আরজিকর কাণ্ড নিয়ে এবার বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্যালেন্ডারের হিসেব বলছে চার মাস। দেখতে দেখতে এসে গিয়েছে নতুন বছরও। কিন্তু আজও বিচার পাননি, আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নির্যাতিতা তরুণী চিকিৎসক। গত ৯ আগস্ট কলকাতা শহরে ঘটে যাওয়া এই নির্মম-ধর্ষণ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে স্বাধীনতা দিবসের ঠিক আগের দিন ১৪ ই আগস্ট মেয়েদের রাত দখলে পথ নেমে ছিলেন ৮ থেকে ৮০ সকলেই।
এই আরজিকর কাণ্ডে জুনিয়র চিকিৎসকদের প্রতিবাদ আন্দোলন সময়ের সাথে সাথেই ছড়িয়ে পড়েছিল সমাজের সর্বস্তরে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বিনোদন জগতের তারকারাও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সামিল হয়েছিলেন এই আন্দোলনে। এই সমস্ত শিল্পীদেরই কদিন আগে বয়কট করার ডাক দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ।
একেবারে চাঁচাছোলা ভাষায় কুণাল এদিন বলেছিলেন, ‘আরজিকর কাণ্ডে যে যে শিল্পী মুখ্যমন্ত্রী কে কুৎসিতভাবে আক্রমণ করেছেন তাদের বয়কট করুন’। তবে কুণাল ঘোষের এই বক্তব্যকে সমর্থন করলেন না অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার অভিষেকের করা মন্তব্য ঘিরে তৈরি হয়েছে বিরাট জল্পনা। কোন রাখঢাক না রেখেই এদিন অভিষেক স্পষ্ট বললেন, ‘একজনের রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করার যেমন স্বাধীনতা আছে, তেমনি কেউ যদি একটা প্রোগ্রাম করে কাউকে আনতে চান তাহলে তার স্বাধীনতাও রয়েছে। অন্য দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এই বিষয়টিকে দেখা একদমই ঠিক নয়’।
আরও পড়ুন: ISRO: ISRO-র নতুন চমক ২০২৫-এর শুরুতেই
সেইসাথে এদিন তৃণমূল সেনাপতি বললেন, ‘পার্টি তো কোন নির্দেশ দেয়নি। তিনি টুইটে ব্যক্তিগতভাবে বলতে পারেন। কিন্তু পাটি তরফে কেউ তো নির্দেশ দেয়নি? কেউ কোথাও বিজ্ঞপ্তি দেখেছেন? কোন নোটিফিকেশন দেখেছেন? ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয় নিয়ে কোন আলোচনা করেছিলেন বলে শুনেছেন? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছু বলেছেন? দলের তরফ থেকে আমি পার্টি জেনারেল সেক্রেটারি কিছু বলেছি? উত্তর না, কারণ আমরা সবার স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি।’
এখানেই শেষ নয়, এরপরে এদিন ১৪ ই আগস্ট মেয়েদের রাত দখলের প্রসঙ্গও উঠে এল অভিষেকের কথায়। এদিন তিনি মেয়েদের রাত দখলকে সমর্থন করে স্পষ্ট বলেছেন, ‘আমি তো বলেছিলাম ১৪ই আগস্ট যারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাত দখলের ডাক দিয়েছিলেন কেউ সমর্থন না করলেও আমি তাদের সাধুবাদ জানিয়েছিলাম। আজও আমি এই একই কথা বলছি। কারও ভালো রাখতে পারে। কারও খারাপ লাগতে পারে। এটাই বাংলার সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের পার্থক্য।’
আরও পড়ুন: Arun Roy: না ফেরার দেশে দেবের বাঘাযতীন পরিচালক
প্রসঙ্গত আরজিকর কাণ্ড নিয়ে বিগত কয়েক মাস ধরেই তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি-দেশ। তিলোত্তমা হত্যার প্রতিবাদে নাগরিক সমাজের পাশাপাশি সরব হয়েছে শিল্পীরা। এই আন্দোলন চলাকালীন অনেকেই সুর চড়িয়েছেন রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। এই তালিকায় ছিলেন বাংলা বিনোদন জগতেরএকাধিক শিল্পীরাও। এই সমস্ত শিল্পীদের বয়কট করার ডাক দিয়ে গত ৩০ ডিসেম্বর তৃণমূল কংগ্রেসের কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, ‘আরজিকর কাণ্ডে যে যে শিল্পী, যে যে তারকা কুৎসিতভাবে মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করছেন, সরকারকে আক্রমণ করছেন তাদের বয়কট করুন।’