা হবে। তবে ঠিক কোথায় হবে, তা এখনও ঠিক হয়নি। তবে প্রচুর সংখ্যক কর্মী যাতে ওইদিনের কর্মসূচিতে অংশ নেন, তার জন্য প্রচার চালানো হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ ‘ব্লাড মুন’! ৩ ঘন্টা ২৯ মিনিট; রাত ফুরোলে চন্দ্রগ্রহণ
রাজনৈতিক মহল থেকে সাধারণ মানুষ সকলেই জানেন, সরাসরি না হলেও বিজেপির ভোটব্যাংকের একটি বড় অংশই আরএসএসের ওপর নির্ভর করে। উত্তরবঙ্গে বিজেপির একক আধিপত্য থাকলেও গত লোকসভা নির্বাচনে ফল কিছুটা খারাপ হয়েছিল। হাতছাড়া হয়ে যায় কোচবিহার। এমন অবস্থায় উত্তরবঙ্গে আরএসএসের শক্তিবৃদ্ধির তৎপরতাকে অনেকটাই তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তবে আরএসএস বিধানসভার ভোটব্যাংকে কোনও প্রভাব ফেলতে পারবে না বলে দাবি তৃণমূল কংগ্রেসের। সংঘের পরিকল্পনার বিষয়ে তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মন বলেন, ‘আরএসএস গোপনে গোপনে অনেক কিছুই করে। কিন্তু সেগুলি আমরা পাত্তা দিই না। সাধারণ মানুষের কাছে তাদের গ্রহণযোগ্যতাও নেই। আরএসএস মুখে বলে রাজনীতি করে না। কিন্তু ওরা বিজেপিরই একটি অংশ।’