সালটা ২০২১। বিধানসভা ভোটে জিতে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী হয়েছিলেন উদয়ন গুহ। এক লক্ষের বেশি ভোটে তাঁকে জিতিয়েছিলেন কোচবিহারের দিনহাটার মানুষ। কিন্তু পাঁচটা বছর কাটতে না কাটতেই উদয়ন বললেন, তিনি দিনহাটার মানুষকে বিশ্বাস করেন না। আশঙ্কা প্রকাশ করে নিজেই বললেন,”জানিনা দ্বিতীয়বার মন্ত্রী হতে পারব কি না…।” ছাব্বিশে বিধানসভা ভোট। দিনহাটার তৃণমূল বিধায়কের এই আশঙ্কা নিয়ে কার্যতই আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজ্যজুড়ে ঝড়বৃষ্টি; দক্ষিণবঙ্গে বজ্রপাতের আশঙ্কা, সন্ধে হতেই দেখা মিলবে কালবৈশাখীর
উদয়ন কী বলেছেন?
মঙ্গলবার দিনহাটা শহরের একটি ক্লাবে দিনহাটার একমাত্র সুইমিং পুল নির্মাণ কাজের শিলান্যাস ছিল। সেই অনুষ্ঠানের মঞ্চে গিয়েছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। সেখান থেকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আগামী ভোটের ফলাফল কীহবে তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন উদয়ন। তিনি বলেন, “তাদের (যে সংস্থা সুইমিং পুল বানাচ্ছে) বলেছি ছ’মাসের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে। যাতে আমি মন্ত্রী থাকতে থাকতে উদ্বোধন করে নিতে পারি। কারণ দিনহাটার মানুষের উপর আমার ভরসা নেই। এখানকার মানুষ যে আমায় দ্বিতীয়বার মন্ত্রী হওয়ার সুযোগ করে দেবে সেই ভরসা আমি রাখি না।” রাজ্যের মন্ত্রীর দাবি, তিনি যে যে কাজ করতে চেয়েছিলেন, সেগুলি এখনই করে যেতে চান। কারণ, এরপর যদি তা করতে না পারেন তাহলে কষ্ট হবে। উদয়ন বলেন, “আমি ঠিক করেছি পুলটাকে এই ছ’মাসের মধ্যে উদ্বোধন করে কাজ করতে হবে। পরে দেখলাম আমার বুকের উপর দিয়ে কেউ এসে পুল উদ্বোধন করে চলে গেল। এটা যন্ত্রণাদায়ক হবে। তাই আমি নিজে এটা উদ্বোধন করতে চাই।”
আরও পড়ুন: ভয়ানক কাণ্ড দুবাইয়ে! দুই ভারতীয়কে তলোয়ার দিয়ে কুপিয়ে খু*ন পাক নাগরিকের
একুশের ভোটে উত্তরবঙ্গে ভাল ফল করেছিল বিজেপি। কোচবিহার লোকসভার অন্তর্গত যে বিধানসভাগুলি রয়েছে তার মধ্যে পাঁচটি বিধানসভাই পদ্মশিবিরের দখলে। বাকি দু’টি তৃণমূলের। তবে গত লোকসভা ভোটে গোটা খেলা কার্যত উল্টে দেয় শাসকদল। তৃণমূলের জগদীশ চন্দ্র বাসুনিয়া বিজেপির নিশীথ প্রামাণিককে হারিয়ে জয়ী হন এখান থেকে। তবে জগদীশ জিতলেও বিজেপির ভোট কিন্তু খুব একটা কম ছিল। একদম কাটায়-কাটায় টক্কর দিয়েছিল তারা। এই পরিস্থিতিতে আগামী নির্বাচনে কী ফল হবে তা নিয়ে ধন্দে তৃণমূল নেতা। শুধু তাই নয়, উদয়নের বিতর্কিত মন্তব্যের কথা সর্বজনবিদীত। বিরোধী দলকে আক্রমণ করতে গিয়ে কখনও-কখনও মাত্রাছাত্রা আক্রমণ করতে দেখা যায় তাঁকে। খোদ সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও ধমক খেয়েছিলেন। ‘বারবার ভুলের ক্ষমা হয় না-ও বলেছিলেন নেত্রী।’ এর পাশাপাশি, বিরোধী দলগুলি ভোট লুঠেরও অভিযোগ তুলেছে বহুবার। তবে কি এবার বদলাতে পারে সেই সব সমীকরণ? তাই কি উদয়েনর এই আশঙ্কা? রাজনৈতিক কারবারিদের ইঙ্গিত সেই দিকেই