Tuesday, 17 June, 2025
17 June, 2025
HomeদেশLEFT FRONT: ‘যুদ্ধ’-র আবহে শান্তি চেয়ে রোষে দীপ্সিতারা

LEFT FRONT: ‘যুদ্ধ’-র আবহে শান্তি চেয়ে রোষে দীপ্সিতারা

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, দেশের এই অবস্থায় যখন কংগ্রেস–তৃণমূল–সহ তাবড় বিরোধীরা কেন্দ্রের পাশে দাঁড়িয়েছে, তখন নাগরিকদের এই উদ্যোগ কার বিরুদ্ধে? যুদ্ধ না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী? কারণ যাঁরা এই শান্তি কর্মসূচি নিচ্ছেন তাঁরা পরিচিত মোদী–বিরোধী হিসেবে।

অনেক কম খরচে ভিডিও এডিটিং, ফটো এডিটিং, ব্যানার ডিজাইনিং, ওয়েবসাইট ডিজাইনিং এবং মার্কেটিং এর সমস্ত রকম সার্ভিস পান আমাদের থেকে। আমাদের (বঙ্গবার্তার) উদ্যোগ - BB Tech Support. যোগাযোগ - +91 9836137343.

‘যুদ্ধ নয় শান্তি চাই!’ এই কথা বলে প্রবল আক্রমণের মুখে ওঁরা। পহেলগামে জঙ্গি হানার পরে বহু মানুষ যখন পাকিস্তানকে ‘যোগ্য’ জবাব দিতে যুদ্ধ চাইছেন, তখনই সংখ্যায় কম হলেও যুদ্ধের বিরুদ্ধে শান্তির কথা বলে প্রবল সমালোচিত হচ্ছেন একদল। তাঁদের অনেকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও দায়ের হয়েছে। অনেকে তাঁদের পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেওয়ার নিদান দিয়েছেন। কেউ কেউ চাইছেন দেশদ্রোহিতার ধারায় (ইউএপিএ) মামলা রুজু করতে। এমনকী বাম নেত্রী দীপ্সিতা ধর, ঐশি ঘোষদের যুদ্ধ–বিরোধী মন্তব্যের ফেসবুক ও এক্স পোস্ট সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল। তাঁদের কদর্য ভাষায় আক্রমণ করতেও বাদ রাখছেন না অনেকে।

এরই মধ্যে আবার ছাত্র সংগঠন আইসা গত বৃহস্পতিবার কলেজ স্ট্রিট কফি হাউসের সামনে যুদ্ধের বিরুদ্ধে সমাবেশ করেছেন। সেই সমাবেশে হাজির থাকা ছাত্রছাত্রীদের চিহ্নিত করে সোশ্যাল মিডিয়ায় কার্যত লোক–আদালত বসানো হয়েছে বলে অভিযোগ। যাদবপুর থানায় গিয়ে পাল্টা অভিযোগ জানিয়ে এসেছে আইসা–ও। এ সবের মধ্যেই আগামিকাল, সোমবার মৌলালি থেকে যুদ্ধ–বিরোধী একটি মিছিলের ডাক দিয়েছেন নাগরিক সমাজের একাংশ। বিজেপি নেতা সজল ঘোষ সেই পোস্ট শেয়ার করে পাল্টা মানুষকে ওই একই জায়গায় জমায়েত করা‍র ডাক দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া লিখেছেন, ‘এঁদের বিরুদ্ধে শুধু প্রতিবাদ নয়, প্রতিরোধ করে এই ধরনের রাষ্ট্র–বিরোধীদের আমরা প্রতিহত করব।’

আরও পড়ুন: ‘ট্রাম্প’ কার্ড ব্যর্থ; সেই বিশ্বাসঘাতকতাই করল “স্বীকৃত ভিখারি” পাকিস্তান

পরে সজ‍ল বলেন, ‘এঁরা কারা? অতীতে এঁদেরই বাপ–ঠাকুর্দারা ভিয়েতনাম–আমেরিকার যুদ্ধে ভিয়েতনামের পক্ষ নিয়েছেন। সম্প্রতি এঁরা প্যালেস্তাইনের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। চিনের যুদ্ধের সময়ে এঁরা চিনের দালালি করেছেন। আর এখন যখন গোটা দেশ শাস্তি চাইছে, তখন এঁরা রাস্তায় নেমে দেশের ঐক্য ভাঙার কাজ করছেন।’ সজল এঁদের পাকিস্তানে পাঠানোর নিদানও দিয়েছেন। কারণ তাঁর বক্তব্য, ‘যখন পহেলগামে ঢুকে ২৬ জন নিরীহ মানুষকে গুলি করে মারা হলো, তখন এঁদের মুখে শান্তির কথা শোনা যায়নি। এঁরা পাকিস্তানকে বলবেন না শান্তির কথা।’

যুদ্ধের বিরুদ্ধে কালকের মিছিলের আয়োজক কুশল দেবনাথের বক্তব্য, ‘পহেলগামে যা হয়েছে তার বিরুদ্ধে আমরা যথেষ্ট বিবৃতি দিয়েছি। জঙ্গিদের খুঁজে বের করতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকারকে জবাব দিতে হবে এত নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে এই ঘটনা ঘটল। কিন্তু মূল প্রশ্নগুলোকে এড়িয়ে গিয়ে গোটা দেশে যুদ্ধের জিগির তোলার বিরুদ্ধে আমরা সব সময়ে ছিলাম।’ সজলকে কুশলের খোঁচা, ‘এখন যে ট্রাম্পের কথায় মোদী যুদ্ধ থেকে সরে এলেন, এ বার কী জবাব দেবেন?’

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, দেশের এই অবস্থায় যখন কংগ্রেস–তৃণমূল–সহ তাবড় বিরোধীরা কেন্দ্রের পাশে দাঁড়িয়েছে, তখন নাগরিকদের এই উদ্যোগ কার বিরুদ্ধে? যুদ্ধ না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী? কারণ যাঁরা এই শান্তি কর্মসূচি নিচ্ছেন তাঁরা পরিচিত মোদী–বিরোধী হিসেবে। আইসা–র রাজ্য সভাপতি ঋতম মাজির বক্তব্য, ‘নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা, কলকাতা–সহ একাধিক জায়গায় আইসা পহেলগামে হামলার বিরুদ্ধে কর্মসূচি নিয়েছে। কিন্তু যুদ্ধের জিগির তুলে আরএসএস, বিজেপি চাইছে দেশে একটা উন্মাদনা তৈরি করা। আমরা এর বিরুদ্ধে। অস্ত্র ছাড়াও যুদ্ধ করা যায়। ভারত সেই রাস্তা নিক। কিন্তু যুদ্ধে প্রাণ যাচ্ছে সাধারণ নাগরিক এবং সেনারই।’

আরও পড়ুন: চরম কিছু ঘটে যেতে পারে, গোয়েন্দা তথ্য পেয়েই শুক্রবার মোদীকে ফোন করেন ভ্যান্স

বামনেত্রী দীপ্সিতা ধর এই প্রশ্নেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন। বক্তব্য ছিল, বর্ডার থেকে দূরে থেকেও তিনি স্বস্তিতে থাকতে পারছেন না সেই মানুষগুলোর কথা ভেবে, যাঁরা বর্ডার লাগোয়া অঞ্চলে রয়েছেন এবং আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। দীপ্সিতার মতো অনেককেই এই অবস্থানের জন্য কদর্য আক্রমণ ও ট্রোলের মুখে পড়তে হয়েছে। দীপ্সিতার বক্তব্য, ‘যুদ্ধের নামে রক্ত পিপাসার বিরুদ্ধে কথা বলেছি। যে ২৬ জন সাধারণ মানুষকে পহেলগামে হত্যা করা হয়েছে, সেই হত্যাকারীদের সরকার খুঁজে বের করুক, অ্যান্টি টেরর অপারেশন চালাক। কঠোরতম শাস্তি দিক। কিন্তু যুদ্ধ–যুদ্ধ রব তুলে মানুষকে উন্মাদ করে দেওয়া এবং মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ফেক নিউজ় ছড়িয়ে বিভ্রান্ত করার এই প্রবণতার বিরুদ্ধেই আমি যা বলার বলেছি।’ শান্তির কথা বলে সোশ্যাল মিডিয়া ট্রোলের মুখে পড়েছিলেন ক্রিকেটার অম্বাতি রাইডুও।

এই মুহূর্তে

আরও পড়ুন